প্রতিশ্রুতি
"কিরে শম্ভু, কেমন আছিস?" শম্ভুর পিঠে হাত চাপড়ে বললো অতুল।
শম্ভু সবজি সাজাচ্ছিল বস্তা পেতে। হাত জোড় করে বললো, "এই তো দাদা, ভালো আছি।"
"ব্যবসা কেমন চলছে?"
"ভালোমন্দ মিলিয়ে খারাপ চলছে না।"
"দুইবেলা খেতে পাচ্ছিস?"
"হ্যাঁ হয়ে যাচ্ছে। বাচ্চাটা তো এখনো ছোট। মায়ের দুধই খায়। তাই আমার আর বউয়ের হয়ে যায়।"
"শোন, তুই আমাদের দলের দাদাকে তো চিনিস। উনি খুবই ভালো মানুষ। আগেরবার অল্প ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। এবার জিতলে আমাদের সবার অনেক সাহায্য হবে। আগামী রবিবার আমাদের মাঠে উনি একটা সভা করবেন। তুই তোর বউ-বাচ্চা নিয়ে আসবি। দুপুরে ভালো খেতেও দেবে।"
"তাই নাকি?"
"হ্যাঁ আসিস কিন্তু। তোদের মুখ দাদা দেখে রাখলে তবেই ভবিষ্যতে সাহায্য হবে।"
"আচ্ছা দাদা, যাবো।"
আট মাস পরে,
শম্ভু বৃষ্টির মধ্যে ছুটতে ছুটতে এসে হাজির হলো পার্টি অফিসে। অতুল ও ওদের দলের দাদা উপস্থিত। ওই দলই এখন শাসক।
"দাদা, আমার বাচ্চাটার খুব অসুখ করেছে। অনেক টাকা লাগবে সুস্থ করতে। কিছু সাহায্য করুন। নাহলে যে বাচ্চাটা মরে যাবে।" শম্ভু হাত জোড় করে বললো।
"কি হয়েছে তোর বাচ্চার?" অতুল জিজ্ঞেস করলো।
"খুব জ্বর। ডাক্তার বলছে ডেঙ্গু হয়েছে।"
"কাল আসিস। দেখবো কি করা যায়।" শাসক বললেন।
"দাদা, আজকেই ওষুধ না নিয়ে গেলে আর বাচ্চাটা আমার বাঁচবে না।"
"এখন কোথায় টাকা পাবো? আমার কি টাকার গাছ আছে নাকি যে ঝাড়া দিলেই পড়বে? বিরক্ত করিস না। যা এখন।"
অতুল শম্ভুর কাঁধে হাত দিয়ে ওকে পার্টি অফিসের বাইরে নিয়ে এসে বললো, "কাল আয়। আমি কথা বলে রাখবো।"
"কিন্তু আমার বাচ্চাটা যে মরে যাবে।"
"কিচ্ছু হবে না।"
"তুমি বলেছিলে, সভায় মুখ দেখালে সাহায্য পাবো। আমি তো সেদিন বউ-বাচ্চা নিয়ে গিয়েছিলাম দাদা।"
"অত লোকের মধ্যে দাদা তোর মুখ মনে করে বসে আছে নাকি!"
==========================
নামঃ স্বরূপা রায়
ঠিকানাঃ উত্তর ভারতনগর, ১০, বটুকেশ্বর দত্ত সরণি, পো- রবীন্দ্র সরণি, জেলা- দার্জিলিং, শিলিগুড়ি-৭৩৪০০৬
ফোন নংঃ ৮৬৩৭৫২৮৯২৫