google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re আমরা পেয়েছি কি প্রকৃত স্বাধীনতা? // পাভেল আমান - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩

আমরা পেয়েছি কি প্রকৃত স্বাধীনতা? // পাভেল আমান

আমরা পেয়েছি কি প্রকৃত স্বাধীনতা?

পাভেল আমান


২০০ বছরের পরাধীনতা দাসত্ব শৃংখল থেকে মুক্তি দেশমাতৃকার সম্মান সর্বোপরি ভারত মাতার সন্তানদের জন্মগত অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতা অর্জনে কত শহীদ বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশ প্রেমিকের তরতাজা জীবনের  বিসর্জন হয়েছে। তাদের চোখে একটি স্বপ্ন ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে ভারত বর্ষকে যেকোনো মূল্যে স্বাধীন করা। কারণ একমাত্র স্বাধীনতার মধ্যে দিয়েই যে কোন দেশ জাতি রাষ্ট্রের প্রকৃত উত্তরণ ঘটে থাকে। স্বাধীনতায় এনে দিতে পারে বেঁচে থাকার প্রাসঙ্গিকতা। স্বাধীনতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামী প্রজন্মের অগণিত প্রত্যাশা বিবিধ চাওয়া পাওয়া এবং দেশ জাতি সমাজ গড়ার যথার্থ রুপরেখা। স্বাধীনতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে সাম্য সাংহতি সম্প্রীতি। সেদিক থেকে প্রত্যেকের কাছেই স্বাধীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। আরেকভাবে বলতে গেলে স্বাধীনতা মানে দেশের মাটি ফিরে পাওয়ার লড়াই। যুদ্ধ, আন্দোলন আর নিজেদের স্বতন্ত্রতা বাঁচিয়ে রাখার অক্লান্ত চেষ্টা। ব্রিটিশ বন্দিদশা থেকে ভারতবর্ষের মুক্তির স্বপ্ন, আকাঙ্খা আর চাহিদায় দিন গুনেছিলেন প্রতিটা মানুষ। অন্যায় অত্যাচার, সহস্র প্রাণের বলিদানের শেষ দিন ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট। শহিদের রক্ত বিফলে না যাওয়ার সেই ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্পর্ধায় হাজার অপমানের পর নিজের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার সেই ভারতবর্ষ আজও সমান মহিমায় উদ্ভাসিত। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস আসে আমরা শহীদ বেদীতে মাল্য দিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রামী বিপ্লবীদের সম্পর্কে বড় বড় গালভরা নীতি-আদর্শের কথা বলতে থাকি। আমরা স্বাধীনতা দিবস মানে শুধুমাত্র বীর শহীদদের আত্মত্যাগের স্মৃতিকে রোমন্থন করি স্মরণ করি। অবশ্যই স্বাধীনতা দিবসে তাদের জীবন দর্শন আলোচিত হবে পাশাপাশি তাদের  জীবন দর্শন আমাদের পথ চলার পথে হয়ে উঠুক। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপনের মধ্যে দিয়ে আমরা চারিদিকে ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকার উত্তোলন দেখেছি। একটি কথা বারে বারেমননকে স্বাধীনতা মানে কি শুধুই জাতীয় পতাকা উত্তোলন বীর শহীদ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ। স্বাধীনতা মানে একে অপরের সাথে বন্ধুত্ব সংহতি ভাতৃত্ব। স্বাধীনতা মানে প্রত্যেক ভারতীয় আবারো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে একাকার হয়ে যাওয়া। সমস্ত পরিচয় ফেলে আবারও ভারতীয় হয়ে যাওয়া।স্বাধীনতা মানে শোষণ  বৈষম্য বিভাজন ভেদাভেদ চূর্ণ করা। 

৭৬ বছর পেরিয়ে এসেও এখনো প্রত্যেক ভারতীয় বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারগুলো অর্জন করতে পারেনি। এখনো সমাজ জুড়ে নিদারুল অসাম্য অস্থিরতা। পিছিয়ে পড়া জনজাতি সংখ্যালঘুরা এখনো আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষমতাসীন শাসক ভেঙে দিচ্ছে ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো। ভারতের বহুত্ব বৈচিত্র সম্প্রীতি সৌহার্দ্য আজ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবাষ্পে জর্জরিত। ধর্মের জিকির তুলে চলছে অধার্মের লীলা খেলা। সব ক্ষেত্রেই শাসকের চোখ রাঙানি। এই স্বাধীনতা আমাদের আকাঙ্ক্ষিত নয়। স্বাধীনতা ধনী-গরিব বৈষম্যকে আরো বেশি প্রকট করে তুলছে স্বাধীনতা ধর্মীয় বিভাজনকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিচ্ছে সব ক্ষেত্রেই শাসকের অঙ্গুলি হেলোনে। আপামর ভারতীয়রা চেয়েছিল নিরাপত্তা শান্তি ন্যূনতম অধিকারগুলো নিয়ে মানুষ হয়ে ভারতীয় পরিচয় বেঁচে থাকতে। প্রতিনিয়ত কর্পূরের মত উবে যাচ্ছে মূল্যবোধ নীতি নৈতিকতা । ভাবলে অবাক লাগে স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবীদের বুকের রক্ত ঝরে সে স্বাধীনতা আজ যেন পথভ্রষ্ট দেশ চালকের স্বেচ্ছাচারিতায়। আজকে চারিদিকে ধর্ম নিয়ে মানুষের অশান্তি অসহিষ্ণুতা অস্থিরতার বাতাবরণ। আজন্ম কালব্যাপী গড়ে ওঠা সম্প্রীতির আদর্শ আজ বিলুপ্তপ্রায়। মানুষ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হয়ে উঠেছে শত্রু। মনুষ্যত্ব বিবেক চেতন সব যেন ঠান্ডা করে । বড় কষ্ট হয় যখন স্বাধীনতার দিবসে ম্যারাপ বেঁধে মঞ্চের উপর মাইক্রোফোনের সামনে নেতা-মন্ত্রীরা আগুন ছাড়া বক্তব্য দেন দেশাত্মবোধের বন্দনাতে। এখন প্রশ্ন আমরা কতদিন স্বাধীন হয়েও এক অসহিষ্ণু পরিবেশে পরাধীনতার কষ্ট সহ্য করব। সময় এসেছে প্রতিটি ভারতীয়র বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আদর্শ জীবন দর্শনকে প্রাত্যহিক চলার পথে স্মরণ করে নিজেদের বিবেক চেতন অনুভূতিকে জাগ্রত করে মনুষ্য চেতনায় স্থান দিয়ে প্রকৃত মানুষ হয়ে নিজের অধিকার অর্জনে সচেতন হওয়া। সেখানেই স্বাধীনতার যথার্থ কার্যকরিতা এবং প্রকৃত নাগরিক হয়ে ওঠার সহজ পাঠ। ভুলে গেলে চলবে না আমরা যদি ঘুমিয়ে থাকি  রাজনৈতিকভাবে সচেতন না হই তাহলে ভারতবর্ষ  উত্তরণের পথে এগোতে পারবে না। আমাদের সার্বিক সচেতনতা গণতান্ত্রিক চেতনা মূল্যবোধ এবং সদর্থক গঠনমূলক চিন্তাভাবনার বাস্তবতায় দেশ গঠনের চাবিকাঠি। স্বাধীনতার প্রসার প্রয়োগ গ্রহণযোগ্যতা প্রতিটি মানুষের কাছেই আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক। ৭৭তম আমরা সকলে শপথ নেই এক সুন্দর ভারত বর্ষ গড়ার যেখানে আমরা সবাই মিলেমিশে একাকার।  আমাদের একটি পরিচয় আমরা মনে প্রানে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভারতীয় ভারত মাতার প্রতি নিবেদিত প্রাণ। পরিশেষে কবিগুরুর কথায়-" জনগণমন-অধিনায়ক ভারত ভাগ্যবিধাতা"। 

==============================

পাভেল আমান- হরিহরপাড়া -মুর্শিদাবাদ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন