বর্ষবরণ
"ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা"
সত্যিই আমাদের ভারতবর্ষ পূর্ণ নিজ মহিমায় I এমন প্রাকৃতিক শোভা খুব কম দেশেই পরিলক্ষিত হয় I তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের পালা পার্বণ I প্রতিটি ঋতুতেই প্রকৃতি ফুলে, ফলে সেজে উঠে আপন রূপ, রস , গন্ধে ও নানান ছন্দে I গ্রীষ্মে আম, কাঁঠালের সুবাসে মুখরিত হয় আকাশ , বাতাস I প্রচন্ড দাবদাহে যখন প্রকৃতি ক্লান্ত হয় তখনই বর্ষা সুন্দরী সজীব ও সতেজ করে তোলে পৃথিবীর বাতাবরণকে I সকালের হৃদয়ই নেচে উঠে ময়ূরের ছন্দে I নবীন পত্র পল্লবে ভোরে উঠে ধরা I চারিদিকে শুধুই সবুজের সমারোহ I ধীরে ধীরে অতিবর্ষণের একঘেয়েমি আমরা কাটিয়ে উঠি আকাশের পেঁজা মেঘের আবির্ভাবে Iমাঠে মাঠে কাশ ফুলের সমারোহ দেখা যায় I সমীরণের আলতো ছোঁয়ায় তারা দুলে উঠে আনন্দে Iশিউলি ফুলের গন্ধে আকাশ বাতাস ভোরে উঠে I শরতের আগমন বার্তা আনে ওরা Iজগৎ জননী, মঙ্গলাময়ী দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হয় সকলে I শরতের বিদায় বেলায় অনুভূত হয়, উত্তরে বাতাসের ঠান্ডা হাওয়া Iচারিপাশের প্রকৃতি ধীরে ধীরে শীতল হতে থাকে I শীতের আবির্ভাবে আমলকির বোনে বোনে নাচন লাগে I শীতের মনোরম আবহাওয়া সকলকেই বহিঃমুখী করে তোলে I দেশ দেশান্তরে ছুটে চলে মানুষ অজানাকে জানার সন্ধানে I কতকাল অতিবাহিত করে জ্ঞIন ভান্ডার সমবৃদ্ধ করণে I তার সঙ্গে চলে লোভনীয় ভুরিভোজ I মাঘের ব্যঘ্রসম হিমানী যেতে না যেতে বসন্ত জাগ্রত হয় দ্ধারে I সেজে উঠে প্রকৃতি- কৃষ্ণচূঁড়া, পলাশে রঙ্গিন হয় এ ভুবন I দখিনা বাতাসে কৃষ্ণচূঁড়া মাথা দোলাতে থাকে Iকচি পাতায় ভোরে উঠে গাছ গাছালি Iপ্রকৃতির এক অপরূপ শোভা পরিলক্ষিত হয় Iবিধাতা পুরুষ তার নিজ হস্তে অতি নিপুণতার সঙ্গে রাঙিয়া তোলে এই ধরাকে Iকনে দেখা মেঘেতে সোনা রং লেগেছে মনে হয় I বসন্তের শেষে ও গ্রীষ্মের প্রারম্ভের শুভক্ষণে আমরা মেতে উঠি বর্ষবরণ উৎসবে I অনেক আশা, আকাঙ্খা, ভরসা ও ভালোবাসা নিয়ে আমরা বর্ষকে বরণ করি নানান কাব্য , কবিতা ও গানের মধ্যে দিয়ে I নতুন করে সকলকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় আমাদের পথ চলা নতুন ভাবে I
"এসো হে নবীন বর্ষ, এসো আজি অঙ্গনে ,
জীর্ণ , জটাজাল থেকে মুক্ত হোক ধরা এই আবর্তনে "