Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

মুক্তগদ্য ।। অগ্নিকন্যা ।। সুচন্দ্রা বসু


অগ্নিকন্যা

সুচন্দ্রা বসু 



  দুধ আনতে বেরিয়েছিলাম সকালে। শুনলাম আজ স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর উপলক্ষ্যে স্বদেশী গান বাজছে মাইকে। তা ছাপিয়ে এক অদৃশ্য স্বর এসে কানে ধাক্কা দিল।
শুনলাম গান্ধীজী যেন কাকে ডেকে বললেন, কোথায় গেলি কমলা? লবণ আন্দোলনে আমার সঙ্গে ছিলি তোকে কি ভুলতে পারি?

তাকিয়ে দেখলাম নেতাজীও গান্ধীর পেছনে চলেছেন ।

দেশবাসী জানে ব্রিটিশ পরাধীনতার শিকল ভাঙতে তোমার নেতৃত্বে, 'আইন অমান্য' ও 'অসহযোগ আন্দোলন'- 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের ঢেউ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে।

কথাগুলো কানে যেতে মুখ ঘুরিয়ে গান্ধী বিস্মিত, সুভাষ তুমি? 

আপনাকেই খুঁজছি বাপু। 
জানতে চাইছিলাম 
যেসব সংগ্রামী জনগণ দেশের স্বাধীনতার
জন্য প্রাণ দিল, যাদের তাজা রক্তে
ভারত স্বাধীন হয়েছে,তাদের কথা কি মানুষ  মনে রেখেছে?  এইদিনে কমলাকেও শ্রদ্ধা জানানোর কথা দেশবাসীকে বলতেই তো রেড রোডের দিকে যাচ্ছিলাম।


 বাবা সরকারি আমলা হলেও,মা গিরিজাবাই  ছিলেন  স্বাধীনচেতা মহিলা। মায়ের আদর্শে কমলা
উদ্বুদ্ধ ।  বাড়িতে আনাগোনা ছিল মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, গোপাল কৃষ্ণ গোখলে, অ্যানি বেসান্ত, রামাবাই রানাডের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। 

তাদের প্রভাব যাতে মেয়েটির  উপর না পরে তাই 
১৪ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তার।  দু'বছরের মধ্যেই স্বামী মারা যাওয়ায় পড়াশোনাই  হয়ে ওঠে তার ধ্যান জ্ঞান। 

আপনি কি মেয়েদের স্বাধীনতা দিতেন বাপু ? 
নিজের স্ত্রীকে ঘর বন্দী করে রাখতেন।

 স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজিনী নাইডুর ছোটো ভাই ছিলেন হরিন্দ্রনাথ।তার সঙ্গে পরিচয় হয় চেন্নাইয়ের কুইন মেরি কলেজে পড়ার সময়। তিনি ছিলেন কবি-নাট্যকার।  সমাজের বাধা, প্রতিবন্ধকতা  অমান্য করে বিয়ে করেন তাঁরা। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে লন্ডন পাড়ি দিল কমলা। 
সেখানে পড়াশোনা করতে গিয়ে দেখলেন 
 নাটক, হস্তশিল্প, ভারতীয় পণ্য তৈরি  সবকিছুর মধ্য দিয়ে মহিলাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা যায়। এ কথা যখন আপনি জানতে পারলেন বাপু, তখন কমলাকে
১৯২৩ এ অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন। 

 স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে কমলা ১৯২৬ সালে তৈরি করলেন অল-ইন্ডিয়া উইমেনস কনফারেন্স।
সে মেয়ে আজ বিস্মৃতির অতলে ।

 কমলাই প্রথম মহিলা যে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন।  ১৯৩০ সালে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ঢুকে দেশীয় লবণ বিক্রির অভিযোগে প্রথম গ্রেফতার হয়েছিল ব্রিটিশের হাতে কমলা । তাই না বাপু?

ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি, সেন্ট্রাল কটেজ ইন্ডাস্ট্রিস এম্পোরিয়াম, ক্রাফ্টস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া তারই ভাবনাকে পাথেয় করে এগিয়ে চলেছে আজও । ১৯৭৪ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশিপ পেয়েছিলেন তিনি । 

ভারত সরকারের তরফ থেকে  ১৯৫৫ সালে পদ্মভূষণ ও ১৯৮৭ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।  তাছাড়া তিনি ১৯৬৬ সালে রামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং  ১৯৭৪ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন কমলা চট্টোপাধ্যায়।

সমাজ সংস্কারক হিসেবে  এই অগ্নিকন্যা দেশের স্বাধীনতার জন্য যেমন লড়েছিলেন , এই 'অভাগা দেশের' নারীদের স্বনির্ভর করে তুলতে তার অবদান অনস্বীকার্য।
স্বাধীনতা ৭৫ বছর পূর্তির আবহে তাঁর মতো এক নারীর কথা মনে রেখেছে কয়জন ?খুব দুঃখ হয়।
১৯৮৮ সালের ২৯ অক্টোবর তাঁর প্রয়াণ ঘটে।

সময় আর বেশি দেরি নেই পতাকা উত্তোলন দেখে
দেশকে স্যালুট জানিয়ে আসি।

দর্শক শূন্য রেডরোডে গিয়ে লাভ নেই।  ফিরে যাই।দেশ কি আদৌ স্বাধীন হয়েছে বাপু?

এই স্বাধীনতা আমি চাইনি। চেয়েছিলাম অহিংস সমাজ গড়ে উঠুক, কিন্তু এখন কেবল হিংসা ও বিদ্বেষ।বলেই অদৃশ্য দুজনে।

চোখ মেলে দেখি  দুধের ক্যান হাতে নিয়ে মেয়ে ডাকছে আমাকে। বলছে আজ অনেক দেরি হয়ে গেল মা বলছে আর বোধহয়  দুধ পাবে না। চোখ কচলে উঠে দেখি বেলা হয়ে গেছে।  শুনতে পেলাম মাইকে বাজছে,
' ও আমার দেশের মাটি তোমার পায়ে ঠেকাই মাথা '

=====০০০=====


সুচন্দ্রা বসু


মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩