Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

গল্প ।। আমি স্বাধীন ।। চন্দন চক্রবর্তী

 

আমি স্বাধীন

চন্দন চক্রবর্তী

 


আমার নাম স্বাধীন । পনেরোই আগস্ট উনিশশো সাতচল্লিশে আমার জন্ম । এ বছর আমি পচাত্তর পূর্ণ করলাম । সেই উপলক্ষে সকালে গেলাম পাড়ার ক্লাবে । 


পাড়ার গণ্যমান্য কোন একজন ফ্ল্যাগ তুলে বীর শহীদের রক্ত দানের দুচার কথা বললেন । তাড়াতাড়ি নেবে চলে যাচ্ছেন দেখে জিজ্ঞেস করলাম,এত তাড়াতাড়ি করছেন কেন ? 


বিদেশ থেকে ভায়রা এসেছে । নেহাৎ উপায় নেই,তাই ফ্লাগটা তুলে গেলাম । 


চলে গেলেন । আরো আশ্চর্য্য হলাম,উনি যাওয়ার পরেই সবাই কেমন আলগা হয় গেল ! বুঝলাম দিবসটা এখানেই শেষ ।                        


সরে এলাম । 


সামনে এগোচ্ছি । কোন অফিস চাকুরে হনহন করে হেঁটে বাজারে যাচ্ছেন । 


বললাম,তাড়া কিসের ?


না মশাই,বাজারটা ফেলেই অমুক বাবুর বাড়ি তাসের আসর আছে,যেতে হবে,চলি । একটা দিন অফিস ছুটি পেয়েছি,ওটাতো আর নষ্ট হতে দেওয়া যায় না ।                  


 এগিয়ে চললাম । 


এক দোকানে খুব ভীড় । কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছে । জাতীয় পতাকা বিক্রির ঢল নেবেছে,সঙ্গে উপহার । 


দোকানীকে বললাম,খুব ব্যস্ত দেখছি ! 


তা বটে । বছরের এইরকম কয়েকটা দিন যা রোজগার বাড়ে । নইলে সারা বছরই তো শুনশান । কাল থেকে কোনোদিকে তাকাতে পারছিনা। এই বিশেষ দিনে একটা আলাদা রোজগার পাতি হয় কিনা !                        


আমার পরিচিত একজন সদ্য যুবক ফ্ল্যাগ কিনছিল । দোকানের বাইরে ওর সমবয়সী বন্ধুরা দাঁড়িয়ে । কয়েকজনের হাতে ব্যাগ ভরা বাজার । 


জিজ্ঞেস করলাম,আজকের প্রোগ্রাম ? 


বললো,বুনু বায়না ধরেছে ফ্লাগ কিনবে । ওকে বাড়িতে এটা দিয়েই এক বন্ধুর বাড়িতে যাব । ওখানে আমাদের পিকনিক আছে ।                       


হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তায় এলাম । 


একটা বড় মিষ্টির দোকানের সামনে চার পাঁচটি বাচ্চা হা করে শোকেসের মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে । দোকান থেকে কেউ বেরিয়ে ধাওয়া দিতেই ছুটে পালালো ।                 


একটু এগিয়েই বস্তি অঞ্চল । রাস্তার ধারে উপচে পড়া ময়লা । কয়েকজন সেখানে খুটে খুটে খাচ্ছে । একটা লোক ময়লা ঘেঁটে কিছু বস্তায় ভরছে । দুটো কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে ।                                                        


 হঠাৎ একটি বাচ্চা দৌড়ে রাস্তায় উঠে গেল । আমি প্রমাদ গুনলাম । বুক কেঁপে উঠলো !  রাস্তা দিয়ে ছুটে আসছিল কোনো দামী গাড়ি । আচমকা বাচ্চাটা সামনে চলে আসায় ব্রেক কষে থামানোর চেষ্টা করেও পরিণতিটা ঠেকাতে পারল না ।        


নিমেষে বস্তির সব মানুষ বেরিয়ে এলো । পথচারী যারা দু একজন ছিল তারাও দাঁড়িয়ে গেল । ওর মা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তাক্ত প্রাণহীন দেহটা কোলে নিয়ে চিৎকার করতে লাগলো,কাল রাতে খেতে দিতে পারিনি । না খেয়েই চলে গেলি বাবা !


দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না । এগোতে এগোতে শুনতে পেলাম,আজ এখানে আর একটু পরেই কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে ছেলে মেয়েদের জামা কাপড় দেবে,খাওয়া দাওয়া দেবে ।                     


তাড়াতাড়ি পা চালালাম । দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়ে শহর চকচকে হয়ে গেল । আর ঘুরতে পারলাম না । পা টলছে,বুকটাও ভার ভার । বাড়ির পথে পা বাড়ালাম । কোন বেসরকারি দামী স্কুল থেকে সমবেত কন্ঠে ভেসে আসছে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ  ।                      


বয়সতো হয়েছে । বাড়ি এসে তাড়াতাড়ি বিছানা নিলাম । অসার হয়ে পড়ে রইলাম । আমার নামটা পাল্টে ফেলতে হবে মনে হতে লাগলো ! কখন চোখ লেগে গেছে । স্বপ্নে দেখতে পেলাম রক্তাক্ত বাচ্চাটার মত অনেকগুলো অনাহার ক্লিস্ট বাচ্চা হাতে ফ্ল্যাগ নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে ! দূরে ভারতমাতা দাঁড়িয়ে আছেন । মুখটা অবিকল বাচ্চাটার মায়ের মত । মায়ের হাত শেকলে বাঁধা,চোখে জল !             


ঘুম ভেঙে গেল,টিভিতে কেউ ভাষণ দিচ্ছে । সোনার ইচ্ছা একটুও নেই,উঠে গিয়ে সুইচ ওফ করে দিলাম ।  

==================

 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক