সে কারও প্রেমিকা নয়
অবশেষ দাস
মেয়েটি কখনও ধান,দূর্বা,চন্দনের থালা হাতে ধরে দেখেনি
তুলির টান দেওয়া আঙুলের ডগা দিয়ে
সে কখনও দু-চারটি তুলসী পাতা তোলেনি।
কল্যাণী বৃহস্পতিবার তার কাছে পায়নি চোখ ধোয়া আলপনা।
সে শুধু সবকিছু ছুঁড়ে ফেলে দেয়, ভাতের থালা, ল্যাপটপ
হাতের সামনে থাকা যেকোনও জিনিস,এমনকি পরমান্ন-ভালবাসা
মেয়েটি কখনও কোনো কিছুর জন্যে অপেক্ষা করেনি।
বরং তার জন্যে সবকিছু দিনের পর দিন
প্রশ্ন শূন্য কঠিন অপেক্ষা করেছে।
এমনকি গৃহশিক্ষক এসে বসে থাকেন, তিনি ঘুমিয়ে কাদা বিছানায়!
মেয়েটির অনেকগুলো নাম, একটি নাম মায়ের দেওয়া
একটি তো বাবার, আরও কয়েকটা উপহার পাওয়া
নাম তার আছে,সবকটাই বেশ আদুরে ....
মেয়েটির হাতে কখনও সলতের হামাগুড়ি খেলার
চিহ্ন ফোটেনি, সযত্ন প্রদীপ জ্বলেনি।
কাজল পরা টানা দুই চোখে কখনও আকাশ এসে দাঁড়ায়নি।
তার ঝুমকো পরা কান কখনও ঝিঁঝিঁ পোকার গল্প'ও শোনেনি।
সোনা বাঁধানো আয়নার সামনে সে বারবার দাঁড়ায়
নিজেকে দেখে, গলিত রূপ ও লাবণ্য সে মুখস্থ করে।
পৃথিবীর মুখ সে কখনোই দেখেনি,
নদীর ঢেউয়ের মতো জীবনের ভাঙাগড়া খেলাও সে জানে না।
মেয়েটি আর যা হোক, সে কখনও কারও প্রেমিকা নয়
সে কখনও কারও মেয়ে নয়, কারও মা নয়
সে শুধু রক্তমাংসের অতিসাধারণ একটি মেয়ে!
==============
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন