"অন্তঃকরণ"
চোখের পলকে অলসতার আঁচড় না ফেলে
কয়েক শতাব্দী যদি আঁধারে বসে সময় গোনা যায়
শোনা যাবে বিচ্ছিন্ন হাওয়াই ভাঙা ব-দ্বীপের নিঃশ্বাস।
ঝুরোঝুরো মাটির মেরুদণ্ড ভাঙলে
নদীর পাড়ও কেমন ভেঙে পড়ে
ঝুপঝাপ শব্দে আঁচড় কাটে জলের আঁচল
এই যে নদী এবং নদীর নিচে থিতিয়ে পড়া বালি,
এদের কুষ্ঠি বিচার করলে দেখা যাবে
জল ও মাটির অনুশীলন লিপি;
দীর্ঘ অনুশীলনে মহাকাব্যিক ছন্দ
অনুকরণে-অনুরণনে-অনুবদ্ধে...বেমালুম খুনসুটি
কীভাবে হাড়-পাঁজর ভেঙে ইতিহাস গড়ে ওঠে
কীভাবে জলরঙ মেখে রুপ নেয় রঙ সভ্যতা!
নিয়মিত সূর্য উঠার আগে
ফুটে ওঠে লাল আলো, প্রভাত পাখির গান
এই দিন গুলো সবার জন্য নয়;
আলোর তীব্রতা সহ্য হয় না সমান
কষ্টগুলি বাসা বাঁধে বুকে।
এরপর যদি বৃষ্টি আসে,আসুক
একে একে ধুয়ে ফেলি অচল আয়তনে
জং ধরা বিবর্তনের গল্প
ভেঙে ফেলি দিনকানা মৌমাছির মধুচাক....
"অর্বাচীন"
স্বপ্নেরা ডুব দিল জঙ্গলে
পাহাড়ের চূড়ায় রাখি দৃষ্টি ---
সমতল থেকে ক্রমশ উচ্চতার দিকে
তাপমাত্রা কমে আসে ;
রাতভোর পাতলা হাওয়ার আনাগোনা মেপে নিতে
কান পাতে প্রাচীন দেওয়াল
আজ যেখানে শুষ্কতা, কাল সেখানে আর্দ্রতা
পরশুদিন মনে হয় নির্ঘাত বৃষ্টি হবে!
পড়ন্ত রোদের অবেলার ছায়াছবিতে
আকাশের বাতিঘর ফুটে উঠলে
সন্ধার খসখসে ছায়াপথে দৃষ্টি রেখে
মন পড়ে যায়
কচি মাঠে অমসৃণ বালিকা বেলায়
জানিনা কেন আজ ফের আবাসিক হলাম
যখন শূন্যতা ধেয়ে আসে ঘূর্ণিঝড়ের মত
পিছন পিছন ফেলে আসা শৈশবে.....
"আত্মতৎপরতা"
যা যতই কাছের করে চাই
তা চলে যায় ততই দূরে
স্বপ্নের সব কথা ধ্বংস হয়ে তৈরি হয় পরাক্রম বিষন্নতা
কালচে শিরা উপশিরায় স্পষ্ট মুখের রেখা!
হতে পারে সেগুলি গতজন্মের
আরও কিছু না পাওয়ার ছোপ
চাওয়া-পাওয়ার বিভ্রান্তি মেশানো অসংশোধিত মনব্যালেন্স
বরাবরই আমি প্রেমের অঙ্কে বেশ কাঁচা......
সুদলছায়ার শেষে রোদ,তারপর ঘনিয়ে আসে মেঘ
মেঘের পর বৃষ্টি
অবশেষে দীঘলছায়াই পেতে রাখা নরম বসন্ত
আর কত ঠিক বেঠিকের দর কষাকষি?
সাম্ভাব্য নির্ভূলতায় এবার পথ চলি----
যেতে যেতে পথে হোক দেরি
আমার সব ধৈর্যের আজ আমিই পরীক্ষা নেবো,
সহ্যের বাঁধ ভাঙুক
ক্ষয়িষ্ণুতার পথে অগ্রসীন জীবনের আত্মতৎপরতা!
"আদরদাগ"
উপমার ফুল তুলে কিছু সাজাতে চাওয়া
সত্যিকারের মনের ভুল
যৌবনে বুকের পর্দা হঠাৎ বেড়ে যায়
বোঝা হয়ে ওঠে না কিভাবে সেজে ওঠে
নকসা--রঙীন ফুল--পাখি--লতা
সে কথা থাক; সব অপ্রয়োজনীয়
পশ্চিম কোণ থেকে ভেসে আসা কালো মেঘ দেখলে
আভাস হয় পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়
তার আগে আকাশে কত সাজসজ্জা
খেলনা রঙ, লুকোচুরির বিকেল;
আশা করি, এতক্ষনে সব বুঝে গেছে
ঐ বেনামের পাখিটি
যে শান্ত চোখে সাজানো বাগান দেখছিল
তারও বোঝা হয়ে ওঠেনি
একসময় হঠাৎ কেমন ফুলগুলি ঝরে যাবে!
বেদনার রঙ আর খুশির ছন্দে
কীভাবে সেজে ওঠে জীবনের মিল?
মিল! না অমিল?
"আলোটান"
আদরের কালসিটে বুকের ভিতর
কালনাগিনী হয়ে হুস হুস ফণা তোলে ;
রক্ত মাংসে একাকী অন্ধকার সমুদ্রের
হাজারটা ঢেউ ঢুকে যায়
আর অনুকরণে শব্দবিশ্লেষনের অনুবন্ধ ----
এত এত কষ্ট সইতে সইতে যখন শরীর আত্মা হয়ে যায়
সব যন্ত্রণা বুঝে নিতে নিতে মন বিমুখ,
বুক অচেতন হয়ে পড়ে
তখন অনাদরের ঝাঁপি খুলে বেরিয়ে আসে অনন্ত আদর
সব অঙ্ক কবিতা হয়ে যায়
ঠিক দশমিকের আগে ও পরে
হাজার টা শূন্য বসালেও খণ্ড ও অখণ্ডের সমস্ত হিসেব
যেমন বিলীন হতে থাকে সরল অনুপাতে
তেমনি আমি আর আমার ইশ্বর
নীল আভায় নীল চোখে পেরিয়ে যায় অপার নীলিমা.....
==================================
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন