google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। মরণ ঝাঁপ ।। কবিরুল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২২

গল্প ।। মরণ ঝাঁপ ।। কবিরুল


মরণ ঝাঁপ

কবিরুল


               "বুবু জাম্প ! জাম্প বুবু !"
               "বুবু......জাম্প.....!"
                  ..........  ..... ........  ..........

              "স্যার, কেমন দেখলেন.....?"
              "এখনো বলা যাবে না।  তবে কেস স্টাডি চলছে। "
             "স্যার, কিছু একটা করুন....। আমরা সবাই টোটালি কনফিউজড্......।"
              "দেখুন এইভাবে কিছু বলা যাবে না। বলাটা ঠিকও  নয়।  আর সামান্য কটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। "
               "মানে.....?" 
                "মানেটা ভীষণ পরিষ্কার। কেসটা আর পাঁচটা কেসের থেকে অনেকটাই  আলাদা।"
               "স্যার......! "
              "ইয়েস! আমরা বোর্ড বসিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই একটা........"


                কথা শেষ হয় না। পাশের ঘর থেকে হঠাৎই চিৎকারের শব্দ ভেসে আসে। 


             "আগুন ! আগুন ! সব পুড়িয়ে দিয়েছে। পুড়ে শরীরটা ঝলসে গেছে। ও মনে হয় বাঁচবে না। প্রভু জগন্নাথ ঠিক বিচার করল না......"

             সবাই হন্তদন্ত হয়ে পাশের ঘরে ছুটল। কোথাও কোন আগুনের চিহ্ন নেই। 'আগুন', 'আগুন' বলে চিৎকার করা মানুষটিও কেমন ভয়ে সিঁটিয়ে গেছে। এখন সে অসম্ভব শান্ত। বালিশে মুখ গুঁজে কেঁদেই চলেছে।

             স্যার নিজের চেম্বারে গভীর চিন্তায় মগ্ন। এই ধরণের ঘটনা বেশ কিছুমাস ধরে চলছে। যাকে নিয়ে এই ঘটনা, তিনি আদৌ বিষয়টা নিয়ে অতটা ভাবিত নন। তিনি কোনোদিন আগুন দেখে ভয় পেয়েছেন এমন ঘটনাও ঘটেনি। তাহলে.....?

           প্রশ্নটা সবার মনে  ঘুমিয়ে থাকলেও বহুদিন পরে উত্তরটা মেঘ ছিঁড়ে বৃষ্টি নামার মতনই ধেয়ে আসল। 

                *******  ********   *******

               দেখতে দেখতে তিনটে রথযাত্রা চলে গেছে।ঝাউ এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি।

           আজ উল্টোরথের দিন সবাই ঝাউয়ের ঐ অস্বাভাবিক আচরণের উত্তরটা পেল।

             ডক্টর শিণ্ডে বেশ বিচলিত। মনে হয় এবার উনার কাজটা আরো এগোবে। 

                  ঝাউপাতা বহু বছর পরে রথের মেলাতে গিয়ে এক কিশোরকে হঠাৎই  দেখে অবাক হয়।

      বছর তেরোর ছেলেটি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিচ্ছিল। 

           এই "মরণঝাঁপ " একটা বিশেষ ধরণের গ্রাম্য  খেলা। রথের মেলাতে বেশ জনপ্রিয়। ছেলেটির বাবাও ঐ কাজ করতে গিয়ে পুড়ে মারা যায়। 

           ছেলেটিকে দেখে ঝাউপাতার অতীত নাড়া দেয়। 

              তখন সবে নার্সিংয়ের ট্রেনিং শুরু হয়েছে। এক পেটানো চেহারার আদিবাসী  ছেলের সাথে প্রেম হয়। পরে অসাবধানবশত ঝাউ গর্ভে সন্তান ধারণ করে। 

             সেই ছেলেটিই আজ বড় হয়ে বাবার দেখানো পথে ঐ খেলা খেলে রোজগারে নেমেছে।

     ছেলেটি আশ্রমে মানুষ। ঝাউ ছেলেটির জন্ম দিয়েই ওকে আশ্রমে রেখে আসে। 

           আজ বহু  বছর পরে বুবুল যেন ফিরে আসছে। ছেলের মধ্যে।
 
                ঝাউয়ের এখন চিকিৎসা চলছে। ওর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা তৈরী হয়েছে।

      তবে ডাক্তার আশাবাদী..... ঝাউ একদিন ভাল হবে। 

         রথের মেলার হঠাৎ দেখাই সব ফেরাবে।

   ====================
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন