শহরের শপিংমলে,লাখ আর কোটির গল্পে পূজো আসে
মোড়ে মোড়ে 'জাগো দূর্গা,জাগো দশভুজা' দূর্গা জাগে
বড় বাড়ির সাথে,নতুন পড়ে ঘট আসবে। রীতি,গোটা পাড়ার।মা--আমাদের নতুন জামা,নতুন কাপড়
জানি না কে,কবে দিয়েছিল।সংসারের মঙ্গল কামনায় যত্নে রাখা সুতির শাড়িটা প্রতিবারের মতো বোনকে বের করে দেয়। বোন তখনও বুঝতে...চোখের জল গোপন করতে, শেখেনি।আমরা শিখেছিলাম
চিৎকার করে উঠল,"পাশের বাড়ির দীপা পঞ্চমীর দিন থেকে পড়ছে, এবেলা ওবেলা পড়েও শেষ হবে না।"
আচ্ছা মা,এরপরও কীসের মঙ্গল,কীসেরই বা অমঙ্গল। ও'ঘট টান মেরে ফেলে দাও
মেদহীন আঙুল পূজোতে নতুনের গন্ধ মাখেনি
বন্ধুরা জিজ্ঞেস করেছে।অভাবও সেই কবেই আমাদের বড়ো করে দিয়েছে। ভেতর ভেতর এক সমুদ্র মোচড় নিয়েও গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারতাম
তবু কোন অভিযোগ ছুড়ে দিইনি।গণসাক্ষর করাইনি। দিস্তা দিস্তা কাগজ দিয়ে আকাশ করে দিয়েছি
চারিদিকে ঢাকের আওয়াজ, ধুনোর গন্ধ, পেটের ভেতর ধোঁওয়ার কুণ্ডলী তৈরী করত, নাড়ি ছিঁড়ে নিত
মা আমাদের লুচি, আমাদের নারকোল নাড়ু... মাথার ভেতরটা ক্রমশ ঝিম ধরে আসে
মাইকে ভেসে আসে"রূপং দেহী,ধনং দেহী, যশ দেহী"
চিৎকার করে বলি দুঃখং দেহী,বজ্ঞনাং দেহী,সহ্যং দেহী
টিউশানি পড়ানো টাকায় বোনকে বাজি কিনে দিয়ে, সরে পড়তাম।এখুনি শেষ হবে।পাশে পাশে ছোট খাটো পটকার দোকান।মা বলবে,দাদা আসুক...এবারের পূজো শেষ
মোড়ল বাড়ির ঠাকুরের ভাসান।আজ সব দুঃখ ভুলে গেছি। বড়ো বাড়ির মেয়েদের গায়ে দামি কাপড়, গা ভর্তি সোনা। চোখে মেকী জল,হেসে ফেলতাম।রেগে আড়চোখে তাকাতো
মা'কে ভাসিয়ে সবাই তারস্বরে চিৎকার করে উঠল-- আসছে বছর... আর আসিস না মা
---০০---
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন