google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। স্নানযাত্রা ও জগন্নাথ দেব ।। সুদর্শন মণ্ডল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

নিবন্ধ ।। স্নানযাত্রা ও জগন্নাথ দেব ।। সুদর্শন মণ্ডল

সুখবর...প্রচলিত রীতি মেনেই হবে পুরীর রথযাত্রা উৎসব, ভক্তদের যোগদানে কড়া  নিষেধাজ্ঞা– News18 Bengali

স্নানযাত্রা ও জগন্নাথ দেব

সুদর্শন মণ্ডল

ধর্ম প্রাণ মানুষের কাছে স্নানযাত্রা কেবল মাত্র একটা উৎসব নয়,ঈশ্বরের সান্নিধ্য ও সহায় লাভের হাতিয়ারও বটে। হিন্দু পঞ্জিকা মতে জ্যৈষ্ঠ মাসের দেবস্নানা পূর্ণিমা তিথিতে আয়োজন করা হয় এই স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান। কথিত আছে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মনু এক বিশেষ যজ্ঞের আয়োজন করেন। সেই যজ্ঞের প্রভাবেই প্রভু জগন্নাথ দেব আবির্ভূত হন এই ধরা ধামে। এর পরথেকেই ঐ বিশেষ পুন্য তিথিতে ভক্তরা মহা সমারোহে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা কর্মসম্পাদনে সামিল হয়। আড়ম্বরের কোন ত্রুটি রাখা হয় না সেখানে। ঘটা করে পালিত হয় এক বিশেষ পার্বণ।  

জ্যৈষ্ঠের উত্তাপে যখন চারপাশ পুড়ে ছাই হবার যোগার, ঠিক তখনই পৃথিবীর বুকে নেমে আসে শান্ত শীতল জলের ধারা। ঘরা ঘরা জলে যেন এক শান্তি এনে দেয় স্নানযাত্রার মোরকে আটকে থাকা এক অনুষ্ঠান। ভক্তরা মেতে ওঠে তাঁদের পূর্ণ অর্জনে। শীতল হয় ভুমি।

স্নান যাত্রার এই পূর্ণ দিনটিকে বৈষ্ণবরা বিশেষ শুভ দিন বলে মনে করেন। তাঁদের বিশ্বাস ঐ দিন ভগবান জগন্নাথ দেবের দর্শন করার অর্থ , গত জন্ম আর এই জন্মের সকল পাপ ধুয়ে যাওয়া। দেব দর্শনে নির্মূল হয় অতীতে ঘটে যাওয়া কত গুলি আবাঞ্ছিত ঘটনা। 

স্নান যাত্রার দিন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রভাতী সূর্যের লাল আলো ফোটার আগে থেকে শুরু হয় সাজো সাজো রব। এমন পুন্য তিথিতে মন্দিরের উত্তর দিকের কুপ থেকে জল এনে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে চলে শুদ্ধিকরণ। এর পরে ১০৮ কলসীর জলে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদন মোহন বিগ্রহ গুলির স্নান সম্পূর্ণ করা হয়। এর পরেই নাকি জগন্নাথ দেব জ্বরে কাহিল হয়ে পরেন।ফলে প্রয়োজন হয় তাঁর চিকিৎসার। রাজবৈদ্য তাঁর চিকিৎসা করেন।এই সময় গোপন এক ঘরে তাঁকে রাখা হয় কম্বল মুরি দিয়ে। জগন্নাথ দেবের এই অসুস্থতা পর্যায়টি ভক্তদের কাছে 'অনাসর' নামে পরিচিত।

কেবল মাত্র পুরীতেই নয় , স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে ইস্কন মায়াপুরের রাজাপুর জগন্নাথ মন্দিরে ভক্তের সমাগম চোখে পড়ার মত। এক রাজকীয় পরিবেশে প্রভু জগন্নাথ ১০৮ রকম খাবার-ফল-মিষ্টি সহযোগে পূজিত হন। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তির সামনে নিবেদন করা হয় সে সব জিনিস। ঘি, মধু নানান ফলের রস দিয়ে জগন্নাথ দেবের স্নান পর্ব মিটলে শুরু হয় তাঁর অবসর । ভক্তরা সে সময় প্রভু জগন্নাথ দেবের দর্শন পাননা। প্রায় এক পক্ষকাল পরে রাজ বৈদের আয়ুর্বেদিক পাঁচন খেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন জগন্নাথ ।

 রথযাত্রার দিন মহা ধুমধামে ভক্তের সামনে প্রভু জগন্নাথ হাজির হন নিম কাঠের তৈরি রথে। টান পড়ে রশিতে। ভক্তেরা হাজির হয় রাজপথে। বিপুল জন সমাগমে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাদের ভক্তেরা নিয়ে যায় মাসির বাড়ি।ভক্তের সকল পাপ ধুয়ে যায় কোন এক অজ্ঞাত কারনে। মনের সকল দুঃখ কষ্টকে ভুলে  আকাশে বাতাসে ভেসে ওঠে 'জয় জগন্নাথ' ।

============================

 


সুদর্শন মণ্ডল 

মদনপুর, নদিয়া 

ফোন :8293195177

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন