Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

অণুগল্প ।। ভূতের থাপ্পর ।। শংকর ব্রহ্ম


ভূতের থাপ্পর

শংকর ব্রহ্ম



               নিঝুম সন্ধ্যায় নিরালায় এসে বসেছি ছাদের চিলেকোঠার ঘরে, একটা ভূতের গল্প লিখব বলে। চিলে-কোঠায় দরজা জানলা বন্ধ করে দিয়েছি। কাগজ নিয়ে, কলম খুলে লিখতে বসেছি। 

                 পরিবেশটাকে ভৌতিক করে তোলার জন্য, লেখার আগে মনে মনে ভূতের কল্পনা করছি, ভূতের আকৃতি ভাবছি। প্রকৃতি ভাবছি। চাল-চলন, তার হাব-ভাব, আর ভয় দেখাবার ভঙ্গি নিয়ে ভাবছি। মানে তার অঙ্গ-ভঙ্গীর কথা ভাবছি। আর তার উপস্থিতি এই ঘরের মধ্যে মনে মনে কল্পনা করছি। গল্পটা লেখার আগে, গায়ে কাঁটা-দেওয়া একটা শিরশিরানি ভাব আনতে চাইছি মনে। কিন্তু ভূতের গল্প লিখতে বসে স্বচক্ষে ভূত দেখব, তা কখনও আশা করিনি। স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।

                 এমন সময় মনে হল কে যেন জানলায় টোকা মারছে। ভাবলাম ভুল শুনেছি। একটু পরে আবার মনে হলো, সত্যিই এবার কেউ জানলায় টোকা মারছে। জমিয়ে লিখতে বসেছি। তাই আর উঠতে ইচ্ছে করছে না। আবার টোকা পড়ল জানলায় । এবার অনিচ্ছায় উঠতে যাব ভাবছি। 

             সেইসময় আচমকাই লাইটটা হঠাৎ নিভে গেল। দরজাটা খুলে গেল একা একাই।

              দরজা দিয়ে কে একজন এসে ঢুকলো আমার চিলে-কোঠার ঘরের ভিতর। কে এলো, কিছুই দেখতে পারছি না, ঘুরঘুট্টি অন্ধকার ঘরটা ।

               সে নাকি সুরে খ্যানখ্যানে গলায় বলল, ব্যাঁটা লেঁখক, আঁমাদের নিঁয়ে গঁল্প লিঁখবি? কিঁ জাঁনিস তুঁই আঁমাদের সঁম্পর্কে ?

আমি আমতা আমতা করছি ভয়ে , মানে... 

- মাঁনে কিঁ, বঁলবি তোঁ ,আঁমরা হিংঁস্র, মাঁনুষের ঘাঁড় মঁটকে রঁক্ত খাঁই, নাঁকি সুঁরে কঁথা বঁলি - এঁইসব তোঁ?

              আমি কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে বললাম, তাই তো জানি। লোকে তাই বলে।

             সজোরে এক থাপ্পর পড়ল আমার গালে।

- আঁমাদের নিঁয়ে মিঁথ্যের বেঁসাতি। আঁমরা মাঁনুষের ঘাঁড় মঁটকে রঁক্ত খাঁই? নাঁকি, তোঁরা নিঁজেরাই নিঁজেদের ঘাঁড় মঁটকে রঁক্ত খেঁয়ে, আঁমাদের নাঁমে চাঁলাস? 

- তবে, লোকে যে বলে?

- লোঁকে আঁমাদের নাঁমে দোঁষ চাঁপিয়ে নিঁজেদের অঁপরাধ আঁড়াল কঁরে রাঁখে।

- তা কি করে হবে?

- হ্যাঁ তাঁই হঁয়। আঁর এঁকটা মিঁথ্যে বঁললে আঁমাদের নাঁমে, মাঁরব আঁর এঁক থাঁপ্পর। ঘাঁড় মঁটকে দেঁবো তোঁর।

          এক থাপ্পরেই গালটা জ্বলছে, আর একটা

থাপ্পর খাওয়ার কোন ইচ্ছেই নেই আমার মনে। তাই আমি চুপ করে রইলাম। তারপর ঘাড় মটকে দিলে তো আর কথা নেই।


          হঠাৎ আলোটা জ্বলে উঠল, দেখলাম ঘরে কেউ কোথাও নেই, শুধু দরজাটা হাট করে খোলা।

         এরপর আর ভূতের গল্প লেখার সাহস হয়নি আমার। ভয়ে ভয়ে নীচে নেমে এসে দেখি, গিন্নি ছোট ছেলেকে ভূতের গল্প বলে ঘুম পারাবার চেষ্টা করছে।

          আমি বললাম, চুপ কর,  চুপ কর ,ছাদে ভূত আছে, শুনতে পাবে।

          ছাদে ধুপ ধুপ করে, কারও চলাফেরা করার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। গিন্নি তা শুনে ভূতের গল্পটাকে - গভীর গহন নির্জন অরণ্যে শিয়াল আর কুমিরের গল্পে বদল করে ফেললো, কায়দা করে।

         ছেলে ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে।

তারপর গিন্নি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার গালে ওটা কিসের দাগ গো?

আমি তাকে তখন সব কথা খুলে বললাম।

ছাদে ততক্ষণে ভূতের দাপাদাপি কিছুটা কমেছে বলে মনে হলো আমার।

         ভূতের উপদ্রপের কারণে, আমার আর ভূতের গল্পটা লেখা হলো না এবার ।


----------------------------------


SANKAR BRAHMA.
8/1, ASHUTOSH PALLY,
P.O. - GARIA,
Kolkata - 700 084.

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত