১/
মুজিব মানে স্বাধীন বাংলার হাসি
মেশকাতুন নাহার
মুজিব মানে যুদ্ধক্ষেত্রে ছিনিয়ে আনা জয়,
মুজিব মানে লড়াকু সৈনিক নেই যার কোনো ভয়।
মুজিব মানে নিপীড়ন থেকে মানুষের হয় মুক্তি,
মুজিব মানে পরাধীন থেকে স্বাধীনতার অধিভুক্তি।
মুজিব মানে সাতই মার্চের ঐতিহাসিক এক ভাষণ,
মুজিব মানেই বিলুপ্ত হওয়া পাকিস্তানি শাসন।
মুজিব মানে চিন্তা চেতনায় অসাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া,
মুজিব মানে হিন্দু মুসলিম জয় বাংলার গান গাওয়া।
মুজিব মানে রক্তে কেনা এই বাংলার মাটি,
মুজিব মানে দেশের প্রতি ভালোবাসা খাঁটি।
মুজিব মানে লাল সবুজের একটা পতাকা আঁকা,
মুজিব মানে মুক্ত আকাশে মায়ের কোলে থাকা।
মুজিব মানে অধিকার আদায়ে মুক্তিযুদ্ধ করা,
মুজিব মানে বৈষম্যহীন একটা সমাজ গড়া।
মুজিব মানে গর্জে ওঠা একটা প্রলয় বাঁশি,
মুজিব মানে স্বাধীন বাংলার একটু স্বচ্ছ হাসি।
২
ভাঙা মন
মেশকাতুন নাহার
মাগো শুনো বলি আমি পীড়ায় কাটে রাত,
কেন দিলে পরের ঘরে খেতে চারটে ভাত?
কথায় কথায় খোঁচা মারে দেয় না কভু দাম,
ঘরে বাইরে কাজ করেও তবুও নেই যে নাম।
স্বার্থপর যে মানুষগুলো নিজের লাভটা চায়,
উপোস রেখে শাস্তি দিয়ে খুবই মজা পায়।
কৌতুক করে যৌতুক খুঁজে নেই তো মুখে লাজ,
কৌশল করে উশুল তুলে বড়োই ফন্দিবাজ।
চোখের জলে বালিশ ভিজে ব্যথায় ভরা বুক,
টাকা, গয়না দিলে সবই তবু দেয় না সুখ।
জ্বলে পুড়ে অত্যাচারে ভেঙে গেছে মন,
খুশি হতো আরও দিতেম লক্ষ কোটির পণ।
সাধুবেশী বহুরূপী অন্তর তাদের ছল,
রক্তধারায় ময়লাযুক্ত ড্রেনের পচা জল।
কি করে যে বুঝাই মাগো কেমন তাদের লোভ?
ধৈর্য ধরে মেনে আছি রোধ করে যে ক্ষোভ।
এমন চিত্র ঘরে ঘরে বলার নেই যে শেষ,
আর কতকাল চলবে এরূপ নিষ্ঠুর প্রথার রেষ?
কেমন করে জাগবে মাগো এসব কীটের বোধ?
কত যুগ পার হলে বলো যৌতুক হবে রোধ?
৩
সোনালি দিনের অন্বেষণে
মেশকাতুন নাহার
শ্যামল গাঁয়ের একটি কিশোর
ঘুরতো পথে-ঘাটে,
দস্যিপনা প্রকৃতি তাঁর
আর একটু খ্যাপাটে।
ঘরে তাঁর যে মন বসতো না
চড়তো গাছের ডালে,
মাছ ধরেছে দল বেঁধে সব
কাদা মেখে খালে।
প্রভাত হতে সন্ধ্যে নাগাদ
নেশা ছিল খেলা,
ফুল পাখি আর ধানের ক্ষেতে
কাটতো সারা বেলা।
লেখাপড়ায় ফাঁকি দিয়ে
নদীর ধারে ঘুরে,
আনমনে যে বাজায় বাঁশি
নিজস্ব এক সুরে।
সেই ছেলেটি বড় হয়ে
শহরে কাজ করে,
প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে
নির্বাক ধুঁকে মরে।
রণক্ষেত্রে লড়াই করে
হয়েছে খুব নামি,
অর্থবিত্ত প্রতিপত্তি
গাড়ি হলো দামি।
কোথায় গেলো সোনালি দিন
অতীতে যায় দৃষ্টি,
নির্জীব শরীর ক্লান্ত হয়ে
ঝরে নীরব বৃষ্টি।
==============
মেশকাতুন নাহার
প্রভাষক সমাজকর্ম
কচুয়া, চাঁদপুর।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন