তাপসী লাহার মুক্তগদ্য - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Friday, May 17, 2019

তাপসী লাহার মুক্তগদ্য


এই বঙ্গে ভোট রঙ্গে




ভোট দেবে ভাই ভোট, ভোট নেবে ভাই ভোট।কাকু কাকিমা মাসিরা পিসিরা দাদারা দিদিরা এই গরমাগরম মরসুমে কি শুধু আম পাকুক,কাঠাল পাকুক শুনে মন ভুলবে,বরং আম মেরে যাওয়া জনতার  ভেতরে চাপা ক্ষোভ, হিংসা , রাগ, দুঃখ, প্রাপ্তি        প্রত্যাশা, হতাশা গুলোকে  মনের ঘিঞ্জিগলি থেকে টেনে হ্যাচড়ে বের করে আগুন ধরিয়ে একটু মোচ্ছব পালন করে নিই,দূর্গাপুজা টূর্গাপুজা না,স্বাধীন  দেশের  স্বাধীন  নাগরিকদের এক্কেবারে যাকে  বলে,গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড়,বিগবাজারের অফারের থেকেও বড় একখানা উৎসব।

         উৎসব হবে এমনি এমনি বুঝি।কত্তরকমের জোগাড় যন্ত্রিরের ব্যাপার স্যাপার আছে।তার আগে হেকে ডেকে ভোট দেবতার আবাহন করুন আগে,জয় ভোট বাবার জয়।জয় ভোট বাবার জয়।ভোট বাবা ছাকনি ছেঁকে  ভোটার আনবো, শুধু এই বারটা  একটা হন্যে করে দাও।       নির্বাচনী  প্রার্থির  ঘনঘন পুজা আচারে,  চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে ভোটবাবার গেলো ঘুম ভেস্তে।আর চোখ কচল্যাতে কচল্যাতে সবে মাত্র হাই তুলেছেন কি না অমনি  চারিদিকের ত্রাহি চিৎকারে কানের পর্দার ফর্দাফাইয়ের জোগাড়,

    "ভোট বাবা পার করেগা
ভোট বাবা পার করেগা।"
ভোট বাবা পার করাদো,
ভোট বাবা পার করাদো" 

            এক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণির ভিন্ন ভিন্ন ডিমান্ড।সমস্ত রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিগত স্বার্থান্ধে "আম" রুপী জনতার
প্রাণ যায় যায়  করছে যখন,ঠিক তখনি  ভোটের দিন,ক্ষণ, নির্ঘণ্ট  ঘোষণায়, তারা ভাবছে,হায়রে এইবার  এদের মোক্ষম সাজা দেবো, আর পার করাবো বলে এয়সা পার করাবো মনে রাখবে।উফফ, কম জ্বালিয়েছো বাবা!

                এদিকে ভারত মাতার যোগ্যযোগ্য সব মাইয়া আর পোলারা   নির্বাচন নামক বড়দের সার্কাসে নাম লিখিয়ে    ভোটদেবতাকে বড় বড় নৈবদ্য চড়িয়ে আলতুফালতু  পটাটোপিপলদের পকেটস্থ করার নতুন নতুন ফন্দিফিকির আঁটছেন। 

       প্রকৃতির রঙ এখন ভোটের ফাগে বারে বারে গেয়ে উঠছে,
"রাঙিয়ে দিয়ে যাও  যাও
যাও  গো এবার যাওয়ার আগে।"

      এমন মনকাড়া  অফার কি ফেলে রাখতে হয় আর তাই ন্যাতান্যাতি আর তাদের নাতিপুতি,খুড়োখুড়ি, আর কাকি পিসিদের নিয়ে কোমর বেধেছেন এই মাস্টারপ্রজেক্টে।ফুল,ফল, হাতুড়ি, কোদালগুলো বাচ্চাদের ড্রইংবই থেকে প্রজাপতির মতন উড়ে উড়ে পাড়ার দেওয়াল জুড়ে বিচিত্র  রঙে খেলে বেড়াচ্ছে।সক্কালের স্কুল শেষ করে আয়ামাসির সাথে হেটে হেটে বাড়িফেরতা   কচিকাঁচারা নিজেদের সদ্যলভ্য অক্ষরজ্ঞান প্রয়োগ করে দেওয়াল জুড়ে লিখে যাওয়া নির্বাচনী  প্রার্থিদের নাম  পড়ে নতুন একটা খেলার পদ্ধতি  আবিষ্কার করে আনন্দে হাত তালি মেরে বাড়ির লোকদের কাছে নেচে নেচে বলে বেড়াচ্ছে।আর বাড়ির লোকেরাও নিশ্চিত। যাক এসব দিয়ে আমার ছানাটার   কিছু একটা  উপকার তো হচ্ছে।দেশ উচ্ছন্নে গেলে হবে কি,বেঁচে থাকো ভোট বাবা।
জয় ভোট বাবার জয়।