শাহজাদার স্পর্শে সালংকারা অপ্সরা।
বৈশাখী,,,,,,,
আজ চৈত্রসেলের বাজার চারিদিকে রমরমা,,, আর কদিন বাদেই আসবে নতুন সিদ্ধিবিনায়কের হালখাতা,,, বৈশাখী দিনের শুভ মহরৎ। পহেলা বৈশাখ।
নধরকান্তি সিদ্ধিবিনায়কের টইটুম্বুর রসেলা ভুঁড়ি,
হাতে তবক মোড়া হালখাতার লাড্ডু,
বৈশাখী ঘটে চিনচিন ব্যথা আড়িমারি স্পর্শকাতর যন্ত্রনা।
মহাজন ব্যবসাদারের বুকের ঠিক পাশে,
অতলান্ত মহাসমুদ্র শোক বুকে ঢিপঢিপ,
ঢেঁকির পাড় কে জানে কবে পাওনাগন্ডার হিসেবনিকেশ হবে।
ওদিকে ছন্নছাড়া যৌবনা দুধমতী বালিকা,
ভিড়ভাট্টা ঠেলে প্রেমিকের সাথে করপদ্মের বিদ্রোহ।
এটা ওটা টানাহিজড়া করে নতুন পোষাকের বিপুল সম্ভার।
হুক ভগ্নদশায় উৎখাত।
প্রেমিকের সাবধানী দৃষ্টি কাঁচুলিতে নজরের ঘাট।
আতে যাতে পরদেশীর যুগ্ম আলাপন,
কঠিন সময়ের অন্তর্ঘাত।
নোনা ঘাম খোঁজে স্নেহের মিষ্টতা।
তোমার হাতের স্পর্শে অগোছালো আয়নায়,
আমার সাজানো গোছানো সংসার।
ঘরে আবদ্ধ জুনের এতদিনে আছাড় কাছাড় করা বিলাপ শুনেছে ঈশ্বর কান পেতে। তাই সঙ্গতিহীন ও সখা শূণ্য জীবনে পেয়েছে খুঁজে পরম আশ্রয় ও প্রশ্রয় তার ন্যাওটা প্রেমিক।
তার হাত ধরে খোলা রাজপথে হাঁটতে থাকলে বিলাসী মেঘের ধুম্রজালে কুঞ্চিত কোঁকড়ানো কেশে উড়ন্ত পক্ষী না মীণকন্যা আজকে সে।
প্রেমিকের অতলান্ত সাগর চক্ষে এক ডুব দিয়ে মাছরাঙার মতন সেও এক কালবৈশাখীর ঝাপটায় তুলে আনতে পারে নাভিকূপে ভাসমান মৎস্য। তাই আজকে চৈত্রের সেলে সাথীর হাত ধরে ঢুকে পড়ে শপিং মলে কেনাকাটা করতে। যদিও সামর্থ্য অতি নগণ্য কাঁচুলীতে লুকায় তবুও সুখের দাম লাখ টাকা।
মাল্টিপ্লেক্স শোরুম আভিজাত্যের উল্লাসী ধোঁয়ায় পকেটে সামর্থ্য লুকায়। এই প্রেক্ষাপটে এক মধ্যবিত্ত মেয়ের স্বপ্নপূরনের শাহাজাদা তার বয়ফ্রেন্ড এসেছে বহুদূর থেকে।তাকে সঙ্গে করে নিয়ে গেছে শপিংমলে। চৈত্র সেলের বাজার করাতে মধ্যবিত্তের দর কষাকষি ছাড়পত্রের দামে।
এতকাল ধরে তো সাবধানী সংকোচনশীল আচ্ছাদনে সন্তর্পণে চোখ বুঝে হিসেবের শাণিত খড়্গাঘাতে পায়ের পাতা গুটিয়ে দিয়েছো শীতঘুম। কিন্তু আজ কেমন অশ্বপুরুষের একডাকে শেহেজাদীর অভিসার চৈত্র সেলে দেদার মন প্রাণ খুলে কেনাকাটি।
না হলে তো শেহেজাদী এতকাল ধরে,,,,,,ঘরে পড়ে পড়ে অবসাদের কালোছায়ায় প্রেমিকের ছাতিম বক্ষের অভাবে মুখ গুঁজে কোলবালিশে দেদার ঘুম,,, জীবনের প্রতি কেমন যেন একটা ছাড়া ছাড়া ভাব।
বাঁধভাঙা সমুদ্র চোখের তারায়, ঘুমের পর ঘুম।
বিছানায় আড়িমারি ঠেস, অসহ্য অবসাদে এলানো শরীর।
নেই কোন পিছুটান কিংবা সকাল সকাল উঠার ঝকমারি।
সকলের দৃষ্টিশূল, বেলা অবধি বিছানায়,
একি রে বাবা চিন্তা নেই, ভাবনা নেই পড়ে পড়ে ঘুম।
কে দেখেছো তোমরা বল সত্যি করে,
কেউ কি ছিলে আদৌ সাক্ষী।।
চুল খুলে যায় জঙ্গলে, সেথা জটপাকানো অযত্ন।
কার তরে সাজবো আমি, কবেই নিরুদ্দেশ দর্পণ।
অনেকে বলে শোক বাসা বাঁধে লটবহর চুলে।
আমি বলি নতুন করে কি আর পাবো,
বিধবার অসহ্য আর্তনাদ বুক ফাটা যন্ত্রনা।
সারারাত অভিলাষী চোখ খুঁজে মরে,
মনভোলানো তোমার স্বপ্নটারে।
জলসায় মাতে অস্বচ্ছন্দ রাতের দ্বিপ্রহর।
মনে মনে বাঁধ দিতে চায় কোন নিষিদ্ধ পাঁচিল।
বলে কালো বেড়াল হারায় অন্ধকারে,
কেন জ্ঞানপাপী হাতড়াস তারে।
জানিস না কর্কটক্রান্তি বরাবর পার হলেই,
তোর আঁচলে লাগবে অমঙ্গল শোক।
তোকে জরাই দুচোখে, এলোচুলের স্পর্ধা,
তোমার সঙ্গে সহবাসে, স্বপ্নদোষে চোখে আনে জল।
রংমশাল হৃদয়টারে পুড়িয়ে করো আতসবাজি,
জলসায় মাতো উৎসব পরিণয়ে।
ভুলেই গেছো আমায় তুমি।
তাহালে কি দুঃখে বলতে লেগেছো,
আমি এই আমিই তোমার শাহজাদা।।
শেহেজাদাকে কাছে পেয়ে জুনের মন মজিল ঐন্দ্রিলার নাচনে,,,,,
সৌম্য বলে জুন দেখো তো এই যে ড্রেস টা ঝুলছে এটা কেমন। সাথে আরো বলে হে দুধস্তন্য বালিকা তোমার ওখানটায় যে কি আছে এমন এক রহস্যময় গমক যা দেখলে সব ছেলেই কাহিল হয়ে যাবে। আর কিছু লাগবে না। জুন মুখ টিপে হেসে বলে যাহ,,, তুমি যে কি বলো না।
তবুও এই মজা ও ইয়ার্কির মাঝে প্রণয় মাথাচাড়া দিলেও মাঝে মাঝে আগুনপোড়া অরণ্যের মতন মহার্ঘ মূল্যের ভয় প্রমাদ গোনে। তাই উল্টে পাল্টে হ্যাঙারে ঝোলানো ড্রেসগুলোর ট্যাগ সে যত্ন করে দেখতে থাকে যেন কোন এক্কাদোক্কার মালগাড়ী খুব অলস তার গতি।
জুন বরাবরের মতন খুব উড়নচন্ডী তাই বাবার দেওয়া টাকায় তার ভোগ। সংকোচনশীল মুদ্রানৃত্যে তার রতিশৃঙ্গার করা চাই চাই।
মেয়েটি মনের সুখে এদিক ওদিক ছন্নছাড়া যেন কোন উন্মুখ প্রেমের প্রজাপতি। হ্যাঙারে ঝোলানো সারি সারি শৌখিন জামাকাপড়ে হাত বোলায় আর উলটে পালটে প্রমাদ গুনে দামের ট্যাগ দেখে। নাগালের বাইরে থাকায় অত্যাধিক পছন্দের জামাটাও ছেড়ে দেয়। শাহজাদা আমার অত্যন্ত নগন্য উপার্জনে তাই পারবে কি এসব কিনতে।পরিশেষে সামর্থ্যের মধ্যে ছাড়পত্র দারুন পোষাক তুলে নেয় বুকে। ওদিকে সৌম্য বলে ওঠে তোমার যখন এই ড্রেসটা এতোটাই পছন্দ তখন একবার ট্রায়াল রুমে গিয়ে দেখে এসো। আমি এখানেই দাড়াচ্ছি।
আর BF কে বলে তুমি দাঁড়াও আমি Changing Room থেকে আসছি। পরিশেষে দরজায় কুলুপ আঁটে।
জুন তাই চলে যায় শপিংমলের একপাশে থাকা একটি ঘরে। সেখানে ছিল এক অনবদ্য নজরকাড়া আরশি যাতে ঐ নতুন জামা পড়ে জুন নিজেকে আর চিনতেই পারছে না। এটা কে আমি,,, আমি এতো সুন্দর। কিন্তু সেই উপলব্ধি অনেকটাই নগণ্য আজ তার কাছে কারণ তার মন প্রাণ জুড়ে রয়েছে এক অনুভব যে সৌম্যর কেমন লাগবে।
Changing room e সকলের মুহূর্তের অন্তর্বাস যাপনচিত্র। চুপচাপ মুখে কুলুপ এঁটে একপাশে।
ভেতরে এক শৌখিন দ্রষ্টব্য দর্পণে মুখ দেখে আর সাথে জামাটাও Try করে। কিন্তু কেমন যেন অসম্পূর্ন লাগে নিজেকে।ভাবে সম্পূর্ন চরিতার্থতা কেবল BF এর কাছেই পাওয়া যেতে পারে। আদর করে ও আমায় ডাকে চন্দ্রমল্লিকা উন্মুক্ত বসন্ত সমাগমে।
শেহেজাদী মনে মনে ভাবে,,,,
চন্দ্রমল্লিকা,,,,
আমি চন্দ্রমল্লিকা,,,,,,,,, তোমার স্তনবৃন্তকে আঁকড়ে ধরে,
ফুটে উঠা প্রস্ফুটিত কুসুম।
তোমার নাভিগহ্বরের খাদে লুকায়িত পুষ্পচয়ন।
তোমার অনাবিল স্বাদে অন্তহীন প্রেমে ক্ষণিকের মূর্চ্ছনা।
আমার দেহপাতে অমৃতসুধা, সকলের চোখে অপরূপ শোভা নন্দনকানন।
লৌকিকতার পাষাণপ্রস্তর টবে যত্নে লালিত পালিত।
তবুও জরাব্যধি পর্ণমোচী ছত্রে ছত্রে ক্লোরোসিস।
অভিশাপ কুঁরে কুঁরে খায়, উপক্রম পত্রে গ্রহন দৃষ্টিশূল।
নজর লেগে গেছে প্রিয়া অক্ষম তোমার শুভদৃষ্টি।
আমি চন্দ্রমল্লিকা কিন্তু কি লাভ আমার মনোমুগ্ধকর রূপের।
তোমার শিকড়ের গ্রন্থিমূলে ভর দিয়ে,
আমার উপরে উঠা কিন্তু সৃষ্টি আমার ব্যর্থ,
তোমার স্পর্শ ব্যতিরেকে।
সৌম্য মগ্নোপাসক হয়ে তার উৎকন্ঠা আরো বেড়ে যায় প্রেয়সী গোলাপ কে দেখার প্রতীক্ষায়। এক আশ্চর্য পাঁচিল রয়েছে আমাদের দুজনের মাঝে,,,,, যেন তুমি দেখার উসপার আর আমি ইসপার।অবাধ নগ্নতা গুটিয়ে রাখা সান্ধ্যকুমারীর যৌবন এখন ট্রায়াল রুমে। মনের মধ্যে কেমন যেন একটা তনছট কখন যে দেখবো তোমায়।
হঠাৎ জুন দরজাটা খুলে দেখায় তার বয়ফ্রেন্ড কে। পায়ের নীচে লম্বা পালাজো আর ক্ষীণ কটিদেশে এক স্রোতস্বিনী ঝর্ণার উদ্যম গতিতে ঢলে পড়া এক শার্ট,,,, যেন অপরূপ কোন তন্বী। ক্ষুধা যেন চুঁইয়ে পড়ছে সৌম্যর চোখের রতিকান্ত মণির। সৌম্য যদিও খুব অভাবী ঘরের ছেলে। নিঃস্ব ও পরিত্যক্ত কিংবা অভাববোধে তার ঐচ্ছিক পেশীতে টান ধরে আছে তবুও ঔজ্জ্বল্য এর এতটুকু খামতি নেই ঐ দুটি হীরকখচিত চোখে। তোমাকে দেখার সুখে সবকিছু নিরর্থক আজ আমার কঙ্কালভাঁজে।
প্রেমিকের বাৎসল্য রসে অভুক্ত কুমারী তাপ আজ যেন সে কোন শিশু প্রেমিকের বক্ষের আগোলে বসে তার ঘরমুখো যাত্রা রোজ সাইকেলে। রাজপথ যেন অনুরক্ত প্রণয়ের আতিথ্য গ্রহণ করেছে। চৈত্র সেল থেকে ফিরতি পথে দুজনেই মগ্নচৈতন্যে আবদ্ধ প্রণয় আরক্ত গোলাপী ওষ্ঠ।পলাশরাঙা আগুন রাস্তার চতুষ্পার্শে গণ সারিবদ্ধ অরণ্য ছায়াবিস্তার করে আগলে রেখেছে দুটি প্রণয়ভুক্ত প্রজাপতিকে।
সৌম্য বলে জুনকে তোমার মনে আছে হাঁটু অবধি একটা ছোট ফ্রক পড়ে তুমি এসেছিলে আমার সাথে বাজারে একদিন দেখা করতে। তোমাকে দেখে আমার রোমকূপে জেগেছিল এক অপূর্ব শিহরণ তোমার ঊরুসন্ধি তে আমার চকিত চমক। আমার স্থিতি ও লয় যেন ওখানেই অবস্থান করছে আর আমার গতি যেন শূণ্য তাপাঙ্কে স্থির,,, অচলায়তন। তুমি বরাবরই পুরানো দিনের মতন তাই কোনদিন ছেঁটে দিতে চাইনি তোমার বগলের কেশদাম। তবে তুমি যেরকম আমি তোমাকে ঠিক সেইরকম গ্রহণ করতে চেয়েছি। তাই হয়ত অবুঝ কৈশোর মনে ওগুলোকেও ভালোবেসে ফেলেছি।
আজকে প্রায় দুবছর হলো কোন এক অজানা সর্পদোষে কিংবা অভিশাপগ্রস্ত চেলা কাঠে কালশিটে পড়েছে প্রেমিকের মনে। ঘন আঁচড়কাটা কালরাত্রির অবান্তর দুশ্চিন্তার নৈরাজ্যে মুখ ও চোখ বুজে এক পাষাণ মূর্তিতে সৌম্য পর্যবেশিত হয়েছে। যেন কি একটা অসুখে এই বৃক্ষ আজ জরাগ্রস্ত বোধের অভাবে নিরাসক্ত। দুজনেই অনেক দূরে মাইল না যোজনখানেক দূরে। ব্রহ্মচর্য তপস্যায় যেন লীন গৈরিক হৃদয়ে জুন। অন্য কোন পুরুষের সংসর্গ সে চায় না। তাই একলা পথ চলা যেন শিখতে লেগেছে নিজ প্রয়োজনে।
আবার এসেছে আজ পহেলা বৈশাখের আগে ঘনঘটা করে চৈত্রের সেলের বাজার। জুনের নিঃসঙ্গ হৃদয়ে মোচড় দিয়ে ওঠে আজকে আমার পাশে আমার হাত ধরে চলার মতন কেউ নেই। তাই আজ আমার একাই পথ চলা। কিন্তু যখনি আড়ালে বা ফাঁকে দেখে ফেলে কোন প্রতিরূপ জুন ও সৌম্যর মতোন প্রেমিক জোড়া মুকুল তখনি জুনের আধবোজা চোখে ভেসে ওঠে এক স্মৃতি। সৌম্য তুমি আজকে কোথায়।
উল্লাসী অষ্টাদশী তে লেগেছে আজ পূর্ণগ্রাস গ্রহন। রূপকথার রোদ্দুর আজ অতীত স্মৃতি আওড়ানো রাজপথে হরিদ্রাভ আগুন রোদে ধূ ধূ কোন বিষাদে লিপ্ত মরুভূমির চাদর।
হঠাৎ করে সে চলে যায় পুরানো সেই শপিং মলে যেখানে একদিন বসেছিল দুই প্রেমীর চাঁদের হাঁট।
জুন একটা ড্রেস পছন্দ করে চলে যায় ট্রায়াল রুমে। সেখানে গিয়ে চেঞ্জ করতে গিয়ে তার মনে হঠাৎ একটি কথা মনের অবচেতনের দোড়গোড়ায় এসে হাজির হয়।
তার বয়ফ্রেন্ড এর একটা কথা যা সে অনেকদিন আগে তার উপলব্ধি হিসাবে শেয়ার করেছিল তার সাথে।
বলেছিল,,,,, প্রতিবন্ধকতা আর থাকতো না যদি থাকে উন্মুক্ত করার জন্য তোমাকে দুচোখ ভরে দেখার জন্য কোন গোপনীয় চাবি। ভাবতে ভাবতে জুন এতটাই বিভোর হয়ে যায় সৌম্যর খেয়ালে যে তার মনে হতে থাকে এক অপরূপ রূপকথার বিভ্রম।
জুন ভাবে যে সে ট্রায়াল রুমে থাকাকালীন
দরজাটা খুলে দেয় অবশ্য তখন কেউ ছিল না আশেপাশে।BF কে দেখিয়ে বলে কেমন লাগছে বলো।হঠাৎ তার শাহাজাদা তাকে ঐরকম নতুন পোষাকে অন্যরকম মাত্রায় রূপসী দেখে হারিয়ে যায়। সে ছুটে ঢুকে যায় রুমে। আর লক করে দেয় দরজা ভেতর থেকে।তারপর কোমরে দুহাত রেখে তাকে টেনে ধরে বুকের কাছে। আর কপালে কিস দিতেই থাকে আর বলতে থাকে জুন তোমাকে দারুন লাগছে আর তোমার কোমরটা উফ,,, যেন বিনা মেঘে বজ্রাঘাত। জুন ভাবে তার পোষাক সার্থক হাজার টাকার উর্ধ্বে তার প্রাপ্তি। উচ্ছ্বসিত তার হৃদয় আজ অনেক দিন বাদে।
তাই দীর্ঘকাল যাবৎ ভুল বোঝাবুঝি শুধু মিনিটের পর মিনিট তার ব্যার্থ Missed Call. Off Screen e ডেকে উঠেনি রিংটোন। গোমড়া মুখে অবসাদের চাদরে আর ছবিতে তাকিয়ে জুন দীর্ঘশ্বাসে চোখের জল অন্তরে লুকায়।আমাদের দুজনের রোম্যান্টিক কাপল ছবি এযাবৎকাল শুধু এক দীর্ঘ যতির টানে সম্পর্কের অবহেলিত অধঃক্ষেপ হবে বলে চোখ রাঙায়।
Changing Room e ঢুকতেই দর্পণে ভেসে উঠে আমাদের Screen Shot, তোমার আমার কাছাকাছি, তোমার পছন্দে আমার পরিধানের স্বর্গসুখ। হঠাৎ দর্পণটা ভার সহ্য করতে না পেরে ছনছন করে ভেঙ্গে পড়ে। আমার প্রত্যাশা বসন্ত পশ্চাদগামী শীতঘুমে থেকে যায়।
এবার এল পরের বছর পূজোর বাজার। ওদিকে মনমরা জুন দুচোখের পাতায় ঘুম নেই। সকলের কথায় গেল ঐ বাজারে কেনাকাটা করতে একা একবছর বাদে।হ্যাঙারগুলো জোরে জোরে ঠেলা মারে। কাপড়চোপড় জামা সব বিস্বাদ।ঘৃণ্যতার ক্ষোভ রুদ্ধশ্বাসে গলা চেপে ধরে। একটাই প্রশ্ন কেন নেই তুমি, কোথায় আছো তুমি সৌম্য। কিন্তু কোন উত্তর নেই। সেই নির্ভরতার কাঁধ আজ আর নেই তাকে আগলে রেখে পরম আদরে ঘরে পৌঁছে দেবার জন্য। তাই তাকেই আজ নিজের ঢাল নিজেকেই হতে হয়েছে। ঢাল নেই তলোয়ার নেই যেন কোন নিধিরাম সর্দার।
ফুটপাথে সারি সারি রঙীন নাইটির চক্রমণে মনমরা জুন ভাবে এক অলীক স্বপ্ন যে যদি আমি তোমার এইবছরে বিবাহিত স্ত্রী হতাম তাহলে হয়ত তুমিও তোমার মাসমাইনার যৎসামান্য রোজগারে আমার জন্য আনতে নাইটি মনের মতন পছন্দ করে। যদিও রুচিশীল আভিজাত্যের মহার্ঘ মূল্যের পরিধান সেটা হতে অক্ষম হতো কিন্তু তার কৌশিকী রন্ধ্রে থাকতো তোমার হাতের স্পর্শ যা হয়ত আড়ালে আবডালে ঘাম হয়ে গড়িয়ে পড়তো আমার ক্লিভেজে বা ঊরুজাত নগ্ন খাদানে। প্রতীয়মান হতো তুমি আছো আমার সর্বাঙ্গ জুড়ে যেন তুমিই হতে এক এবং অদ্বিতীয়ম অস্তিত্ব।
কিন্তু আজ আমি ছন্নছাড়া বেবাগী একা একা পথে ঘাটে ঘুরে মরি নিজ প্রয়োজনের মুখে দীর্ঘশ্বাসের ফেরবদলে পুনরুদ্ধারের চাবি কুলুপের মুখে রেখে যদি কোনদিন কোনক্রমে খুলে যায় যদি প্রণয়ের অগ্রগতির দরজা বিশ্বাস ও ধৈর্য দিয়ে। হঠাৎ ভাবে জুন বিহানে কোনভাবে একলা পথ চলতে চলতে,,,,,,যদিও সৌম্য তোমার যৎকিঞ্চিৎ উপার্জনে ক্ষুৎকাতর পিপাসা তবুও তোমার কাছ থেকে আমার সর্বাধিক প্রিয় বস্তু ছিল তোমার দেওয়া কোন রূপালী মণিহার নয়,,,, আমাদের দুজনের চাতকতৃষ্ণায় বিভোর মুগ্ধতার গোত্রের গাঁটছোলায় আবদ্ধ। দীর্ঘ অপেক্ষার শেষে চরম প্রাপ্তি তোমার দেওয়া দিনের শেষে আমাদের দেখা হবার প্রথম মুহূর্তে ঐ চালকের মতো তৃষ্ণার্ত ঠোঁটের চুমু।
ফিরে যাওয়া পালকির দুঃস্বপ্ন।
ঘোরলাগা নিদ্রাহীন চোখে ঘুমভাঙা প্রত্যুষে তোমার আবছা প্রতিচ্ছবি।
চাদর ভেজায় দিন চলে রাত চলে একঘেঁয়ে সূত্রের বিন্দু ধরে ছয়লাপ।
নির্ঘুম দিগন্তে তোমার দূর্ভিক্ষের হাত পাতা কাঙাল।
খুঁটে খুঁটে মুড়ির দানা শৈশবের অবুঝ হাতে তুলে চোষে।
ঐ নিষ্পাপ চোখে তাকিয়ে সহজিয়ায় গানে ভাসতে বাধ্য।
শ্বাসবর্ণের জটিল ধোঁয়ায় কুন্ডলীকৃত বালিকা জীবন।
দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোলে প্রেমের শুভারম্ভ।
নতুন প্রজন্মের রঙ লেগেছে পলাশের আগুনের কথাকলি।
হাঁটাহাটি তোমার হাত ধরে না তুমি ধরতে লেগেছো আমার হাত।
আজ বিবশ তোমার ছবির সামনে নির্বাক অশ্রুজলে।
ঝাপসা আরশিতে আমার সঙ্গে আমার দেখা।
মনে আছে তোমার যৎকিঞ্চিত সামর্থ্যে মনে লেগেছিল শৈল প্রস্তরের,
দুর্নিবার ঝঞ্ঝার ধাক্কা, ভেঙে চুরমার।
একঝটকায় আমার উদ্ধত আভিজাত্যের বিনুনী,
তুমি শেখালে এক আনা দু আনার সত্যি দাম।
উধাও আমার মতিচ্ছন্নের টাকা উড়ানোর দরজা।
বুঝলাম অর্থের প্রকৃত অর্থ, তুমি নিজের জীবন করলে উজাড়।
মারকাট ছাতার আঘাতে ঘাতের পর প্রতিঘাতে উন্মুখ প্রেমিকা।
তোমার প্রতিশোধহীনস্পৃহা সহজ মন।
পাল্টে দিল আমার মাথা থেকে পা, আমি আজ সম্পূর্না।
মুঠোফোনের জগতে নিজেতে বিভোর স্বপ্নের লাল নীল সুতোয়,
আমরা বাঁধি প্রেমের গলিতে ছোট একটি ঘর।
কেমন ধারা আত্মসর্বস্ব আমি, মনের ঘরে খিল আঁটি।
যদি অতর্কিতে ঢুকে পড়ে আমার দুর্ভাগ্য।
কেড়ে নেয় তোমাকে আমার ছোট্ট বুক থেকে।
ওদিকে হারিয়ে সঞ্চয় বেসুরো হয় অপদার্থের বাঁশের নল।
শত শত ফুঁয়ের ধিক্কারে ওঠে না তোমার প্রেম আজ অভিশাপ।
বেঢপ লক্ষ্মীর ভাঁড়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে দিনাতিপাত তোমার,
আমি ওতেই সুখী বেশি কিছু লাগবে না আর।
দিনের শেষে বুকের দরাজ একহাত মাথাপাতা বিছানা।
কিংবা সকালের শুরুতে আমীর কপালে চুমু,
অথবা তোমার আমীর কিভাবে চলবে,
মাসমাইনের ফর্দে গোনা চুনোপুঁটির সংসার।
সেটা ভুলে দুই ভয়ের মাঝে,
রংচটা বিবাহে ফিরে যাওয়া শান্তশিষ্ট বউ সমেত,
পালকির প্রত্যাবর্তন হয়ে যাক আজ তোমার ক্ষুদ্র ঘরে।
এই আনন্দ বসন্ত সমাগমে।