Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

ছবি
  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

গল্প ।। সান্ত্বনা চ্যাটার্জি ।। রঙিন পাথর


রঙিন পাথর

সান্ত্বনা চ্যাটার্জি

 

আজকাল  প্রতিমা নানা রঙের পাথর দিয়ে তার ঘরসাজানো শুরু করেছে। নানান রকম কাঁচের ফুলদানি, পেটমোটা, সরু গলা, ছড়ানো এগুলো আলমারি থেকে বার করে, ধুয়ে মুছে চকমকে করে, যেটাতে যাভালো লাগে, যেমন পেট মোটাতে জল ভরে রঙিনপাথর ফেলে মনি প্ল্যান্ট, ছড়ানো পাত্রে শুধুই পাথর, কাঁচের মোম দানি, টবের গাছ, কিছু বাদ রাখেনি।এমন কি দেবেশের ছবির পাশেও কাঁচের  ফুলদানীতেরঙিন পাথর আর জলরেখে, সূর্যমুখী ফুল কিনে সাজিয়েছে। একা আপন মনে সারাদিন এ ঘরে ও ঘরঘুরে বেডায়, কাঁচের আলমারিগুলো মুছে রাখছে, ঘরেকোথাও ঝুল নেই তো, দেবেশের যে খুব পরিস্কার করাবাতিক ছিল।

        এটা নয় যে প্রতিমা নিজে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালোবাসে না। কিন্তু বাডিতে এতো কাজ, তার উপর দেবেশের দীর্ঘ সময় অসুস্থ থাকায়, বাড়ি আর রোগীর সেবা দুটোতে সমান মনোযোগ দিতে পারেনি। ফলে বাড়ির কাজে ঢিলা পরে ছিল। এখন তার অখণ্ড অবসর, কেউ নেই কিছু নেই। একটা দীর্ঘশ্বাস বেডিয়েআসে।

        আজ দুপুরে পুরাতন সহকর্মী মীরা এসেছিল, দুপুরটা কাটিয়ে বিকেলে ফিরে গেল। এ রকম কিছু চেনামানুষ আছে বলেই একাকিত্ব তার হৃদয়ে থাবা গেড়ে বসতে পারে না। মীরা বেশ কিছুদিন পরে এসেছে তাই প্রতিমার রঙিন পাথর প্রেম জানতে পারেনি।

দেখে বলল বাহ্ ভারি সুন্দর লাগছে তো, কতো রঙেরমেলা, মনটা খুশি হয়ে যায় । আগে তো কখনো এতো ঘর সাজানোর ইচ্ছা দেখিনি। যদি ও জানি যে দেবেশ তোকে তোর নিজের ইচ্ছা মতন চলতে দিত না কোনওদিন। এ শাডিটা কেন পডেছ পাল্টে এসো। এ কিফুলদানি টা টেবিলের উপর রেখেছ কেন?

        তোমার কোনও সৌন্দর্য বোধ নেই, এতদিনে নিজেরমত আছিস, খুব ভালো ,সব অপূর্ন ইচ্ছা পূর্ন করেনে। জীবনে আফসোস থাকবে না।

        মীরা বোঝেনি তার সহানুভূতির কথা প্রতিমার হৃদয়ছিন্ন ভিন্ন করে দিচ্ছিল। কিছুক্ষন মাথা নিচু করে চোখের জল সামলে মাথা তুলল প্রতিমা। ধরা গলায় বলল, নারে সব ব্যাপারে দেবেশ বাধা দিত না আমায়।দেবেশশাডির দোকানে এসে দুটো শাডি পছন্দ করল, আমি বললাম দেবেশ এতো টকটকে লাল সিল্ক চওড়া কালো তেজরি পার, এ বয়সে কি পডা উচিত! রেগে গিয়ে বলল কেন তুমি কি বিধবা!

        খুব ভালো মানাবে তোমায়। দুটোই বেশ দামী আর রঙচঙে, আমার একটু হাল্কা, চাপা রঙ ভালোলাগে দেবেশের ঠিক উল্টো, সেদিনের কথা আমার আজও মনে পরে, কতো ভালোবাসত আমায়।

        দেবেশের রাগটাই মারাত্মক ছিল তাই সকলেই ও কেরাগী বলেই চিনত। দেবেশের অনুরাগ শুধু আমিজানি। তাছাড়া ও মানুষ টা ছেলে মানুষের মতন সরলছিল। যা মনে হতো সবার সামনেই বলে দিত। ঠাট্টাকরলে সত্যিভেবে বসত। মানুষ তো দোষে গুণে ভরা।

 

আমার উপর দেবেশের অগাধ আস্থা আর বিশ্বাসআমাকে অনেক কাজে এগিয়ে যাবার সাহস যুগিয়েছে। সবসময় পাশে থেকেছে, সুখে দুঃখে যেকানও পরিস্থিতিতে, কখনও একলা ছাড়েনি রে আমায়। আমার সহায়আমায় ছেডে গেছে, সে যে কি বেদনাদায়কএবার প্রতিমার কথা বন্ধ হয়ে যায়।

        অঝর ধারায় চোখের জলে বুক ভাসায়।

        মীরা চুপ করে থাকে, জানে এখন কোনও কথা বলাঠিক হবে না।

        কিছু পরে প্রতিমা আঁচলে চোখ মুছে বলে, দেবেশের সংগে আমার জীবনের সব রঙ চলে গেছে। শুধু ধূসর ফাঁকা মরুভূমি।তাই তো রঙিন পাথর কিনেছি এতো, আমার আর দেবেশের প্রাণে রঙ আনবার জন্য।

        মীরা চোখ বড় করে বলে, কি বলছিস রে, দেবেশেরপ্রাণ তো শেষ হয়ে গেছে, তোর কিন্তু একা থাকা একেবারেই উচিত নয়।

        প্রতিমা মৃদু হেসে বলে, নারে ভয় পাস না, যা বলছিভেবেই বলছ। হ্যাঁ মানছি দেবেশের শরীর জীবনের সাথে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু সব প্রাণই তো অনন্তঅসীম প্রাণে মিলে যায়, সেখানে না জন্ম আছে নামৃত্যু না দুঃখ নাবিচ্ছেদ। রবি ঠাকুরের গান টা শুনিসনি, আমার তো খুব প্রিয় গান। ডাকার মতন ডাকতেপারলে ঈশ্বর ধরাদেন, অসীম অনন্ত প্রাণের স্রোতেকোথাও তো আছে সে, তাই আমার জীবন রঙিনকরতে আর সে রঙ অনন্তপ্রাণে ছডিয়ে দিতে এতোরঙের বাহার এনেছি ঘরে।


Santwana Chatterjee

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল