google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re মুক্তগদ্য ।। বেঁচে থাকার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা দেব রায় - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১

মুক্তগদ্য ।। বেঁচে থাকার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা দেব রায়

 


 স্বধীনতা মানে স্ব অধীনতা , অর্থাৎ নিজের অধীনে চলা। স্বাধীনতা বলতে আমি বুঝি নিজের বিবেক আর ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ । আমার কিছু বলতে ইচ্ছে করছে , বলে দিলাম। লিখতে ইচ্ছে করছে , লিখে ফেললাম । কিছু করতে ইচ্ছে হয়েছে তো করলাম । বিবেকের কথা বললাম কারণ সব ইচ্ছাই  কিন্তু শোভন বা দেশ ও দশের পক্ষে উপকারী নাও হতে পারে , তাই স্বাধীনতা মানে অবাধ লাগামহীন আচরণ না , বরং মার্জিত ও রুচিশীল ব্যবহার । 
    বাস্তব অর্থে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি ৭৪ বছর হল । কিন্তু আসলেও কি স্বধীন হতে পেরেছি  ?  দেশের মানুষই যদি নির্ভয়ে চলতে না পারে , তবে কিসের স্বাধীনতা ? অর্জিত স্বাধীনতা খুব মূল্যবান জিনিস । তাই  স্বাধীনতা আমার কাছে আকাশে উড়তে থাকা পাখির মতো । উড়তে দেখলে ভালো লাগে , খাচায় বন্দি রাখলে ঠিক মানায় না । এই অস্থির সময়ে মনে হচ্ছে সেই পাখিটাকে আটকে ফেলার একটা চেষ্টা করা হচ্ছে । যুক্তির মাধ্যমে মুক্তির সুড়ঙ্গের শেষ কিনারায় পৌঁছতে চাওয়া মানুষগুলোকে চুপ করানোর  একটা প্রথা  সবার চোখের সামনেই গড়ে উঠেছে । সবচেয়ে দুঃখের কথা হলো একটা বিরাট সংখ্যক মানুষ  না জেনে , না বুঝেই অন্যদে কথা বলার অধিকারটুকু কেড়ে নিতে  চাচ্ছে । স্বাধীনতা শব্দটির ব্যাপ্তি অনেক ।  আমার কাছে স্বাধীনতা মানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ করতে পারা । চোখের সামনে একজন অসহায় মানুষ দেখলে তার দিকে সাহায্যের হাত কারও অনুমতি ছাড়াই বাড়িয়ে দিতে পারার মধ্যেও আমি স্বাধীনতা খুঁজে পাই । আমার স্বাধীনতার অভিধান জাত- পাতের ভেদাভেদ থেকে মুক্ত । স্বাধীনতা মানে আমি বুঝি সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যাপ্তি । আমার স্বাধীনতা শিশু শ্রমিক চায় না । কাদা মাটি মেখে যে শিশুটি মাঠে খেলছে তার মুখের হাসিতে আমি স্বাধীনতাকে দেখতে পাই । 
     তাই  আমি এমন এক ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখি যেখানে প্রথম স্বাধীনতা থাকবে চিন্তার স্বাধীনতা । স্বপ্নের সেই ভারতবর্ষে যে কেউ যা কিছু ইচ্ছা চিন্তা করতে পারবে , সেটা বলতে পারবে  এবং সেই কথাগুলো বলার কারণে কেউ তাকে আঘাত করবে না ।  যদিও সবসময় ভালো কিছুই হবে এই শর্ত না থাকলেও সেখানে সবসময় ভালো কিছু সৃষ্টি  হওয়ার সম্ভাবনাটা বেঁচে থাকবে । তরুণেরাই  দেশের শক্তি । সেই তরুণদের নিজের মত প্রকাশের সুযোগ করে দিতে হবে । শুধু একটা কথা মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা যেমন জরুরি, তেমন জরুরি স্বাধীনতার মান রক্ষা করা । তাই সকল দেশবাসীর প্রতিজ্ঞা করা উচিত যে, আমাদের স্বাধীনতা যেন অন্যের উপকার ছাড়া ক্ষতির কারণ না হয় । 
    তবে  আমার মতে এই স্বাধীনতা দিবসে সকলে মুক্তি পাক কঠিন রোগের পরাধীনতা থেকে , আবার  সবার জীবনে ফিরে আসুক স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা । আর 'স্বাধীনতা নামের পাখিটি নিঃশঙ্ক চিত্তে ডানা মেলুক সম্ভাবনার আকাশে' ।
 
 =======০০০=======
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন