পাপের নাগপাশ
নিরঞ্জন মণ্ডল
স্বাধীনতার পঁচাত্তরেও প্রশ্ন হাজার মনে
আজও দেশের অযুত মানুষ আঁধার ঘরের কোণে।
জ্ঞানের আলোয় তাদের মনের ঘুচবে কালো কবে
সংস্কারের কঙ্কালটায় রূপটান কি হবে?
রোগ শোক আর খিদের জ্বালায় নিতুই পোড়ে যারা
রঙবেরঙের স্বপ্নে কেবল হয় কি আপন হারা?
নেশার টাকা বিলিয়ে যুবায় রাখলে আজব ঘোরে,
সৃষ্টি সুখের আনন্দটাই কাল ছুঁয়ে যায় মরে!
স্বাধীনতার পঁচাত্তরেও নেইকো যাদের কাজ
অভয় বানী বিলিয়ে তাদের পায়নাকো কেউ লাজ!
দেশটা আজও হাতড়ে বেড়ায় স্বাধীনতার মানে,
কোন পরানে মনটা বল উৎসবেতে টানে?
ল্যাংটো হয়েই ঘুরছে আজও এ কোলকাতার যীশু
ডাষ্টবিনেতেই খাবার খোঁজে লক্ষ অযুত শিশু!
লণ্ডন নয় এ কোলকাতা কোলকাতাতেই থাক,
সব শিশুরা দুই মুঠি ভাত দুই বেলাতেই পাক।
মাথার পরে পাক না তারা অভয় ছাদের দেখা
স্বাধীনতার পঁচাত্তরেই শিখুক পড়া লেখা।
ফলিয়ে ফসল দাম না পেয়ে মরছে শতেক চাষি
স্বাধীন দেশে তারাও বুঝি নেহাত পরবাসী!
চার দিকেতে উড়ছে নিতুই উন্নয়নের ফানুস
দই চেটে খায় নেপোর দলেই ; শুকনা পেটে মানুষ!
জনগনের রক্ত শুষেই বাড়ছে কারুর ভুঁড়ি
প্রতিশ্রুতির হাওয়ায় ভেসে জাতির কবর খুঁড়ি!
স্বাধীনতার উৎসব তাই পায় না পালে হাওয়া
হয় না তো তাই এ দেশপ্রেমে এক সুরে গান গাওয়া।
হাজার দলের হট্টমেলায় হাঁফিয়ে বেড়ায় দিশা
স্বাধীন দেশের অন্তরে তাই বাড়ছে জমাট নিশা।
জাতপাত আর ধর্ম-ধুলোয় আলোর আকাশ ঢাকা,
মায়ের গায়ে রক্ত ঝরার অঢেল ক্ষত আঁকা।
মজুর মুটের ঘামকে খুঁটে আলোর বাহাদুরি
গতির নেশায় পাগলপনা--ভাবের ঘরে চুরি!
কোন ভাবনায় এমন তর আকাশ পানে ছুট?
গুর্বো গরীব কামায় যেটুক হচ্ছে নিতুই লুট।
পঁচাত্তরের উদযাপনে দেশের মাটি ছুঁই,
মাটির মানুষ বাড়লে তবে ধন্য দেশের ভুঁই।
-------------------------------
-------------------------------
নিরঞ্জন মণ্ডল
গ্রাম-জগদীশপুর পালপাড়া
ডাক+থানা-রাজারহা
কোলকাতা-700135
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন