Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

অণুগল্প ।। গুরুদক্ষিণা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ


গুরুদক্ষিণা   

অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ


"এই সবার মনে আছে তো, সোমবার  শিক্ষক দিবস"।  আমাদের স্কুলের শিক্ষকদের সম্মান  জানানোর দিন।  বিদায়ী  শিক্ষককে বিদায় সম্ভাষণ  করার দিন। 
ক্লাসের মনিটর জোরে জোরে বলে দিল  কাল প্রত্যেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা  নিয়ে আসিস। 
রাহুল ক্লাসের সব থেকে ভালো  ছেলে।কিন্তু  বড্ড গরীব।  আজ কেমন রাহুলের মুখটা শুকিয়ে গেল।  
  সবাই  নিয়ে এল ১০০ টাকা চাঁদা।  রাহুল শুধু শুন্য হাতে মাথা নিচু করে  দাঁড়িয়ে। 
 একজন  বলে উঠল, কি রে রাহুল, মাত্র ১০০ টাকা তাও দিতে পারলি না?
রাহুলের বাবা সামান্য ডাব নারকেল  বিক্রি করে কোনো ক্রমে সংসার চালায়। যখন বিক্রি  হয় তখন টাকা পায়। যখন হয় না, কিছুই  পায় না। 
রাহুল মৃদুস্বরে বলল,বাবা বলেছে পরের সপ্তাহে  ঠিক দিয়ে দেবে।  আজ একদম হাতে  টাকা নেই বাবার কাছে। 
কয়েকজন হেসে বলল, তোর জন্য কি শিক্ষক দিবস  পিছিয়ে দেব?  মাত্র ১০০ টাকা তা ও নেই?   এই চল আমরা গিফট  কিনতে চাই। 
রাহুল কে একপ্রকার ধাক্কা দিয়েই  ওরা চলে গেল গিফট কিনতে।
রাহুলের খুব ইচ্ছে ছিল ওদের সাথে উপহার কিনতে যেতে। কেউ ডাকল না। চোখ দুটো  রক্ত জবার মতো  লাল হয়ে গেল।  ঠোঁটের পাতা কেঁপে উঠল। রাহুল  চুপচাপ পাথরের মতো  দাঁড়িয়ে দেখল বন্ধুরা হইচই করে  চলে যাচ্ছে উপহার কিনতে।
স্কুল হলঘরটা  সুন্দর করে  সাজিয়েছে সবাই। রাহুলকে ডাকল না কেউ।
 আজই ৫ ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস।  বিদায়ী  শিক্ষক নারায়ণ স্যারের" বিদায়ী সম্ভাষণ"।  
ছাত্র -ছাত্রীরা নিজ নিজ পারফর্ম করতে শুরু করল  মঞ্চে । রাহুল ভালো কবিতা আবৃত্তি করে। কিন্তু  রাহুলের দেখা নেই। রাহুলের নামটাও কেউ বলল না। স্যারের মনটা ছটপট করছে। রাহুলকে দেখতে। 
 স্যার নিজেই জিজ্ঞেস করল,কী ব্যাপার রাহুল কোথায়? রাহুলকে দেখছি না তো?
ওকে  খুব স্নেহ করেন স্যার। 
একজন  মুচকি হেসে  বলল,কী করে  আসবে স্যার?  চাঁদা দিতে পারে নি তাই লজ্জায় আসে নি।
স্যার খুব কষ্ট পেল ছেলেদের কথা শুনে। স্যারের বক্তৃতা শুরু হলো।  প্রথমেই বললেন, আমি তোমাদের শিক্ষা দান করতে এসেছিলাম। আজ শেষ বেলায় বুঝলাম, কিছুই শেখাতে পারিনি।
সবাই অবাক হয়ে শুনছে। স্যার এসব কী বলছে?
আরও  বললেন,  আমি তোমাদের কাছ থেকে দামী উপহার নিতে আসিনি,এসেছিলাম তোমাদের উপযুক্ত মানুষ করতে। উদারতা, ধৈয্য আর বন্ধুর প্রতি সহমর্মিতা অনুভব করতে।  নীতিশিক্ষা দিতে আমি  পারি নি।  আজ আমি  ভীষণ ভাবে মর্মাহত। তোমাদের কিছুই শেখাতে পারলাম না।
স্যারের বক্তৃতা শেষ হলো কিন্তু কেউ বুঝল না। 
এবার উপহার দেওয়ার  পালা। স্যারের হাতে তুলে দিল দামী ডিনার সেট। একটা  কলম আর ফুলের স্টিকার। স্যার শুধু মাত্র ফুলের স্ট্রিকারটা হাতে নিয়ে বললেন, তোমরা এখন শিক্ষার্থী।  বাবার কষ্টের টাকায় আমার জন্য উপহার কেনা আমি নিতে পারব না। সবাই আগে মানুষ হয়ে ওঠো।
স্যার চুপচাপ বেরিয়ে এলেন অনুষ্ঠান থেকে। 
 অনুষ্ঠান শেষ। ঠিক এমন  সময়  ছলছল চোখে রাহুল এল হাতে একটা  লাঠি নিয়ে।
 মাথা নত করে  পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।স্যারের হাতে দিল সুন্দর একটা  নকসা করা লাঠি আর একগুচ্ছ রক্তকরবী। লাঠির গায়ে সুন্দর আল্পনা দেওয়া আছে। 
রাহুল কাঁদতে কাঁদতে বলল, আমি এঁকেছি স্যার। আপনার জন্য এনেছি। এটা আপনার খুব প্রয়োজন স্যার।

বুকে জড়িয়ে নিল রাহুলকে। 
 রাহুল তোকে ও লাঠি হতে হবে। এই সমাজের জন্য।
বৃদ্ধের সম্বল আর সমাজের জঞ্জাল সাফ করতে এই লাঠির খুব দরকার। রাহুল  ফুঁপিয়ে উঠলো স্যারের বুকে।

====================

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত