স্বাধীনতা পঁচাত্তর: অতীত বর্তমান
অশোক দাশ
স্বাধীনতার যে সূর্য অস্ত গেল পলাশীর প্রান্তরে
মীরজাফরের লোভাতুর চক্রান্তে,
এখনও মীরজাফর চালায় ষড়যন্ত্র
দেশ বিক্রির সুচতুর মতলবে।
ভূমি রক্ষায় সিধু- কানু- চাঁদ- ভৈরব
শতসহস্র বীর যোদ্ধার রক্তাক্ত বলিদান,
অরণ্যের অধিকারে আজও সংগ্রামের ময়দানে
উত্তরসূরীরা পায় না সম্মান।
সিপাহী বিদ্রোহের তাণ্ডবে সারাদেশে
জ্বলেছিল স্বাধীনতার আগুন,
সে আগুন নিভে গেল ফুৎকারে
দিলো না ধরা রঙে রাঙা ফাগুন।
স্বাধীনতার বেদীমূলে ঝরেছে কত
কান্না-- ঘাম --রক্তের --স্রোত,
আজ ও সমানে রক্ত ক্ষরণ
হৃদয় কাঁটাতারে ক্ষতবিক্ষত বিভক্ত।
স্বপ্ন চোখে স্বাধীনতা, ত্যাগের মন্ত্রে
কতশত তাজা প্রাণ অকাল বিসর্জন,
সেই স্বপ্ন আজও অধরা,ভাঙ্গা পাঁজরে
মরে শ্রমিক- কৃষাণ -যন্ত্রনায় যৌবন।
লালমুখো বাঁদরের নির্মম - নৃশংস-
পাশবিকতার বলি কত জননী- জায়া,
এখনও প্রতিক্ষণ কামান্ধের রোষানলে
চিতায় পোড়ে জীবন্ত স্নেহের দুহিতা।
কথা ছিল সব পেটে ভাত সব হাতে কাজ
সবার শিক্ষা স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত আশ্রয়,
এক ভারতে প্রাচুর্য বৈভবের রঙিন আলো
অন্য ভারত নিকষ আঁধারে হয় না সূর্যোদয়।
'নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান'
ছিল এ দেশের শাশ্বত অহংকার,
এখন সংখ্যালঘু দলিত ব্রাত্যজনের পোড়ে ঘর
জীবন জ্বলে আতঙ্ক ভয় অন্ধকার।
দেশের প্রতি নেই ভালোবাসা
মুখোশের আড়ালে লুট করে সম্পদ,
নিরাপত্তা হীনতায় আতঙ্কে ভোগে
রক্ষক এখানে নিজেই ভক্ষক।
অন্যায়ের প্রতিবাদে পরাধীনতার শৃঙ্খল
ছিন্ন করতে হয়েছে ফাঁসি দ্বীপান্তর,
আজ ও গনতন্ত্রের গ্যাড়াকলে বিনাবিচারে
অন্ধকারায় স্তব্ধ প্রতিবাদী কন্ঠস্বর।
স্বাধীনতা পঁচাত্তর ,প্রত্যাশার রসদে
পূর্ণ ধনীর রাজপ্রাসাদ,
প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য যাদের রক্তে বোনা শস্যে
শ্রমে ঘামে সভ্যতার বিকাশ।
স্বাধীনতা পঁচাত্তর তোমাকে পেতে চাই
মহামিলনের নবান্ন উৎসবে,
তোমাকে চাই ভালোবাসার ঐক্য মিনারে
প্রাণের পরশে ঝর্ণার কলহাস্যে।
==================
অশোক দাশ
ভোজান, রসপুর, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন