বর্ণ পরিচয়
সত্যজিৎ দাস
ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত গ্রামে থাকতেন রমলা পিসি । দু'ই ছেলে এক মেয়ে । স্বামীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যায় বিয়ের দশ বছর পর । কষ্ট করে এ-বাড়ি ঐ- বাড়ি , মাঠে লেবারের কাজ করে নিজে অ-বর্ণ হলেও সন্তানদের বর্ণপরিচয় করিয়েছেন l
বর্ণপরিচয়ের হাত ধরেই আজ সন্তানেরা প্রতিষ্ঠিত । যে-যার মতো চাকরির জীবন বেছে নিয়েছে । মা'য়ের সাথে সপ্তাহে দু-এক বার ফোনে কথা ।
গ্রামের বাড়িটা বিক্রি করে, রমলা পিসিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয় তার ছেলে-মেয়েরা । অফুরাণ সময়ের ভিতর সময় কাটে রমলা পিসির । শুকিয়ে যাওয়া চোখেও আবেগের অশ্রু ঝরে. . .
তবে হার না মানার শপথ নিয়েছে ! জীবনের শেষ সীমান্তে আবার নতুন করে শুরু করে জীবন ।
বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় ও হাতে খড়ি নেয় বৃদ্ধাশ্রমের সুপারের কাছে । তারপর নিয়মিত অধ্যাবসায় ও অনুশীলনীর জন্য পড়তে, লিখতে সক্ষম রমলা পিসি ।
অন্ধকার জীবনে শিক্ষার আলোর যে প্রখরতা তা অনুভব করছে । একদিন হঠাৎ তিন সন্তানদের এক-এক করে চিঠিতে জানালো
আমি ভালো আছি । আমার বর্ণপরিচয় ঘটেছে । নিজেই এ চিঠি লিখছি । শিক্ষা অন্ধকারে নিয়ে যায় তা নয় ।
শিক্ষা আলোর পথে দিশারী . . .।
__________________________________________________
● সত্যজিৎ দাস, সালদাহা, আম্বা, জামতাড়া ( ঝাড়খণ্ড) ৮১৫৩৫৯
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন