তালগাছটা
তপন মাইতি
মাস তিনেক হল অরিন্দম একটা মোটা মাইনের চাকরি পেয়েছে।
সাতাশ বসন্তের পর শহর থেকে ফিরছে সে।
রাত দশটা! পাড়াটা যেন কুম্ভকর্ণের ঘুম দিচ্ছে। ঘুরপথ ছেড়ে সোজা ফাঁকা
মাঠ ভেঙে আসছে। হঠাৎই গা ছমছমের বাতাস লাগল তালগাছটায়।
সারা শরীরে তড়িৎ খেলে গেল। গাছটার গা বেয়ে নেমে আসছে হু হু বাতাস।
আচমকায় থস্ করে কি যেন একটা পড়ল। টর্চের আলোয় কিছুই দেখা গেল না।
দেখার মধ্যে সাপের ফণার মতো দুলছে বাবুই পাখির বাসা সব। সকালে উঠেই ব্রাশ নিয়ে
তালগাছটার পাশে দাঁড়ালেই শৈশবের সেই তালগাছটার কথা মনে পড়ল।
কত বড় হয়ে গেছে সে। বাসায় বাসায় অন্ধকার। তার চোখের সামনেই
ভেসে উঠল। সেই ভয়ার্ত খুনখারাপী রাজনীতি।গা ছমছম রাতে কজন মিলে বাবাকে
টেনে হিচড়ে তুলে নিয়ে যায়।মা মুখ চেপে টানতে টানতে নিয়ে চলে যায় তাকে। সেই তার যা যাওয়া।
মাটিতে কয়েকটা ডিম ফাটার হলদে খয়েরি দাগ আর ফাঁকা লবনাক্ত দাগ।
তালগাছটার মাথায় তখন সকালের মরাচাঁদ!
==================================
তপন মাইতি
গ্রামঃ পশ্চিম দেবীপুর; পোঃ দেবীপুর; থানাঃ মৈপীঠ কোস্টাল; জেলাঃ দঃ ২৪পরগণা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন