Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

নিবন্ধ ।। রবীন্দ্রনাথের রাশিয়া ভ্রমণ ।। বিক্রমজিত ঘোষ

রবীন্দ্রনাথের রাশিয়া ভ্রমণ

বিক্রমজিত ঘোষ 


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়া সফরে যান । তাঁর বয়স তখন ৬৯ বছর। অনেকেই তাঁকে এই বয়সে এতদূর ভ্রমণ করতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু কবিগুরু কারোর কথা শোনেননি। সেইসময়ে রাশিয়ার জনসংখ্যা অনেক ছিল। যা দেখে রবীন্দ্রনাথ খুবই অবাক হন। এখানকার সংস্কৃতিকে এখানকার মানুষ অনেক উচাসনে বসিয়েছিলেন। তার সাথে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে উন্নত মনোভাব দেখে তিনি আরও অবাক হন। তাও তিনি এখানকার গতানুগতিক শিক্ষা পদ্ধতিকে সমর্থন করতে পারেননি। রাশিয়ায় হয় তিনি কোনরকম বড়লোক- গরীব লোক পার্থক্য উপলব্ধি করতে পারেননি। সেখানকার মানুষ কেউ অহংকারী ছিলেন না -- এই অনুভূতি কবিগুরুর হয়েছিল। তিনি আপ্লুত হয়েছিলেন। 
           তিনি রাশিয়ার মানুষের আচার- ব্যবহার দেখে মন্তব্য করেন --" মানুষে- মানুষে ব্যবহার কী আশ্চর্য সহজ হয়ে গেছে ।" ১৯৩০ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর রাশিয়ায় পৌঁছবার পর সেখান থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর পরিবারকে চৌদ্দটি চিঠি লেখেন। এই চিঠিগুলো একসাথে করে ১৯৩১ সালে ' রাশিয়ার চিঠি' নামে একটা বই প্রকাশিত হয়।
           ১৯৩০ সালে পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে লেখেন -- " রাশিয়ায় অবশেষে আসা গেল। যা দেখছি আশ্চর্য ঠেকছে। অন্য কোন দেশের মত নয়। একেবারে মূলে প্রভেদ। আগাগোড়া সকল মানুষকেই এরা সমান করে জাগিয়ে তুলেছে। " 
           যখন কবিগুরু মস্কোর আমন্ত্রণে রাশিয়া যান, তখন রাশিয়ার রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা ছিল না। তিনি উপলব্ধি করেন রাশিয়ায় জাতি - ধর্ম বিভেদ বলে কিছু ছিল না। সব মানুষই মালিক আবার সকলেই সকলের প্রভু। সকলেই সকলের আত্মীয়ের মতো। এখানে ঝগড়া- বিবাদ বলে কিছু নেই। একসময় জার শাসিত সাম্রাজ্যে এই রাশিয়ায় কৃষকসংগ্রাম হয়েছিল। ১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন সেখানে যান তখন রাশিয়া অন্য এক দেশ -- শান্ত ও অপূর্ব মানসিকতার এক দেশে পরিণত হয়েছে। কবিগুরু সেখানকার নানাজায়গা ঘুরতে ঘুরতে অনেক কিছু দেখেছেন আর অবাক হয়েছেন। এক জায়গায় তিনি লিখেছেন --" আপাতত রাশিয়ায় এসেছি- না এলে এজন্মের তীর্থদর্শন অত্যন্ত অসমাপ্ত থাকত। "
          রাশিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় কৃষিভবন আছে। কবিগুরু মস্কোতে অবস্থিত কৃষি ভবনটি দেখতে গিয়েছিলেন। এখানকার কৃষকদের হাতে- কলমে চাষাবাদ শেখানো হয় । তার জন্য পরামর্শদাতা ও উপদেশ দেবার লোক নিয়োগ করা আছে। এই দেশে বৈজ্ঞানিক উপায় চাষাবাদ করা হয়। এখানকার মানুষ ' অপচয়' একদম পছন্দ করে না। রাশিয়ার গ্রাম থেকে শহরে এসে কিছুদিন কাটাবার জন্য শহরে বেশ কিছু বাড়ি আছে। থাকা - খাওয়ার খরচ খুব কম। শহরে এক বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি অনেকজনকে একসাথে থাকতে, একসাথে খেতে, একসাথে কাগজ পড়তে দেখেছেন। রাশিয়ায় বিংশ শতকের তিরিশের দশকে বৈজ্ঞানিক উপায় ট্রাক্টর চালিয়ে চাষ হত -- সেদেশে চাষীদের জীবন এবং চাষাবাদ কিভাবে করা হতো তা তিনি নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন। একবার এক রুশ চাষীর মেয়ে রবীন্দ্রনাথকে বলেছিলেন: " শিশুদের দেখাশোনা ও শেখানোর স্বতন্ত্র্য ব্যবস্থা হওয়াতে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি অনেক কমে গেছে । তাছাড়া ছেলেদের সম্বন্ধে দায়িত্ব যে কতখানি বাপ- মা ভালো করে শিখতে পেরেছে। " -- রুশজাতির ত্যাগ করার ক্ষমতা দেখে কবিগুরু অবাক হয়েছিলেন। তাদের অটল দেশপ্রেম ও গভীর আন্তরিকতা তাঁকে অন্য জগতে নিয়ে গিয়েছিল। কবিগুরু বিশ্বের অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু তাঁর জীবনে কয়েকদিনের রাশিয়া ভ্রমণ ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা।

--------------------------:-----------------------------

বিক্রমজিত ঘোষ
৩০/১/১, উমাচরণ ভট্টাচার্য্য লেন,
রামকৃষ্ণপুর, হাওড়া-৭১১১০১.



মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩