google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। জাতীয় পতাকা ।। মিনাক্ষী মন্ডল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১

গল্প ।। জাতীয় পতাকা ।। মিনাক্ষী মন্ডল

 



 
বাস ছাড়বে সকাল সাতটায়, জলপাইগুড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসস্ট্যান্ডে বসে আছি।
     এখনো অপেক্ষা করতে হবে প্রায় দু'ঘণ্টা ।
    এই বাসস্ট্যান্ডে একটা দোকানে খুব ভালো চা বানায় শুনেছি । ভাবলাম, এক কাপ চা খাওয়া যাক।
    কিছু কিছু জায়গায় রাস্তার এমাথা থেকে ওমাথা দেশের পতাকা লাগানো, দু'দিন আগেই স্বাধীনতা দিবস গেছে।
    চায়ের দোকানের মালিক আমাকে চা দিতে দিতে- দু'জন লোকের সাথে ফিসফিস করে আলোচনা করছেন, 'সবাই ঠিক করেছে নাকি আজ রাতেই একটা ব্যবস্থা নেবে, কখন কি করে বসে বলাতো যায় না'।
    কি ব্যাপারে আলোচনা করছেন আমারও জানার একটু আগ্রহ হলো, জিজ্ঞাসা করতেই- চায়ের দোকানের মালিক বলে উঠল, আর বলবেন না- দু তিন দিন ধরে একটা বুড়ো মানুষ এই চত্বরে ঘোরাফেরা করছ। এলাকাবাসীর সন্দেহ তিনি উগ্রপন্থী। তাই ভাবছে আজ রাতের মধ্যেই একটা আইনি ব্যবস্থা নেবে।
    আমার কাপে চা এখনো অবশিষ্ট, হঠাৎ দেখি- কিছু লোক ওদিকটায় ছুটছে, ওদিকটা বলতে থানার দিকটা, বাসস্ট্যান্ডের পাশেই পুলিশ থানা।
    আমিও এক পা দু পা করে এগিয়ে গেলাম।
    এগিয়ে যেতে দেখলাম- একজন বয়স্ক মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় মেইন রাস্তার ওপরে পড়ে আছে, কোন এক গাড়ির ধাক্কায় লোকটির মৃত্যু হয়েছে ।
    মানুষটার এক মাথা চুল ,বড় বড় দাড়ি, কিছুটা দূরে একটা বস্তা পড়ে আছে, সেই বস্তাভর্তি ছোট ছোট ভারতের "জাতীয় পতাকা"।
    ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ব্যক্তি বললেন, মাটিতে পড়ে থাকা পতাকা গুলো, মাথায় ঠেঁকিয়ে বস্তায় ভরছিলে, এমন সময় এক গাড়ির ধাক্কায় মানুষটির জীবনের দীপশিখা চিরদিনের জন্য নিভে যায়।
    কাছে এগিয়ে যেতে দেখি বৃদ্ধের ছেঁড়া জামা ভেদ করে দেখা যাচ্ছে হৃদয়ে লেখা " জয় হিন্দ" বাক্যটি।
    এই এক্সিডেন্ট এর ফলে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ি থেকে অনেক লোক নেমে এসে বৃদ্ধকে দেখছেন ,ওনাদের মধ্যেই কেউ একজন বললেন আরে উনি তো সপ্তগ্রাম এর কানাই বাবু ।
    ভারত স্বাধীনে- পরোক্ষভাবে উনিও যুক্ত ছিলেন তাঁর লেখার মাধ্যমে।
    শেষের দিকে স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল ।
    এলাকাবাসীর চাপা গুঞ্জন আমাদের দ্বারা অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। যে মানুষটি দেশভাবনায় নিজের প্রাণ দিলেন। এমন দেশপ্রেমিকের মূর্তি স্থাপন করে আমরা আমাদের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন