Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

গল্প ।। জ্বলাময়ী সংসার ।। প্রিয়ব্রত চক্রবর্তী

 

জ্বলাময়ী সংসার 

প্রিয়ব্রত চক্রবর্তী 



-মালাই, মালাই, ঠান্ডা মালাই। এ বাবু তু এখানে? 

-হ‍্যাঁ আপনি এইভাবে? 

-হ‍্যাঁ বাবু ভোরবেলা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বেতবেড়িয়া ঘোলা স্টেশনের চায়ের দোকানে তারপর দোকান বন্ধ করে মালাই কারখানায় গিয়ে মালাই বাক্স কাঁধে নিয়ে বার হয়ে যাই। 

আমি হাসতে হাসতে বললাম, এই বয়সে এত কষ্ট করছেন কেন? 

-বাবু আপনি মাস গেলে মোটা টাকাটা নিয়ে পকেট মোটা করেন। আমার তো তেমন হয় না। 

-কী করব বলুন! গেলেই মাসে আমার মোটা টাকা গুঁজে দেয়। 

-না বাবু আমি এইভাবে বলতে চাইনি। তো বাবু জামাইষষ্ঠী যাননি কেন? 

-(দীর্ঘশ্বাস ফেলে) আমাদের আবার জামাইষষ্ঠী! 

-বাড়িতে বউ আর শ্বশুরবাড়িতে শাশুড়ি...

-কী করব বলুন! জানেন তো আমি সংসার ছেড়ে দেব ভাবছি। কিন্তু এখন গেলে তো মা আছেন। তাই ভাবছি...

- বাবু, এমনিতে আপনি তো বেশ থাকেন! কী হয়েছে বাবু! 

- কেন সংসার সত্যিই কী আমার জন্য? 

- বাবু... 

- জানো তো আমি বেলুড়ের এক মহারাজের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার মনের কথা বলে এসেছি। 

- কী এমন বলেছেন? বাবু, আপকা তবিয়ত আচ্ছা আছে না! 

- (আনমনাভাবে) জানো তো, আমি আমার বউকে বলেছিলাম সংগঠন-টংগঠন করতে যেও না! ও বলে কিনা- হুম তোমার কথায় কথা। ইস্ আমাদের স্টাফেরা প্রত‍্যেকে করছে, আর আমি করব না। তুমি কে হে যা তো! আমি তখন বলেছি- তুমি আমাকে কী বললে! আমি তোমার ঘরের ধারে ট্রান্সফার করালাম আর তুমি কিনা আমাকে এইভাবে বলছো? সত্যি তো কারওর উপকার করতে নেই। ও তখন বলে কিনা- আমার টাকায় সংসার চলছে আর কত বড় বড় কথা। তুড়ি মেরে বলে কিনা টাকা ছড়ালে তোর মতো কুকুর পায়ের তলায় ঘুরে বেড়ায়। আমি ব‍্যঙ্গচ্ছলে তখন বলেছিলাম- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ‍্যাসাগর কাউকে উপকার করলে সে যদি না অপমান করে, তাহলে জানবে তুমি তাকে উপকার করতে পারনি। ও তখন কী বলেছিল জানো... 

- বাবু, ম‍্যাডাম আপনাকে এইভাবে অপমান করল? এটা একদিনে ঘটেনি! 

-(আমি বিহারীর কথায় কর্ণপাত না করে আপন মনে)তুমি কি চুলকাতে আমার উপকার করেছিলে? আমি তো তোমার সাধিনি! তাছাড়া আমি যদি না লিখিত পরীক্ষায় পাশ না করতাম, তাহলে তুমি কী ছিঁড়তে! আমি বিষণ্নতার সুরে আপন মনে বললাম- কিন্তু তোমার মেজদি আমার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, যদি তুমি গঙ্গাকে এই চাকরি পাইয়ে দিতে পারো, তাহলে গঙ্গার আর কোনও চাহিদা তোমার কাছে থাকবে না। তখন তুমি খিলখিল করে হাসতে হাসতে বলেছিলে, অ‍্যাই দিদি ও তো বলেছিল আমি যদি লিখিত পরীক্ষায় পাশ করি, তাহলে আমার ইন্টারভিউটা ও দেখে নিজে কিছু ব‍্যবস্থা নেবে। আমি হাসতে হাসতে বলেছিলাম- ধেৎ আমরা পারি! পারি না। তবে কারচুপি যাতে না হয় সেটা দেখতে পারি। আমার গিন্নির মেজদি বলল, তাই দেখো, তাতেই আমার বোনের হয়ে যাবে। ঠিক আছে দেখি কী করা যায়? কীই যে দেখলাম তাতেই হয়ে গেল। কী জানি, উপরওয়ালার দয়ায় বোধহয় হয়ে গেল। তারপর থেকে বেশ কিছুদিন আমার সঙ্গে ওর ব‍্যবহার খুব ভালো ছিল। আমি ভাবলাম বাঃ সংসার বোধহয় এইভাবে অতিবাহিত হয়। তবুও মানুষ কেন ওলট-পালট ভাবে। কিন্তু না, আমার এই চিন্তা দূরীভূত হয়ে গেল। আমার গিন্নির মাথায় অহমিকার পোকা কিলবিল করে উঠল কেননা নতুন চাকরির টাকা ছ'মাস পরে হাতে পড়ল। ধরাকে সরা জ্ঞান করতে লাগল। থাকতে লাগল আমার শ্বশুরবাড়িতে। শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি প্রাইমারি স্কুলে গিন্নির শিক্ষকতার কাজ, তাই পায়কে। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন থেকে শুরু করে শ্বশুরবাড়ির আশপাশের লোকজনও আমাকে দেখলে যাচ্ছেতাই ভাষায় অপমান করতে লাগল। কেউ কেউ তো বলে, বুড়ো হয়ে ছুড়ির সঙ্গে বিয়ে করে কচি সাজছে। আর কোনও মেয়ে পেল না। পেয়ে গেল তো চাকরি করা মেয়ে। আঃ কি দারুণ তাই না! সব দিক থেকে টসটসে রস নিংড়ানো যাবে। আহারে বুড়ো হয়ে ছুড়ির নেশায় মত্ত। 

এই ধরনের কত রকম কথা শুনে হজম করতে হচ্ছে। প্রথমটায় বলে রাখা ভালো আমার বয়স আমার গিন্নি থেকে দশ বছরের বেশি। সেটাই ওদের কাছে খুব বেশি। গিন্নির চাকরি পাওয়ার ছ'মাস আগে আমি ছিলাম নাকি ওদের পাড়ার সেরা জামাই। সাংবাদিক বলে কথা। তাও আবার প্রথম শ্রেণির নামজাদা দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। কিন্তু এখন ওদের কাছে এই চাকরির কোনও গুরুত্ব নেই। বেসরকারি চাকরি বলে কথা। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কথা বললে চোখ থেকে টপটপ করে জল পড়ে। এই তো সেদিন চাকরি পাওয়ার আগের দিন। আমি শ্বশুরবাড়িতে এসেছি শুনে আমার শ্বশুরের যতগুলি জামাই ছিল তারা সবাই এসে পাত পেতে হাঁকডাক করে হইচই করে যত্নআত্তি করা। আর এখন এই জামাই গেলেই অন্য ঘর থেকে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে শালাদের কথা বাদ থাক আমার শ্বশুরমশাই শাশুড়িকে বলেন, ও তো আস্তাকুঁড়ের হাগরে জামাই সপ্তাহে একবার না একবার আসবে। ওর জন্য আবার আলাদা করে কী করব? আমার বড় ছেলে এতটা কষ্ট করে তাকে দিয়ে উচ্ছিষ্ট যা থাকবে তাই খাবে। 

অথচ অবাক হতে হয় আমার বউ মাসহারা ৩৫০০টাকায় ওদের সংসার চলে। আর বড় ছেলের অস্থায়ী পঞ্চায়েত অফিসের কাজ। সে টাকা সব গুনতি করে ব‍্যাংকে গিয়ে পড়ত বড় ছেলের নামে। কেননা তার ভবিষ্যতের সঞ্চয় না থাকলে যে বিয়ে-সাদি হবে না। আপনি জিজ্ঞাসা করতেই পারেন, কেন যাওয়া? জানেন আমি যেতাম আমার কচি একটা ফুটফুটে ছেলে তো ওদের বাড়িতে তিলে তিলে আগাছা-কুগাছা খেয়ে বড় হচ্ছে। তার মাও ভাবের ঘরে নিজের চাকরির নেশায় ছেলের প্রতি যত্নআত্তি নেই। আমার দেখা মাত্রই তার ভাষাও বেশ বেগতিক হয়ে দাঁড়াত। তবে বাপের বাড়িতে নিজের রান্না নিজে করে খেয়ে যেতে হয় সঙ্গে ওর বড় ভাইয়ের রান্না। আর এখন ওর বড় ভাইয়ের বিয়ের পর আমাদের বাড়ি থেকে যাতায়াত কিন্তু রান্নাবান্না করে আমার বউদি। তাও হয় না বাড়িতে আমার বয়স্ক বাবা-মাদের যাচ্ছেতাইভাবে গালিগালাজ সহ অপমান। আমাকে কোনওভাবে ছেড়ে কথা কয় না। কী করব আমি তো ছাড়ালেও ছাড়তে পারি না। আমার ছেলের মুখের পানে চেয়ে...

বিহারী ফেরিওয়ালার দীর্ঘশ্বাসে বুঝিয়ে দিল সে আমার দূঃখে কতটা দুঃখী। সেও আপন মনে বিড়বিড় করে বলে উঠল, জানেন বাবু আমিও প্রথম প্রথম বিয়ে করতে চাইনি। কিন্তু এখন... আমি সবজি ব‍্যবসা করে দু'হাত ভরে অনেক টাকা আয় করে পাঁচ কাঠা জায়গা কিনে ছাদ ফেলা দু'খানা ঘর সঙ্গে পায়খানা ঘর ও বেশ বড়সড় রান্নাঘর করেছিলাম। বাকি থাকা সামনের জায়গাতে বেশ বাগান করেছিলাম। আমার সখের বাগান। ওরা যখন আমাকে তাড়িয়ে দিল, তখন আমি বলে এসেছিলাম, আমার বাগানটা অন্তত তোমরা নষ্ট করো না। সেই ছেলে আমার জানি না কেন কেঁদে কেঁদে বলেছিল, বাবা তুমি নিশ্চিন্তে থাকো আমি থাকতে বাগানের কিছুই হবে না। তোমার বাগানটা অন্তত...

সেই সময় বউমা মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, বউ, দোকান খেয়ে হয়নি না এবার ছেলেকে ধরা হচ্ছে। (আমার সামনে আমার ছেলেকে হিরহর করে টানতে টানতে) চলো, চলো ভিতরে ঢুকিয়ে দড়াম শব্দ করে দরজা বন্ধ করে দিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে সেই বার হয়ে এসেছিলাম আর এবার করে লকডাউনের চক্ষু লজ্জা মাথা খেয়ে ছেলের কাছে কিছু সাহায্যের জন্য গিয়েছিলাম। সেখানকার অবস্থা কী বলব বাবু...। চক্ষু থেকে আপনাআপনি জল পড়তে লাগল। আমি লকডাউনের সময় চক্ষুলজ্জার মাথা খেয়ে গিয়েছিলাম ছেলেমেয়ের কাছাকাছি গিয়ে কিছুটা আর্থিক সুখের ভিক্ষা চাইতে। আর নিজের রক্তের অংশ তো বাবু এই ছেলেমেয়েদের প্রতি যে টান, সেই টান ওখানেও আঁচড়ে পড়ে। সেই ভাবাবেগে বাবু আমি ঋণ করে হলেও গেলাম। যাওয়ার পর আর কী বলব, আমার ছেলেটা আমাকে দেখে আকুপাকু ছুটে এসে সেই বাচ্চাদের মতোই খিলখিল করে হেসে বলল, আপনি আছেন আব্বু! আপনি আছেন আব্বু! আমি কিছু না বলে তো দু'হাত বাড়িয়ে আর আমার খোকন সোনা বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমি এইভাবে জড়িয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষণ পর আমি বললাম, আমার বেহেশতের চাঁদ কেমন আছে? খোকন বলল, ভালো আছে। তার মা তাকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছে। আমি আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নাচতে নাচতে বলে উঠলাম, আমার চাঁদ বড় হয়ে গিয়েছে। খোকন বলল, হ‍্যাঁ আব্বু সে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় দশম হয়েছে। আব্বু আজকে তো আমাকে অফিসে যেতেই হবে ভাইটাল মিটিং আছে। জানো আব্বু এখন আমি ম‍্যানেজার। আব্বু বিবি এল বলে তোমার পয়সাকড়ি কিছু লাগবে তো নিয়ে যাও! এসো ঘরে এসো! ওঃ না এখানেই দাঁড়াও আমি আসছি আব্বু বলে ছুটে গিয়ে ঘর থেকে হাজার দশেক টাকার বান্ডিল বার করে বলল, আব্বু এখনই চলে যাও। ও এই এলো বলে। দূর পানে লক্ষ করে দেখি আমার সুন্দরী ছেলের বউ আসছে। সে বোধহয় আমাকে দেখতে পেয়েছে,তাই হন্তদন্ত হয়ে আসছে। সত্যিই তাই, আমার কাছাকাছি না এসে দূর থেকে আমাকে সেলাম করে ঘরের মধ্যে না ডেকে নিজে ঘরের মধ্যে ঢুকে খোকন সোনাকে ডাকতে থাকে। ডাক শুনে খোকনের মুখ পানসে হয়ে গেল। থতমত খেয়ে মৃদু স্বরে বলল, আব্বু তুমি চলে যাও! আমি হঠাৎ করে এপার-ওপার তাকাতে তাকাতে বললাম, আমি আসি...। যেতে যেতে শুনতে পেলাম, আঃ লাগে, আমাকে দয়া করে খামচিয়েও না। আব্বু, আব্বু আমি আর পারছি না। আমার মন চাইছিল ছুটে গিয়ে ডাকিনি বউয়ের হাত আমার খোকন সোনাকে ছিনিয়ে আনতে। কিন্তু আমি তো অপারগ! আমি পিছন দিকে হাত মুঠো করতে করতে কখন যেন আনমনে স্টেশনে এসে গেলাম। চোখ বেয়ে আমার টপটপ করে জল পড়তে লাগল। আমি ফেরত আসার টিকিট যথারীতি কলকাতাগামী ট্রেনে উঠে গেলাম। আমার আর আমার খোকন সোনাকে যে আমি কোথায় থাকি? মেয়ের কাছে যাব কিন্তু কেমন যেন ভয়ে আর পা বাড়াতে পারলাম না। যদি তাকেও আমার খোকন সোনার মতো এইভাবে অত‍্যাচার সইতে হয়। বাবু জানেন আমি আমার এখানকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাতে পারিনি বলে খুব দুঃখ। কিন্তু বাবু যাদের পেরেছি, তারা বা সুখে আছে কই! জানেন আমি এই তো গতকাল ফোনে খবর পেয়েছি আমার খোকন সোনা গাড়ি চাপা পড়ে মারা গিয়েছে। আমার দাদুভাই যখন ফোনে খবর দিয়ে কাঁদছিল, সেই সময় পিঠে দুমদুম করে কিল মারার শব্দ পাচ্ছিলাম। আমি ভয়েতে আর ফোন করার সাহস পাইনি। বাবু এ বাড়ির বউ আমাকে এখন বলেছে, না বলেছে না, আদেশ করেছে, আমি যদি প্রতি সপ্তাহে ওর হাতে তিন হাজার টাকা করে দিতে না পারি, তাহলে আমার ছেলে দুটোকে সুইসাইড করবে। 

আমি হাঃ, হাঃ, হাঃ করে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু না ও কেঁদে কেঁদে বলল, না বাবু না আপনি অন্ততপক্ষে হাসবেন না। আমার ছেলের মাথায় হাত দিয়ে বলেছে বাবু। 

এই কথা শুনে থাকতে না পেরে পকেট থেকে পাঁচশো টাকা বার করে হাত বাড়িয়ে বললাম, এই নিন! 

সে টাকা না নিয়ে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে ট্রেন স্টেশনে থামতেই নামতে নামতে কেঁদে কেঁদে বলল, বাবু আসি। আবার (ছুটতে ছুটতে) স্টেশনেতে পড়ে থাকা কলার ছালের পা পড়তেই ধপাস করে স্টেশনের ওপরে চিৎপটান হয়ে গেলেন। বরফের বাক্স থেকে বরফগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল স্টেশনের ওপরেই। সঙ্গে সঙ্গে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন ছুটে এসে ওনার চারিদিকে ঘিরে ভিড় করে দিল। আমি নামতে যাব কী ট্রেন ছেড়ে দিল। গেটের সামনে থাকা অবস্থায় দূর থেকে শুনতে পেলাম, যাঃ শেষ! আমি লাফিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে নামতে যাব কী একজন টেনে আমাকে ভিতরে ঢুকিয়ে নিলেন। আমি ট্রেনের ভিতরে হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগলাম। আর ভিতরে থাকা প‍্যাসেঞ্জার আমায় আশ্বাসবাণী শোনাতে লাগলেন। কিন্তু আমি…

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩