google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। বীরাঙ্গনা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

গল্প ।। বীরাঙ্গনা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

বীরাঙ্গনা 

মানস কুমার সেনগুপ্ত

বাংলা তখনও ভাগ হয়নি। অবিভক্ত বাংলার পূর্ব বঙ্গের এক কিশোরী কন্যা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ফরিদপুরের কোটালীপাড়া পিঞ্জরি গ্রামের আনন্দমোহন এর সঙ্গে। আনন্দমোহনের প্রথম স্ত্রী তিনটি নাবালক সন্তান রেখে এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নির্মলা আগলে রাখতে শুরু করলেন মাতৃহারা তিনটি নাবালক সন্তানকে। দিন যায়, তিনটি সন্তান সাবালক হলেন। তিনটি সন্তানের বিবাহোত্তর পারিবারিক জীবন শুরু হতেই আনন্দমোহনও দেহ রাখলেন। নির্মলা তিনটি সন্তানের পরিবারের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করলেন। বজ্রকঠিন আঘাতে মেনে নিলেন বড় পুত্রের অকাল মৃত্যু এবং পুত্রবধূর অকাল বৈধব্য। বড় পুত্রের সন্তানাদি ছিল না। মেজ ও ছোট পুত্রের পরিবার বড় হতে লাগলো নির্মলার অনুশাসনে। এরপর দেশভাগ। ছিন্নমূল পুরো পরিবার এপারে এসে এক উদ্বাস্তু কলোনিতে আশ্রয় পেল। এপারে এসে অল্প বয়সে এক কন্যা এবং স্ত্রীকে রেখে দেহ রাখলেন নির্মলার ছোট পুত্র। সব শোক সামলে নিয়ে নির্মলা নিরন্তর সংসার যুদ্ধে তার নাতি - নাতনির ছেলেমেয়েদেরও আদরে - প্রশয়ে বড় করে তুলেছেন। পরিবারে তার বৌমা,নাতবৌয়েরা ছিলেন সাহায্যকারী মাত্র। প্রতিষ্ঠিত পরিবারে নির্মলাকে তাঁর মেজ পুত্রের মৃত্যু শোকও সইতে হলো। সন্তানহীনা নির্মলা একটি যৌথ পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে শেষ পর্যন্ত মায়া কাটালেন এই পৃথিবীর। সংসার যুদ্ধে এইসব নারীদের বীরাঙ্গনা বলা যায় কিনা জানা নেই। কিন্তু সংসারে এমন রমনীরা অনেকেই আড়ালেই থেকে যান চিরকাল।


 

মানস কুমার সেনগুপ্ত, 

১৭/৮, আনন্দ মোহন বসু রোড, 

দমদম, কলকাতা ৭০০০৭৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন