google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re অণুগল্প ।। অবশেষ ।। মিনাক্ষী মন্ডল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

অণুগল্প ।। অবশেষ ।। মিনাক্ষী মন্ডল

অবশেষ

মিনাক্ষী মন্ডল

  প্রাণেশ গাঙ্গুলী বহু বছর ধরে স্বপ্ন দেখতেন এইরকম একটা গৃহপ্রবেশর। সাধ করে বাড়ির নাম রেখেছেন–'অবশেষ'। জন্মে অবধি ভাড়া বাড়িতেই কাটিয়েছেন তিনি। বংশভিটে ওপার বাংলায় ছেড়ে আসতে হয়েছে তার বাবা-মাকে। মাথার ছাদ পেয়ে অনেকটা হালকা লাগছে আজকাল। তবে সমস্যা মানুষের পিছু ছাড়ে না,সেটা হচ্ছে প্রাণেশ গাঙ্গুলীর মা প্রভাদেবীর ইচ্ছের দাম।  ওঁনার ইচ্ছে,' ওঁনার নাতি চাই! এত বড় বাড়ি ভোগ করবে কে? এক মেয়ে সে তো একদিন পরের ঘরে যাবে। অতএব সময় থাকতে ছেলে-বৌমা যেন দ্বিতীয় সন্তানের কথা ভাবে। এদিকে স্ত্রী সুশীলার প্রথম সন্তান সিজারিয়ান বেবী। কিছু দৈহিক দুটি থাকায় ডাক্তারের মতে দ্বিতীয় সন্তান নিলে বাচ্চার মায়ের জীবনহানি হতে পারে। ফলে তাঁরা নতুন ইস্যু নেওয়ার কথা ভাবেনি। কিন্তু প্রভাদেবীও নাছোড়বান্দা, নিত্যদিন বাড়িতে এই নিয়ে অশান্তি করে চলেছে। প্রানেশ গাঙ্গুলীর হয়েছে শাঁখের করাতের অবস্থা, একদিকে স্ত্রীর জীবন আরেকদিকে মাকে বোঝানোর অক্ষমতা। যতটুকু সময় বাড়িতে থাকে
না খবরের কাগজে মন বসে, না টিভি দেখতে ভালো লাগে। তারপর নিরুপায় হয়ে প্রস্তুতি নিয়ে দেখেন সুশীলা দ্বিতীয় কন্যা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেল, মাতৃহীন দুই কন্যা সন্তান বড় হওয়ার আগেই একদিন প্রভাদেবীও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন। সব দায়িত্ব এখন প্রাণেশ গাঙ্গুলীর। মাঝে অনেকটা বছর পার হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে আজ দ্বিরাগমন করে শ্বশুর বাড়ি গেল। লেকটাউনের এই 'অবশেষ' বাড়িটিতে আজ থেকে তিনি সম্পূর্ণ একজন নিঃসঙ্গ মানুষ হয়ে রইলেন। গভীর রাত, চোখে ঘুম নেই। প্রাণেশ গাঙ্গুলী বারান্দার চেয়ারে এসে বসলেন। শীতের রাত এলাকা একেবারে নিঝুম। কিছুটা দূর হতে কেবল একসাথে কতগুলো শেয়ালের ডাক শোনা যাচ্ছে।বুকের ভিতর চাপা একটা অসহ্য যন্ত্রণায় নিথর হয়ে যাচ্ছে শরীরটা।
'কি ব্যাপার টি.ভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেলে নাকি?কত রাত হল খেয়াল আছে তোমার? খাবে চলো!'
প্রাণেশ গাঙ্গুলী চেয়ে দ্যাখে সামনে তার স্ত্রী সুশীলা।চমশা খুলে, চিবুক পর্যন্ত বেয়ে যাওয়া চোখের জল মুছতে মুছতে বুঝলেন এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি।তবে সমস্যার সমাধান স্বপ্নেই খুঁজে পেয়েছেন। দ্বিতীয় সন্তান নৈবচ।
পরদিন অফিস ফাঁকি দিয়ে প্রাণেশ গাঙ্গুলি তার মা ও স্ত্রীকে নিয়ে যান এক অনাথ আশ্রমে। সেখানে সব অফিসিয়াল ফর্মালিটি সেরে দত্তক নিলেন এক সদ্যজাত পুত্র সন্তান। পুত্রের নাম রাখলেন 'অবশেষ'।  
  =================
                 
 মিনাক্ষী মন্ডল
 
         

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন