খড়দার দেবী রয়কে
""""""""""""""''''''
হে প্রিয়,
হে দেবী! তোমার জিজ্ঞাসাটি ব্যক্ত করলেই সংসার যে অকূল দরিয়ায় ডুবতে বসে!--তোমার কোন প্রশ্ন থাকতে নেই-- প্রভাতের দাতন থেকে দেবালয়ের চন্দনটি পর্যন্ত তোমায় যোগান দিয়ে যেতে হবে।
সংসারে কারু বেদনা হলেই আপনার দেহ-প্রশাখার পাতা ছিঁড়ে তার যন্ত্রণা প্রশমিত কর। এখানে শেষ নয়-- কারু নয়নের কাজল প্রয়োজন হলে, আপনার দেহছাল ছিঁড়ে দীপানলে তপ্ত করে অন্যের নয় রঞ্জিত কর---তুমি যে মানবী
ওরা ভাবে তোমার সারা সুখ--ওদের প্রশমিত বেদনায় আছে! তাই সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত যতটা রস পাওয়া যায়- কর্মের মধ্যদিয়ে এক এক করে নিংড়ে নেয়!।
তুমি ভাব, "এ আমার দায়ীত্ব!" ওরা ভাবে- "এটাই নিয়ম!" তুমি ভাব- "আমার সংসার!" ওরা ভাবে- "এর জন্যই ওর আসা!"।
তবু ওরা তোমায় মানবী ভাবে! ওরা ভাবে-- রোগীর শিয়রে রাত জেগে সেবা করার জন্যই তোমার জন্ম! ওরা ভাবে- তিল তিল করে তোমাকে বিলিয়ে দেওয়ার জন্যই তোমার জন্ম!-- তোমাকে স্বপ্ন দেখতে নেই---দু'দণ্ড শান্তি পেতে নেই-- হাসতে নেই-- কাঁদতে নেই--মরতে নেই,-- তবু ওরা কেউ ভুল বশত বলে না--" তুমি দেবী!"।
শুধু কি বসন্তে! 'ওর' ক্ষেত্রে একটু আলাদা, রক্ত-মজ্জা তুলে দেওয়ার পরেও-- অফিসের সময় কলটি বাবুর পোকেটে গেঁথে দিতে হয়! নইলে যে কর্তব্যহীনা হতে হয়! সংসারে ভারি অমঙ্গল নেমে আসে!
তবু ওরা তোমাকে মানবী বলে! কারণ--তুমি যে একালের "নিমগাছ!"।
ওরা সত্যটা জানে। তোমার অন্তরের অন্ধকারময় নিশীথে প্রবেশ করতে ভয় করে, নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে তাই- সর্বদা আইন জারি রাখে।
মাঝে মাঝে ভাবি- উপড়ে নিয়ে আসি--পারিনা, শিকড় যে মাটির অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে!।
ভাল থেকো
ইতি
- - - -