১ ) ভালোবাসা
ভালোবাসা একটা অনুভূতি
যা মনের সাথে মনের একটা টান,
ভালোবাসা সুখের একটা স্বপ্ন
কিম্বা বুকে লেখা কারু প্রিয় নাম।
ভালোবাসা যেন একটা উড়ন্ত প্রজাপতি
সুদূর থেকে দেয় শুধু হাতছানি,
দিবানিশি তার জন্য শুধু ছটফটানি
কিম্বা হঠাৎ আকাশের বুকে দুফোঁটা পানি।
ভালোবাসা হচ্ছে মনের মধ্যে লুকানো একটা স্বপ্ন
যা একজন লেখকের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির মত,
কেউ লাইফে প্রকাশ করতে পারে কেউবা পারে না
সবাই শুধু অনুভাব করতে পারে একান্ত।
২) সলিড ভালোবাসা
মনে মনে পুষেছি
ছোট্ট একটা আশা,
বুকের ভিতর জমা আসে
সলিড ভালোবাসা।
বাহির থেকে যায় না দেখা
অন্তরের সেই ব্যথা,
বুঝতে পারবে সেদিন তুমি,
যেদিন রাখবে আমার বুকে মাথা।
সেখানে,চোখ বুজিলেই দেখতে পাবে
তোমার নাম রংতুলিতে লেখা,
কেউ যুগযুগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে স্বপ্নের দেশে
তোমারই প্রতীক্ষায় একা।
চোখ খুললেই দেখবে তুমি,তোমার মুখেও
থাকবে না আর বলার কোন ভাষা,
জানি আমি, তোমার মনেও লুকিয়ে আছে
সলিড ভালোবাসা।
৩) মাধুরী
তোমার মুখটি দেখেছি আমি
এক জোছনা মুখোরীত উজ্জ্বল নোভাতে,
তুমি হাতে হাত রেখেছিলে স্বপ্নে
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল চমকে প্রভাতে।
পাখির কলকালরির মতো তোমার কণ্ঠধ্বনি
শুধু এসে দু'কানে পড়ে,
আমি উঠিউঠি ভেবেও উঠতে পারি না
দু'চোখে শুধু দুষ্টুকল্পনা ঘোরে ফিরে।
অবশেষে তুমি একাকী পালিয়ে গেলে
দিনের আলোয় লজ্জা পেয়ে,
তোমার দীঘলকালো চুলগুলো পড়ছিলো
আমার চোখে মুখের পর চেয়ে চেয়ে ।
ও যেনো ছিলো এক নীলকণ্ঠ পাখি
খিলখিল করে হেসে চলে গেল মাধুরী,
মুখ তার চাঁদের মতো শিল্পীর আঁকা ছবি
ইচ্ছে করে ভলোবাসার সুতোয় ধরি।
৪) প্রেমের অভিষেক
সেদিন ফাগুনের চিকিমিকি রৌদ্রে হঠাৎ তুমি
চেয়ে চেয়ে আমার হাতটি ধরে বলেছিলে,
ঐদেখো আকাশের বুকে অপরূপ রংধনু উঠেছে
পিছনে বাগানে রকমারি ফুল ফুটেছে হেসেখেলে।
জানো ওদের না আছে বাবা মার ভয়,
কিম্বা না আছে কলঙ্কের ভয়।
তখন হয়তো বা তোমার কথাগুলো ঠিক বুঝতে পারিনি
হঠাৎ যেন এক নতুন পৃথিবী কেঁপে উঠেছিলো আজানা ভূমিকম্পে,
আমাদের দুজনার খুব তৃষ্ণা পাচ্ছিল অতৃপ্ত আকাঙক্ষায়
মিষ্টি একটা গন্ধ পাচ্ছিলাম দুজনে পাশাপাশি বসে ক্যাম্পে।
আমাদের মধ্যে কোন দৌরাত্ব ছিলো না,
কিম্বা খুব একটা দূরত্বও ছিলো না।
দুর্বোধ্য ভাবনাগুলো তখনও অন্ধকারে হামাগুরি খাচ্ছিল
পাতার ফাঁকে লুকিয়ে লুকিয়ে গাইছিল বুলবুল,
সুদূর থেকে ভেসে আসচ্ছিল রবীন্দ্র সঙ্গীতের মিলনের সুর
ভ্রমর আর প্রজাপতি ফুলের পাপড়ির উপর করচ্ছিল ছুলবুল।
আমি তোমার দু পায়ের নূপুরের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম,
অবশেষে আমি তোমার দুষ্টু চাহনী বুঝতে পেরেছিলাম।
৫) শুধু তোমাকে চাই
তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে চাই,
শয়নে স্বপনে জাগরণে শুধু তোমাকে চাই,
সুখে-দুখে জীবনে-মরণে শুধু তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।
সবুজ মাঠে তোমাকে চাই,
সোনালী বিকালে তোমাকে চাই,
খোলা আকাশে তোমাকে চাই,
মুক্ত বাতাসে তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।
জোছনা ভরা আকাশে তোমাকে চাই,
ফুল ভরা বাগানে তোমাকে চাই,
ঝিকিমিকি রৌদ্রে তোমাকে চাই,
চাঁদনী রাতে তোমাকে চাই,
শুধু তোমাকে চাই,শুধু তোমাকে পাশে চাই।
নদী যেমন করে মোহনা চায়,
মেঘ যেমন করে নীড় চায়,
চাঁদ যেমন করে চাঁদনীকে চায়,
দিন যেমন করে রাত্রিকে চায়,
আমিও ঠিক তেমনি করে শুধু তোমাকে চাই,
এ জীবনে শুধু তোমাকে পাশে চাই।
৬) প্রেমের অগ্নিবৃষ্টি
যে সুখ পাখিটি আমার মনের খাঁচায় বাসা বেঁধেছিলো
তাকে মুক্ত দিলাম সব মায়ার বাঁধন থেকে মুক্ত আকাশে,
জোর করে বেঁধে রেখে লাভ কী?সে ঠিক মতো আর খায় না
আগের মতো আর মন খুলে আমার সাথো কথা বলে না
শুধু যেতে চায় অন্য দেশে।
যে যেতে চায় তাকে আটকে রাখা বড্ড দায় মনের খাঁচায়
ভালোবাসা কী?এতই সস্তা যে লিখে ভরে রাখা যায় ডাইরির খাতা,
হৃদয় ডাইরির পাতায় যদি থাকে সত্যিকারের ভালোবাসা আঁকা
সেখান থেকে মুছে ফেলা যায় না স্মৃতির পাতা।
সারাটি জীবন সহিতে হয় অন্তর জ্বালা বিষের ব্যাথা
যদি অতি আপন জন দেয় ধোঁকা,
অবহেলা অপমানে অন্তর জমিন পুড়ে পুড়ে ছাই হয়
সেটা তুমি বুঝলে না রেখা।
হাজার শখের পোষা পাখি যদি কেউ ছেড়ে দেয়
শুধু সেই জানে তার নিথর মন কত কথা কয়,
পাষাণ বাঁধে বুকের মাঝে অশ্রুর সাগর বয়
নিজেকে আগ্নেয়গিরির মতো জ্বালাই পোড়ায়।
৭) স্মৃতিচারণ
একটা প্রেমের কবিতা লিখেছিলাম
কোন এক বসন্তের দিনে উতলা যৌবনে,
হরেক রমক ফুল ফুটেছিলো গহীন অরণ্যে রঙেবঙ্গে
প্রজাপতি মেলেছিলো ডানা তুমি এসেছিলে আমার জীবনে।
বনে বনে কোকিল ডেকেছিলো মনে মনে
কখন যে একরাশ আনন্দ আর হাসি খুশি বার্তা নিয়ে,
যেন জোছনা রাতে বাঁকাচাঁদ উঠেছিলো হেসে দূরদিগন্তের দেশে
তুমি মনের অজান্তে আকাশের বুকে গিয়েছিলে হারিয়ে।
আবেগের তাড়নায় তুমি বলেছিলে বারবার আমার কবিতা হবে
তখন তাকিয়ে দেখি তোমার আঁখিতে ফুটেছে বসন্তের ফুল,
হলুদ রঙের শাড়িতে পড়েছো কানে সোনার দুল
অসংখ্য সবুজ পাতার ফাঁকে সোনা বন্ধুর গান ধরেছে বুলবুল।
সেদিন আমি করেছিলাম ভুল ভ্রোমরেরা কত না ব্যাকুল
চতুর্দিকে গুনগুন এসেছে ফাগুন তখন ছিলো কত না মধুর ক্ষণ,
আজ তুমি নেই হারিয়ে গেছো জীবন স্রোতের নদী রয়ে একাকী
আর আমি একলা বসে আজো করছি তোমার স্মৃতিচারণ
৮) প্রথম প্রেমের স্মৃতি
তোমাকে যত ভুলে যেতে চাই
ততো বেশি মনে পড়ে স্মৃতি,
আঁধারে জ্বলে ধিকধিক করে
জ্বলন্ত মোমের বাতি।
গলেগলে শেষ হয় সেই জ্বলন্ত প্রদীপ
তবু বুকে থাকে অবশিষ্ট অঞ্জলি,
সাদা কাপড়ে যেমন ওঠেনা
বারবার ধুয়েও রঙের কালি।
শতাব্দীর পর শতাব্দী আমি শতরূপে শতবার
গেঁথেছি প্রেমে নিত্যনতুন ফুলের মালা,
তবু মনে পড়ে তোমার কথা
নিশিতরাতে একলা বালা।
ঋতুর পর ঋতু যায়
জোযার ভাটা পথ হারায়,
তবু বসন্ত এসে মন রাঙায়
এখনো সেই কোকিল ঘুমভাঙ্গায়।
----------------------
নামঃ বিচিত্র কুমার
গ্রামঃ খিহালী পশ্চিম পাড়া
পোস্টঃ আলতাফনগর
থানাঃ দুপচাঁচিয়া
জেলাঃ বগুড়া
দেশঃ বাংলাদেশ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন