Featured Post

নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রন্থ-প্রকাশ : ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে ও ২। পত্রিকার অনুদানে

ছবি
  নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে  গ্রন্থ-প্রকাশ বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে এক ফর্মার ১০টি পুস্তিকা : এই প্রকল্পে লেখক-কবিদের থেকে কোনো খরচ নেওয়া হবে না।        পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে বইগুলি প্রকাশিত হবে। লেখক/কবিকে সশ্রদ্ধায় সৌজন্য সংখ্যা দেওয়া হবে।       যাঁদের আগে কোন বই হয়নি , তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। নতুনদের উপযুক্ত লেখা না পেলে বাকিদের লেখা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরিত হবে।       লেখা সকলেই পাঠাতে পারেন। মেলবডিতে টাইপ করে বা word ফাইলে ।   ই-মেল : nabapravat30@gmail.com  (এবং হোয়াটসঅ্যাপেও)। বইয়ের শিরোনামসহ ১৫টি কবিতা বা ১৫টি অণুগল্প পাঠাতে হবে , শব্দ সংখ্যা বা লাইন সংখ্যার বাঁধন নেই । মনোনীত হলে মানানসই বইয়ের ফরম্যাটে যে কটি যাবে রাখা হবে ।       সঙ্গে লেখক পরিচিতি , ঠিকানা , যোগাযোগের ( কল ও হোয়াটসঅ্যাপ )   নম্বর ও এক কপি ছবি দেবেন। লেখক পরিচিতিতে অবশ্যই জানাবেন, এটি আপনার প্রথম প্রকাশিত বই হবে অথবা পূর্ব প্রকাশিত গ্রন্থতালিকা। অনলাইন বা মুদ্রিত পত্রিকা বা সমাজ - মাধ্যমে প্রকাশিত লেখাও পাঠানো যাবে । তবে কোনও গ্রন্থভুক্ত লেখা

ভ্রমণকাহিনি ।। অপার্থিব মায়াপুর ।। মিঠুন মুখার্জী



অপার্থিব মায়াপুর 

মিঠুন মুখার্জী 


নদীয়া জেলার একটি প্রসিদ্ধ ধর্মস্থান মায়াপুর। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের মাতুলালয় এই মায়াপুরের উত্তর-পূর্বদিকে। মায়াপুর কথার অর্থ মায়াময় স্থান। রাধা-কৃষ্ণের মায়ায় আচ্ছন্ন হন গৌড়ীয় বৈষ্ণব ভক্তগণ। ১৪৮৬ সালে এই মায়াপুরের কাছেই নবদ্বীপে শচীমাতার গর্ভে জন্মগ্ৰহন করেছিলেন রাধা-কৃষ্ণের যুগল অবতার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। ভাগীরথী ও জলঙ্গীর নদী দুটি এখানে মিলেছে। ভাগীরথীর এক পারে নবদ্বীপ আর অন্য পারে রাধাকৃষ্ণের প্রিয় ক্ষেত্র মায়াপুর। বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের ও রাধা-কৃষ্ণের নাম প্রচার করার উদ্দেশ্য আবির্ভূত হয়েছিলেন প্রেমের ঠাকুর শ্রীচৈতন্যদেব। শুধু নবদ্বীপেই নয় মায়াপুরের পথে পথে তিনি একদা কৃষ্ণনাম বিলিয়েছেন। পাষান হৃদয় মানুষদের হরি নাম করতে বাধ্য করেছেন। 
     মায়াপুরসহ নবদ্বীপকে বাংলার মন্দিরনগরী বললে ভুল হবে না। মায়াপুর ও নবদ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অসংখ্য মন্দির। এই মায়াপুরের পূর্ব নাম ছিল মিয়াপুর। একদা এই জায়গাটিতে মিঞাদের বেশি বসবাস ছিল। ইস্কনরা আসার পর এই মিঞাপুরের নাম পরিবর্তন করে রাখে মায়াপুর। এই ইস্কন সংস্থাই মায়াপুরে রাধাগোবিন্দের মন্দির নির্মাণ করে। এই ইস্কনের সদর দপ্তর হলো মায়াপুর। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল রাধাকৃষ্ণ নাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া। এই সংস্থার প্রধান ছিলেন শ্রীল প্রভু পাদ। একদা সারা পৃথিবী থেকে বিদেশিরা এসে এই মায়াপুরে বসবাস শুরু করেন এবং সনাতন ধর্ম গ্ৰহন করেন। তারই বেশিসংখ্যক মানুষ এখন মায়াপুরের মন্দির দেখাশোনা করেন এবং সর্বদা কৃষ্ণনামে উন্মত্ত থাকেন। বংশ পরম্পরায় তারা কৃষ্ণনাম করে আসছেন। 
        বিশাল জায়গা নিয়ে এই মায়াপুর মন্দির চত্বরটি। এর চারপাশে বিভিন্ন পুষ্পসজ্জিত স্থান রয়েছে। মূল মন্দিরটি প্রাচীন হলেও এর গুরুত্ব সারা পৃথিবীর কৃষ্ণভক্ত মানুষের কাছে রয়েছে। বর্তমানে এই চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে ভবন গড়ে উঠেছে। শঙ্খ,চক্র, গদা,পদ্ম,গীতা নামে ভবন গড়ে উঠেছে। এই ভবনগুলো ইস্কনদের বিভিন্ন প্রয়োজনে নির্মান করা হয়েছে। সারা পৃথিবী থেকে এই মন্দিরে বছরে প্রায় ছয় বিলিয়ন কৃষ্ণভক্তের আগমন ঘটে। তাদের থাকা থেকে শুরু করে প্রসাদের ব্যবস্থাও করা হয়েছে এখানে। বিনামূল্যে যেমন খাবারের ব্যবস্থা আছে তেমনি ত্রিশ টাকা থেকে শুরু করে চল্লিশ,পঞ্চাশ, সত্তর ও আশির টাকার কুপন কেটে খাবারের ব্যবস্থা আছে। থাকার জন্য মন্দির চত্বরে যেমন ঘর আছে তেমনি মন্দিরের বাইরে অসংখ্য লজ, হোটেল ও থাকার জায়গা আছে।  সময়ের উপর এই সমস্ত ঘরগুলোর ভাড়া নির্ভর করে। তবে মন্দির চত্বরে থাকতে হলে আগে থেকেই বুকিং করে আসতে হবে।
       মায়াপুর মন্দিরে পুজো ও আরতির বিভিন্ন সময় আছে। ভোর চারটার সময় প্রথম পুজো ও আরতি হয়। সেই সময় হাজার হাজার কৃষ্ণভক্তের সমাগম ঘটে। আরতি ও গানের তালে তালে তারা নৃত্য করেন। অপূর্ব সেই দৃশ্য। দেখলে মনে হয় দেখেই যাই। পুজো শেষে প্রসাদ বিতরন হয়। সন্ধ্যা বেলায় সন্ধ্যা আরতি হয় দেখার মতো। খোল - করতাল সহযোগে নামকীর্তনের মধ্যদিয়ে এক মায়াময় অপার্থিব পরিবেশ রচনা করা হয়। সকল বৈষ্ণব ভক্তের উপস্থিতিতে মন্দির চত্বর গমগম করে। কৃষ্ণপ্রেমে কেউ দিনের পর দিন এই ময়াপুরে পরে থাকেন, আবার কেউ সংসার জীবনে থেকেও মনের জ্বালা জুড়নোর জন্যে এখানে আসেন। রাস, রথযাত্রা , দোল পূর্ণিমা, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমীর মতো দিনগুলোতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কৃষ্ণভক্তের আগমন ঘটে এই মায়াপুরে। এই উৎসবগুলো খুব আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করেন ইস্কনের সদস্যরা। এই সময় থাকার ঘর পাওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। পাঁচশ টাকার ঘরগুলো দেড়হাজার-দুহাজার টাকা দিয়েও পাওয়া যায় না। পা ফেলার জায়গা পাওয়া যায় না মন্দিরের ভিতরে।
         মায়াপুর মন্দিরের ভিতরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের ও জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা দেবীর বিগ্ৰহ। প্রতিদিন এই সকল বিগ্ৰহের পূজা-অর্চনা  ও আরতি করা হয়ে থাকে। শ্রীকৃষ্ণের অভিষেকও করা হয় খুব জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে। মন্দিরের চারিপাশে একটি মনোমুগ্ধকর পরিবেশ কৃষ্ণভক্তদের সর্বদা আকর্ষন করে। এখানে মূল মন্দির ও চন্দ্রোদয় মন্দির ছাড়া দেখার মতো আছে বল্লালডিপি,গোশালা, শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ, অদ্বৈতভবন, শ্যামকুন্ড, রাধাকুন্ড  ও নবদ্বীপের অসংখ্য মন্দির। গোশালায় দুশোর বেশি গরু আছে। মায়াপুরে এসে নবদ্বীপ দর্শন করে না গেলে ঘোরা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
      রাধা-কৃষ্ণের বিশেষ অনুষ্ঠানগুলো অনেকদিন ধরে খুব জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হয়। দোল উৎসব, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, রাস উৎসব, রথযাত্রায় অনেক আগে থেকেই এর আয়োজন করা হয়। উৎসবগুলো হওয়ার অনেক আগে থেকেই শ্রীকৃষ্ণভক্তরা মায়াপুরে ভিড় জমায়। উৎসবগুলোকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকল ভক্তেরা দেখার মতো দোল খেলায় মত্ত হয় দোল উৎসবে। চলে বিভিন্ন রং আর আবিরের খেলা। মন্দির চত্বর ভোরে ওঠে আলোর রোশনাই আর সুসজ্জিত কারুকার্যে। রাসের দিন মায়াপুরে দেখার মতো রাস উৎসব পালন করা হয়। এই রাস দেখে ভক্তচিত্তে বৃন্দাবনের রাধা-কৃষ্ণ ও গোপিনীদের রাসের চিত্র ফুটে ওঠে। কৃষ্ণের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে জন্মাষ্টমী ও শ্রীমতি রাধারাণীর জন্মদিনের পুন্যলগ্নে রাধাষ্টমী পালন করা হয়। দুটো তিথিতে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে।
       মায়াপুরের নবনির্মিত চন্দ্রোদয় মন্দিরটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু হিন্দু মন্দির। ৩৫ তলা বাড়ির সমান উচু মায়াপুরের এই ইস্কন মন্দিরটি।এই মন্দিরটি দেখতে অনেক সেবক ও ভক্ত ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসে। তাদের ইস্কনের অতিথিশালায় সামান্য ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা আছে ৷ যেকোনো ধর্মের মানুষ এখানে স্বাগত ৷
       মায়াপুর কলকাতার সঙ্গে সড়ক যোগে যুক্ত ৷ এছাড়া কলকাতার শিয়ালদহ রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে কৃষ্ণনগর এসে সেখান থেকে বাসে মায়াপুর পৌঁছনো যায় ৷ স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে ভারতের স্থাপত্যরীতি বরাবর ধর্মীয় ভাবধারায় তার অবস্থান জানান দিয়েছে। আর পৃথিবীর সবচাইতে উঁচু এই মন্দির জানান দিয়েছে যে সে মিশরের পিরামিডের চাইতেও অনেক অনেক উঁচু। মন্দিরটি এখনো সম্পূর্ণভাবে নির্মিত হয় নি। বেশিরভাগ বিদেশিদের অর্থানূকুল্যে এই মন্দির নির্মিত হচ্ছে। আমেরিকার এ এফ বই ফাউন্ডেশনের আলফ্রেড বুশ ফল্ড এই মন্দির করতে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন।
          মায়াপুরের ইস্কন কর্তৃপক্ষরা জানায় যে এই মন্দিরের কাজ শেষ হবার পর এটা পৃথিবীর সবচাইতে বিশাল মন্দির হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এবং এটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসবে এখানে। মায়াপুর ইস্কনের ত্রিমাতৃক মডেলের এই মন্দির প্রায় ২২ একর ভূমির উপর অবস্থিত। যখন এটা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন মায়াপুর প্রজেক্ট সোসাইটি নামে একটি চ্যারিট্যাবল বডি গঠন করা হয়, যারা এই প্রজেক্টের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করে। এ বি এফ এর ডিরেক্টর মন্দির শুরু হওয়ার সময় আরও বলেন --- "এই কুড়ি একর গ্রামের মাঝে থাকবে সকল হাউজিং সুবিধাসমূহ যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। মায়াপুর ইস্কনের স্থাপত্য রীতি মায়াপুর ইস্কন উত্তর ভারতীয় নাগারা এবং অরিসসার কলিংগ মন্দিরগুলোর স্থাপত্য রীতি অনুসারে ডিজাইন করেছে। এটাতে তিনটি গম্ভুজ আছে যা মন্দিরটি অনেক দূর থেকে প্রতিয়মান হওয়ার সাক্ষ্য বহন করে। প্রথমেই থাকবে এক্সিভিশন হল। এখানে একটি প্লানেটেরিয়ামও থাকবে। এই এক্সিভিশন হল নয় তলা উচ্চতার হবে, যা সব চাইতে ছোট স্ট্রাকচার হবে।  দ্বিতীয় স্ট্রাকচারটা কীর্তন হল। এটি আঠারো তলা উচ্চতা বিশিষ্ট । এর মাঝে থাকবেন শ্রীল প্রভুপাদ স্বয়ং। তৃতীয় স্ট্রাকচার হলের শিখারা বা শিখর প্রায় ৩৫ তলা সমান উচু । এটাই মন্দিরের মূল অংশ।"
          কন্সট্রাকশনের ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়েলস এই কমপ্লেক্সে কোন স্টিল ব্যবহার করা হয় নি। গঙ্গার মাটি থেকে বানানো ইটের দেয়াল দিয়ে এই উচ্চতা তৈরি করা হয়েছে। বাংলার আদি স্থাপত্য সমুহ এই মাটি দিয়েই বানানো হতো। তাই স্থপতি এখানে সেই পুরাতন স্থাপত্য রীতিই ব্যবহার করেছেন। মন্দিরটি গঙ্গা  থেকে ৫ মিটার উচ্চতায় বানানো হয়েছে। মাটিতে আছে ২.৫ মিটার পুরু কংক্রিট স্লাব, যা ৪ একর জায়গা জুড়ে আছে --- এটা মায়াপুরের কাদা মাটি থেকে এই মন্দিরকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করছে। এই কারনে মায়াপুরের চন্দ্রোদয় মন্দির হবে অনেক দিন স্থায়ী একটি মন্দির।
            ২০০০ সালে এই মন্দিরের ডিজাইন করার কাজ শেষ হয়। অনেক বার পরিবর্তনের পর এই শেষ ডিজাইন উঠে আসে সবার নজরে। যাতে যুক্ত হয়েছে হিন্দু ধর্মের অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের ছাপ। এটা গুরু দেশাম- এর একটা স্থাপত্য কলাই নয়--- এতে যুক্ত হয়েছে ট্র্যাডিশনাল বৌদ্ধিক ও হিন্দু স্থাপত্য কলার এক অদ্ভুত মিশ্রন, যা একে দান করেছে এক অমূল্য স্থাপত্যের স্বীকৃতি। এই স্থাপত্য কলাকে এক অসাধারণ রুপ দান করা কিন্তু ইস্কনের প্রথমবারের মতো চেষ্টা নয়। এর আগে ইস্কনের ব্যাঙ্গালোর মন্দিরটির মাঝে দেখা যায় ইস্কনের অপূর্ব মিশ্রনের সদিচ্ছা। এখানে একদম নতুন ভাবে ইস্কনের মন্দিরটা বানানো হয়েছে --- যাতে ব্যবহৃত হয়েছে এক অনন্য ডিজাইন।
         বাংলার মন্দিরগুলোতে দেখা যায় গোলাকার দেয়াল ঘিরে থাকে টেরাকোটা, যাতে দেখানো হয় হাজার বছরের পুরানো ইতিহাস ও ঐতিহ্য। রামায়ণ ও মহাভারতের ইতিহাসও অঙ্কিত আছে এই সকল মন্দিরে। ইস্কনের এই নতুন মন্দিরটিতেও এই বাংলার টেরাকোটাও ঊঠে এসেছে। সবিনয়ে যেখানে মিশেছে আধুনিক গ্লাস ও কাঠের মিশ্রন। বাংলার মন্দিরের টেরাকোটা লক্ষণীয়। অবশেষে বলা যায় স্থাপত্য কলার অদ্ভুত নিদর্শন এই ইস্কনের মন্দিরে আছে। টেরাকোটা এবং গ্লাসের অদ্ভূত সমন্বয় ঘটেছে এখানে। যার মাধ্যমে সূর্যের আলো ও বাতাসকে নিয়ে তৈরি করা হবে এক সুন্দর পরিবেশ। এই পরিবেশে সর্বদা ভক্তের মন থাকবে ঈশ্বরের বন্দনায় আকুল। এই মন্দিরটির কাজ মহামারি করোনার কারনে দুই বছর বন্ধ ছিল। মন্দিরটি ২০২৪ সালে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইস্কনের কর্তৃপক্ষরা।
       মায়াপুর মন্দির সংলগ্ন ও আশেপাশে গড়ে উঠেছে বহু দোকান , হোটেল , ছোট বড় খাবারের দোকান। বহু মানুষের সংসার চলছে এই দোকানগুলো থেকে। বারোমাস আগত কৃষ্ণভক্তদের উপরই এরা নির্ভর করে থাকে। ঠাকুরের ছবি, পুজোর উপকরন, ফুলের দোকান, মুদিখানা, ফলের দোকান ছাড়াও আরও বিচিত্র সব দোকানের সমাবেশ ঘটেছে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে। মায়াপুর থেকে নবদ্বীপ ও নবদ্বীপ থেকে মায়াপুর পর্যন্ত নৌকা পারাপার করেও অনেকেই বারোমাস প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। মন্দির পরিচালনার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর অর্থ ডোনেশন স্বরূপ দান করা হয়। তাছাড়া মন্দিরে আসা কৃষ্ণভক্তদের কাছ থেকে প্রনামি বাবদ মন্দির কর্তৃপক্ষ কম টাকা উপার্জন করে না। 
   পরিশেষে বলাযায় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় অবস্থিত রাধাকৃষ্ণের দিব্যস্থান মায়াপুর সমগ্ৰ পৃথিবীর রাধাকৃষ্ণ ভক্তদের কাছে খুবই প্রিয় স্থান। উত্তরপ্রদেশের মথুরা-বৃন্দাবনের  মতোই মায়াপুর কৃষ্ণভক্তদের বিশেষ আকর্ষণ করে। একদিকে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, অন্যদিকে রাধাকৃষ্ণ এরই মাঝে গঙ্গাদেবী একসঙ্গে দেখতে হলে এখানে আসতেই হবে। এমন অসাধারন দৃশ্য ভোলার নয়।

===================

মিঠুন মুখার্জী
C/O-- গোবিন্দ মুখার্জী
গ্ৰাম : নবজীবন পল্লী
পোস্ট+থানা -- গোবরডাঙা
জেলা -- উত্তর ২৪ পরগণা
পিন-- 743252





মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। 'স্বাধীনতা, স্বদেশ ও স্বকাল' বিষয়ক সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩১ আগস্ট ২০২৪

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রন্থ-প্রকাশ : ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে ও ২। পত্রিকার অনুদানে

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান