প্রস্তরযুগ ১
নৌকাভাসানের সময় যদি মেপে নিতে পারতে ঢেউস্তর
দেখতে, কাগজের নৌকার গায়েও লেখা স্পেনীয় আর্মাডা
আর ওদিকে কাঠের মাস্তুলে একজন লোক মোমবাতি জ্বলিয়েছে,
তীব্র মোমবাতির ভাপ; আধখাওয়া হাভানা সিগার
অনেকটা চাঁদের মত। এই চাঁদ। এই বিদঘুটে চাঁদ
একদিন ধোঁয়া হয়ে যাবে , যেন কাজল , যেন প্রেম রোগ
সেদিন দেখবে বাষ্প জমেছে চে গুয়েভারার বুকে
যেন ভালবাসা ! যেন সেই আদিম বিশ্বাস
আর আমাদের সামনে কোন উপায় নেই
উদ্বায়ী চাঁদে বসতি স্থাপন করা ছাড়া, যেন পরিযান, প্রস্তুতি
নৌকাভাসানের সময় যদি মেপে নিতে পারতে আলোকবর্ষ
দেখতে আস্তে আস্তে আলগা হয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের খোঁপা
যেন মেঘ, যেন নিয়ানডার্থাল মানুষের আদিম পরিযান
প্রস্তরযুগ ২
রোদকে কখনো ডুবে যেতে দেখেছো নিঃশ্বাসে,
রোদ নিভে আসে
আর তখনই হয় আমবাগানে ভিনগ্রহীদের আসা যাওয়া
ভিনগ্রহী মানে মেখলিগঞ্জের সেই মেয়েটা যার
মুখের এক দিকটা অ্যাসিডে পুড়েছে
অন্যদিকে বাসা করেছে তিতিরের সংসার
পুরাতন খড় বয়ে আনে মানুষের আদিম বসতি
একটু শান্তিতে থাকবে বলে। শান্তিতে বাঁচবে বলে !
নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাস রেখে বলে ভালোবাসি!
বলে ভালোবাসি, ভালোবাসি
পাথর হয়ে যাওয়া দুটো ঠোঁটের ধাক্কায় , চিবুকের ধাক্কায়
আগুন জ্বললে আবারো প্রস্তর যুগ শুরু হবে আগামীকাল
প্রস্তরযুগ ৩
গোপীবল্লভপুরের আগেই আমাদের রাস্তা শেষ হয়
বাকি রাস্তা পায়ে হেঁটে যেতে হবে,
দুহাতে ওঁতপেতে আছে সুপারিবন, সবুজিয়া জঙ্গল,
খরস্রোতা। পরিবেশ মায়াবিনী বটে, তার থেকেও মায়াবিনী
সন্ধ্যে নামার রাস্তা , দূর থেকে মনে হয় সূর্য যেন রক্তমুখী নীলা,
হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেছে জীবনানন্দ নিজে,
দুপাশের ছবির তুলতে গেলে
হাতের ক্যামেরা পাথর হয় আসে, প্রকৃতিও পাথরস্বরূপা
দুজনের চুম্বনে আগুন লাগলে দাবানল জ্বলবে কতকাল
ঠিক যেনো, প্রস্তরযুগ আর গোপীবল্লভপুরের আগেই
আমাদের বাসটাও পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
====================
ইন্দ্রজিৎ নন্দী
লিঙ্ক রোগ ,আরামবাগ, হুগলি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন