দুটি কবিতা || জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
ভুলে যাওয়া স্বপ্ন
তোমাকে দেখেই জলছবি হারানো দিন
কথা আর ফুলের আঘ্রাণ।
বিশ্বাসে জোর ছিলো নাকি? স্বপ্নের ওমে
যত সুখ হঠাৎ বৃষ্টির শিলা জমেছিলো খুব।
জীবনের রসায়ন সঞ্জীবনী সুধা হয়ে
ক পরত গভীর গোপনে জমা মান্যতার
যন্ত্রযানে ক্ষণযাত্রা।
ব্রহ্মযুগের মতো নিঃসীম ক্ষয়িষ্ণু জীবনে
ভিন্নতর
সংজ্ঞার খোঁজ।স্বপ্নগুলো তুমিও ভুলেছো ?
গূঢ় প্লাবনের স্বরলিপি লাল ও সবুজ রং
টিট্টিভ ডাক মৃদুলয় বিরহবাতাস সব ঠিক
জমা ছিল খাঁজে অদৃশ্য পলল।
ধূসর মলিন পাতা বিক্ষত রুমাল তুমি আছো
কোনো খাঁজে অথবা গোপন ভাঁজের ঘুমে
অবেলার সুখ।
চারণকবি, চারণকবি
(কবি বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিবেদিত)বুকের উপর শ্যাওলা জমে কাদার উপর জল
চারণকবির কথায় মনে বাজে ছলাৎছল।
বিড়াই নদীর স্রোতে আছো,আছো বেনায়,কাশে
শরৎমেঘের বুকে তোমার অমর লিখন ভাসে।
তোমার কথায় ছন্দে সুরে ঘুরে বেড়ায় হাওয়া
ভাঁটফুলে আর পলাশবনে তোমাকে যায় পাওয়া।
মহুল ফুলের গন্ধে আছো মল্লভূমের কবি
কামিনী আর ভাঁটফুলে পাই গন্ধ জাগা ছবি।
প্রতিবাদের ভাষা তোমার জানে মন্দ লোক
ভাবুক তোমার চাবুক চেনে অন্ধকারের চোখ।
বাউল হাতে একতারা নাও গাও চেতনার গান
ঘুঙুর পায়ে নেচে বেড়াও জাগাও অলস প্রাণ।
অসাম্যকে পাথর ছোঁড়ায় কাতর তুমি নও
ধান্দাবাজির ঝান্ডা ছুঁড়ে চক্ষুশূলই হও।
স্বার্থ ভুলে দুঃখ বরণ করতে কে আর চায়
মানুষ তোমার ভেতর প্রাণের শক্তি খুঁজে পায়।
যুদ্ধে ছিলে,প্রেমেও ছিলে প্রতিবাদের ভাষায়
লালমাটির এই বৃন্দাবনে ছিলে আশায় আশায়।
সমাজ হবে অসাম্যহীন উদার মানুষ পেলে
গর্ব করার দিন আসবে যত বিভেদ ঠেলে।
কিন্তু কবি দুঃখে জানাই,সেদিন আজো দূরে
তোমার ভাষায় বাঁচুক আশা থাকি স্বপ্নসুরে।
=========================
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, গোপেশ্বরপল্লি, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া - ৭২২১২২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন