একটা উত্তাল ঝড় শেষ হতে না হতেই আবার নাকি একটা দুশ্চিন্তার স্রোত আছড়ে পড়বে..!
মাঝে কয়েকমাসের সামান্য সুরাহা কিন্তু প্রায়
থেমে যাওয়া মারণ ঝড়কে টেনে-হিঁচড়ে,
নিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টায় ক্ষমতালোভী,
দেশের দায়ভার ন্যস্ত মাতব্বরেরা শুধু নয় ,
"মানবো না নিয়ম, বয়েই গেছে মাস্ক ব্যবহার করতে",সামাজিক ব্যবধান কে বুড়ো আঙ্গুল
দেখানো অসচেতন মানুষের বিন্দাস ঢল!
তলানীতে চলে যাওয়া দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পুনরায় সবকিছু স্বাভাবিক হওয়াটা জরুরি, কিন্তু জরুরি ছিল কি নিয়ম না মেনে এভাবে কাতারে কাতারে লোক অবাধ্য ভাবে রাস্তায় নামা!
কাজ হারিয়ে নতুন কাজের সন্ধানে বা বজায় রাখতে প্রয়োজন ছিল লোকাল ট্রেন- বাস..,
গণ পরিবহন ব্যবস্থা সেখানেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক যানবাহনের অপ্রতুলতায়, নিরুপায় ভাবে বেড়েছে উপচে পড়া ভিড়,লাগামহীন করোনা'র সংক্রমন কে প্রশয়...!
ডিজিটাল দেশে এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে কাউন্টারে নয় কেবল অনলাইন টিকিট উপলব্ধ, সেখানে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভোট পূজায় কেন
অনলাইন ভোট ব্যবস্থা চালু নয় প্রশ্ন জাগে!
তাহলে অন্তত করোনা বাড়বাড়ন্তে ফুঁসতো না!
উল্টে কি বাস্তব চিত্র দেখেছি আমরা?
কর্তৃপক্ষ,কেবল কাগজ কলমে সচেতন সোচ্চার,
কেবল ভিড় বেড়েছে উপায় সমাধান বের হয়নি,
কেবল সাঁটানো হয়েছে পোস্টার সচেতনতার,
সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলুন আহ্বান কিন্তু কিভাবে!
সে নিয়মে চরম গলদ আর উপেক্ষা নীতি তা বুঝেও চুপ করে অপেক্ষার সংক্রমণ ছোবল!
গৃহবন্দী দশা কাটিয়ে রাস্তাঘাট,বাজার সর্বত্র যেন কতকাল ঘর থেকে বের হইনি
এমন ভাবখানা নিয়ে জনস্রোত,নতুন ভাবে জন্ম লাভের আনন্দ!
পার হলো নানা উৎসবে মাতোয়ারা মানুষের উন্মাদনা,কুম্ভ স্নানে পুণ্য অর্জনের উৎসব, চৈত্র সেল কেনাকাটা গাজন দেখতে ঝাঁপিয়ে পড়া বেপরোয়া কালো মাথার অবিশ্রান্ত স্রোত!
তাতেও এই ভাইরাস না এসে থাকে কি করে!
আসবে না এটা কি আদৌ বিশ্বাস যোগ্য?
গণতন্ত্রের পূজায় শামিল হতে আসা ছোট মাঝারি বড় নেতার একের পর এক প্রচার অভিযান,
ক্ষমতা হস্তান্তর উদ্দেশ্যে শাসক দলকে উৎখাতের
নানা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নীতিনির্ধারণ...
তবু কেন করোনাকে রুখে দেওয়ার মতো হলো না পরিকাঠামো উন্নয়ন! সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত!?
হাজার হাজার অন্যত্র থেকে ডিউটি করতে আসা পুলিশ,ফোর্স আমলা তারা কি ভ্যাকসিন ডোজের বলয়ে সুরক্ষিত ছিল?তবে তারাই ছিল না তো, ভাইরাস ছড়ানোর মূল বাহক!
প্রশ্ন জাগে আর জাগলেই বা কে দেখছে তাদের ওপর কর্তৃপক্ষের ঠিক কতটা চাপ জুটেছে!!
কোভিডের দ্বিতীয় ঝড় আসবেই খবর ছিল, সারাবিশ্বের পরিসংখ্যান তাই বলেছে তবে তা কেন বিদ্রুপ ছলে শুধু উপেক্ষা আর উপেক্ষা??
শুধুই কি ক্ষমতার দম্ভ,ক্ষমতা লাভের প্রহসন!
পরিণতি আজ দফায় দফায় বাড়লো মৃত্যু!
কেন আগাম সর্তকতা ছিল না ঝড় মোকাবিলার?
উত্তর দাও আত্মনির্ভর ভারতবর্ষের রূপকার গণ!
আজ এভাবে কেন দেশের পরিষেবার কঙ্কাল চেহারা দেশ জুড়ে অসহায়তার নজির তুলছে!
কান পেতে শোনো কেবল হাহাকার, আকাল নো বেড, নো টেস্ট কিট,অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে চাওয়ায় ক্রন্দনধ্বনি!!এমন দৃশ্য মৃত্যু মিছিল!!
আত্মনির্ভর ভারতবর্ষের এ কোন বিজ্ঞাপন!?
কেন নিজে থেকে দায়িত্বশীল হবে না রাষ্ট্র নেতা, যতক্ষণ না ভারতবর্ষের আদালত প্রশ্ন করবে এমন অবস্থার সমাধান কই?
ক্ষমতাধর দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ধৃতরাষ্ট্র সম এ কেমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়!!?
আজ মৌন কেন রাজ্যের উর্দ্ধতন অভিভাবক, অথচ সক্রিয় আপনার টুইট কেন আজ নীরব জনতার ভোগান্তির পরেও,তবে কি বিশেষ বিশেষ সময়ে রাষ্ট্রনেতাদের পিঠ চাপড়ে দিতে তা গর্জায়!
সত্যি জানতে ইচ্ছে করে...!!
মানুষ বাঁচলে তবেই না ক্ষমতা...!!
তবেই না উন্নত রাস্তাঘাট চাকরি রেশনের প্রয়োজনীয়তা!
তবে কি এর পেছনেও মরছে মরুক সাধারন জনগন আমরা তো সুরক্ষিত এমন ঘৃণ্য
মানসিকতার অঙ্কুরোদগম!
গতবার ছোট মুখে বড় কথা বলা এক বন্ধু আসল সারমর্ম বলেছিল,কিন্তু বিশ্বাস হয়নি!
তার কথাগুলো মনে পড়ছে," দেশে মুদ্রাস্ফীতি আর্থিক দুরবস্থা চাকরি খোয়ানো তে মানুষগুলো এমনিই মরে যাচ্ছে এবার দ্বিতীয় করোনা ঝড়ে মারণ ছোবলে আরও ফাঁকা হবে জনসংখ্যা চাপ!
পিছু পিছু আসতেই থাকবে প্রথম,দ্বিতীয় তৃতীয় করে একের পর এক ধাক্কা!
সরকারি পরিষেবা,সুযোগ সুবিধা যত মানুষ কমে , তত লাভ রাষ্ট্রের।
কিছু ভাবতে পারিনা আর,ভাবনার যা কিছু সব শূন্য,তলানিতে!
ওই শোনা যায় ফোনের ওপ্রান্তে শ্বাসকষ্ট ওঠা নিকটাত্মীয়র সন্তান আজ ১৬ঘণ্টা ধরে ফোন করে চলেছে নানান সরকারি,বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে,
খবর নেই অক্সিজেন,সামান্য বেড টুকুও..
আছে বেসরকারি নার্সিংহোমের লুট করে নেওয়ার আকর্ষণীয় প্যাকেজ পরিকাঠামো বিহীন ফাঁদ!
তখনও ঘন্টাখানেক শিরোনামে মুহুর্মুহু প্রচারিত হচ্ছে অমুক নেতা রোড শো করতে আসছেন আজ,রাজনৈতিক হানাহানির উত্তাল দৃশ্য।
বস্তা বস্তা ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার হরেক প্রতিশ্রুতির ফাঁপা বুলিতে মন ভিজছে আর কই!
ঘরে ঘরে করোনা দাপটে বেসামাল আম জনতা। আর কি ভাল লাগে নাটক এ মন খারাপের দিনে!
দুর্নীতি গ্রস্থ নেতার নিরাপত্তাব্যবস্থায় আঁটোসাঁটো আর অন্যদিকে অক্সিজেন,চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু, লাশের পর লাশ পোড়ানোর দৃশ্য..! স্বয়ংসম্পূর্ণ আত্মনির্ভর বিজ্ঞাপনের দেশের বিদেশ থেকে ওষুধ সরঞ্জাম আনার বরাত। এতদিনেও যা কিছু উন্নয়ন সব নাকি হবে ভবিষ্যতে এমন প্রতিশ্রুতি আর কতবার বোকা
বানাবে জনগণ কে সত্যি জানি না!!
কেন এমন সংকট মুহূর্তে দায়িত্বশীল নেতার মতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই সকল ভোট বেশ
কয়েক মাস পিছিয়ে সবাই মিলে এখন মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার মন্ত্রে উজ্জীবিত
হওয়ার দৃশ্য দেখব না !
কেন শুনবো এমন মনখারাপ করা ভয়ে সিঁটিয়ে যাওয়া পরিস্থিতিতেও ক্ষমতা দখল করার তৎপরতা,
সব কিছুর তো একটা নির্দিষ্ট সময় আছে ,
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে গাল ভরা আশ্বাসবাণী আর বাস্তবের মাটিতে ন্যুনতম পরিষেবা না পাওয়া কি করে দুই ভিন্ন রূপের মধ্যে বিশ্বাস নামক শব্দ
ভরসায় সামঞ্জস্য আনা হবে!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন