ভারত-অহংকার
আনন্দ বক্সী
শৈশবে ছিল সে যে খুব ডানপিটে
তোলপাড় করতো সে পাড়া-ঘর-ভিটে।
পিতার শাসন ছিল বেশ শুনি কড়া
তবুও সচল ছিল তাঁর নড়াচড়া।
'বিলে' নামে অস্থির ছিল প্রতিবেশী
বিরক্ত হতো তাঁরা রোজ কমবেশি।
দুমদাম ভেঙে দিতো পেতো যেটা হাতে
শান্ত-স্নিগ্ধভাব ছিল না যে ধাতে।
গাছে চড়া-ঘুড়ি ধরা ছিল জলভাত
গুলি বা লাট্টু খেলে করে দিতো মাত।
বটের ঝুরিতে ঝুলে খেতো খালি দোল
তল্লাটে ফেলে দিতো বেশ শোরগোল।
জানতে চাইতো খালি খুব এটাওটা
স্মরণে রাখতো সব পড়ে নিয়ে গোটা।
ধ্যান-যোগাসনে ছিল ভারি মনোযোগ
নিয়মিত তার সাথে ছিল সংযোগ।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে বেশি ছিল টান
গানের গলাটি তাঁর অতি অম্লান।
কবিতার হাতটিও ছিল পরিনত
লিখতেন তিনি সেটা করে মনোমত।
পরমহংস-সাথে হয়ে সাক্ষাৎ
জীবন বদলে গেল যে তৎক্ষণাৎ।
রামকৃষ্ণদেবকে মানলেন গুরু
নতুন মোড়কে হলো পথ চলা শুরু।
আধ্যাত্মিকতায় মাতলেন বেশি
গেরুয়া বসন পেয়ে হন সন্ন্যাসী।
জীবের সেবাই হলো ঈশ্বর সেবা
গুরু ছাড়া এ কথাটা শেখাতেন কে বা?
গুরুর সে কথাতেই মন দিলো সায়
মজলেন বেশি করে মানব সেবায়।
জাতপাত থেকে সদা থাকতেন দূরে
আর্তের কষ্টটা খেত কুরে কুরে।
ভালোবাসা বিলোতেন তিনি অবিরত
কোনো কাজে করেননি মস্তক নত।
মনটা ছিল যে তাঁর আকাশ-সমান
বহু কাজে দিয়েছেন সেটার প্রমাণ।
সাম্য আনাই ছিল লক্ষ্য জীবনে
প্রদীপ্ত দীপ তিনি আঁধার ভুবনে।
শিকাগো সভায় তিনি বাঁজিয়ে বিষাণ
ওড়ালেন ভারতের বিজয়-নিশান।
আলোর দিশারী তিনি চিত্তানন্দ
ভারত-অহংকার বিবেকানন্দ।
বীর সন্ন্যাসী তিনি তরবারি খোলা
তাঁর বাণী আজকে কি মনে দেয় দোলা?
তাঁর মত,পথ থেকে গেছি মোরা সরে
সাজাচ্ছি সব কিছু নিজ মতো করে।
ভুগছে ভারতবাসী তাঁরই অভাবে
আনতে পারতেন যে বদল স্বভাবে।
আসুননা ফিরে ফের আমাদের মাঝে
বিবেক জাগাতে এই মানব সমাজে।
============================
আনন্দ বক্সী, Vill-Beliadanga, P.o-Dakshin Barasat, P.s-Jaynagar, Dist-South 24 Parganas, Pin-743372.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন