google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। ক্ষুধার রাজ্যে ।। সুচন্দ্রা বসু - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

গল্প ।। ক্ষুধার রাজ্যে ।। সুচন্দ্রা বসু

ক্ষুধার রাজ্যে
সুচন্দ্রা বসু 
 

পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি  সুকান্তের এই কবিতাটি পড়ে সুদেবের মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। ক্ষুধার্তদের জন্য কিছু করার কথা সে ভাবে। যখন ফুটবল  খেলতে যেত দূরে কোথাও ট্রেনে
চড়ে সেখানে ভিখিরিদের দেখতে পেত। সে মনে মনে ভাবে স্বাধীনতার মানে।ভাবনায়  বেরিয়ে এলো,

 
 কবিতা - স্বাধীনতার মানে!

আজও ওরা ঘোরে হাত পেতে পথে প্রভাতে
               স্বাধীনতা তোমায় খুঁজে পায় গরম ভাতে
পাতের ভাতের সাথে যদি তরকারি জোটে
        স্বাধীনতার মানেটা মুখের হাসিতে ফোটে।

স্বপ্নে  বুকে উড়েছিল স্বাধীনতার পতাকা
         ছিন্ন বসনে শীতের দিনে লজ্জা হয় ঢাকা
রুজির সন্ধানে ঘুরে মেলে না কোন টাকা
         চুয়াত্তরের স্বাধীনতার মানে সবটা ফাঁকা।

ঘুম কেড়ে ভুখা পেটে কেন নিত্য হাহাকার
        তোলে তবু জয়ধ্বনি বন্দেমাতরম বেকার
প্রদীপ শিখার উজ্জ্বলতায় নীচে অন্ধকার
     তাই ভুখামানুষ জানে কি মানে স্বাধীনতার?

  এইসব ভুখামানুষের জন্য সে, টুর্নামেন্ট খেলে যে অর্থ পেত তার থেকে কিছু  জমিয়ে রাখত।পরে  বন্ধুরাও তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল।

তারা সকলে মিলে রোজ সন্ধ্যায়  খাবার কিনে অনাথ, অনাহারী ভিখিরি অসহায় মানুষগুলির কাছে স্টেশনে রাস্তায় পৌঁছে দিত।

প্রথমে তারা এইভাবে অল্প কিছু লোককে খাবার  দিত।পরে তারা স্থানীয় কয়েকটি হোটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।  সুদেবকে ভালো খেলোয়াড় হিসেবে হোটেল মালিকের কেউ কেউ চিনত।সুদেব তাদের বলে আপনাদের বাড়তি খাবার যা নষ্ট হয় তা ফেলে না দিয়ে আমাকে দিলে আমি অনাহারী মানুষদের  মুখে তুলে দিতে পারি।
সুদেবের কথা শুনে দু'একজন রাজি হয়।এইভাবে তারা সেই খাবার প্রতিদিন সংগ্রহ করে আরও বেশি বেশি মানুষদের দিতে থাকে । তারা খাবার পেয়ে সুদেবদকে আশীর্বাদ করে। দিন দিন খাবার সংগ্রহ আরও বেড়ে যেতে থাকে। তখন তারা  সাইকেলে করে দূরে খাবার পৌঁছে দিতে থাকে। এরপর তাদের নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে। কাগজে তাদের কথা লেখা হয়। তা দেখে ক্লাব সংগঠনগুলো এগিয়ে আসে। অর্থ ছাড়াও খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজে এগিয়ে আসে।

এখন সুদেবের পাড়ায় ভিখিরি অনাহারী মানুষ নেই।তাদের পরিবেশ এখন আর গদ্যময় নয়। কবিতার মতোন মনোরম হয়ে উঠেছে।

---------------------------------------

 সুচন্দ্রা বসু 

২৬৭/৫ জি. টি. রোড পানপাড়া শ্রীরামপুর হুগলি। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন