google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। ভাগ্যের পরিহাস ।। সুচন্দ্রা বসু - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩

গল্প ।। ভাগ্যের পরিহাস ।। সুচন্দ্রা বসু


ভাগ্যের পরিহাস

সুচন্দ্রা বসু 


 দীপক চাষ করেই সাধ্যমত তার সংসার গড়েছিলেন। তাদের টানাপোড়েনের সংসারে অভাব নিয়মিত হলেও ঠিকঠাক চলেই যাচ্ছিল। সে সাধ্যমত দুই সন্তানকে মানুষ করার চেষ্টা করেন। এখন তার, দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত।
দীপক  ও দীপা দম্পতির দুই  সন্তানের মধ্যে  গোবিন পুলিশে কর্মরত। রবিন ইজি বাইক চালিয়ে জীবন ধারণ করে।
কিন্তু জীবনের নির্মম পরিহাসে অনেক সময় এই 'মানুষ' হওয়া সন্তানের আচরণও অমানবিক হয়ে উঠে। আজ সংসারে মা যেন তাদের বোঝা।
একজন মায়ের শ্রেষ্ঠ অর্জন তার সন্তান। সারাজীবনের সমস্ত প্রাপ্তি আর শ্রম দিয়ে মা তার সন্তানদের মানুষ করেন। 
দীপক হঠাৎ পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলে দীপার শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। ছেলেরা জমি জায়গা সব বেচে নিজেরা টাকা ভাগ করে নিয়ে নেয়। 
বৃদ্ধার  বয়স হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পর্যন্ত পারেন না। ছেলেরা নিজের সংসারে মাকে রাখতে চায় না তাই ভিক্ষার ঝুলি হাতে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। একদিন ভিক্ষা করতে গিয়ে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙ্গে যায়। 
ছেলেরা খবর পেলেও কেউ দায়িত্ব নিতে আসে না। 
সেই থেকে শহরে একটি খুপরি ঘরে বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে বেঁচে আছেন। নিঃস্ব, অসহায়, মূক।

একদিন দীপার ইজি বাইক চালক ছেলে রবিন 
মাকে দেখতে এসে তার সাধ্য মত মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টার করে কিন্তু খরচ তার আয়ের সীমার
মধ্যে আবদ্ধ না হওয়ায় দায়িত্ব কিছু এড়িয়ে যায়। তাদের সহায় সম্বলহীন  বৃদ্ধা মা আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী। তার একার পক্ষে মায়ের চিকিৎসার খরচ চালানো খুবই কষ্টসাধ্য। দাদা পুলিশ অফিসার, স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিলাসিতায় থাকে। মায়ের কোন খোঁজ খবর নেয় না।'তবে কি ছেলের প্রতি মায়ের টান এতটাই কম।
মাকে একবারও তার মনে পড়ে না।মায়ের প্রেরণাতেই তো আজ তারা প্রতিষ্ঠিত।ভাগ্য করে
দুই পুত্র সন্তান পেয়েও তাদের মান হুঁশ সমাজের
কলঙ্ক।

পরিহাসের বিষয়, সন্তানদের  প্রতিষ্ঠিত করেও এই মাকে আজ জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে ভিক্ষা করে। বড়ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা,অথচ সেই মাকেই কিনা জীবন বাঁচাতে ঘুরতে হয় মানুষের দ্বারে দ্বারে। দিনে এক বেলাও ঠিকমতো ভাত ভাগ্যে জোটে  না!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন