"রসুল মিঁয়া"
পরশু
রাত
থেকে
চোখের
পাতা
এক
করতে
পারেন
নি
রসুল
মিয়া! মাঝ
রাতে
সেই
যে
ধর-ফর
করে
উঠে
পড়ল, সারাটা
রাত
দাওয়াতে
বসে
ওই
বাঁশ
বাগানের
নিকষ
কালো
অন্ধকার
পানে
কাটিয়ে
দিলো, নাহ
কোনো
জোনাকির
আলোক
বিন্দুরও
দেখা
মিলল
না !
সাকিনা
কিন্তু
সদা হাস্য, শুভ
চিন্তক
এই
মানুষটাকে
এমন
আকুল
হতে
বিগত
দেড়
দশকেও
দেখেনি -নইলে
বসে
থাকার
কি
আর
লোক
এই
রসুল
মিয়া ! সেই
যে
বছর
হটাত্
করে
ফুলে
ফেঁপে
ওঠা
কোপাই
নদী
কেমন
আস্ত
ছোট্ট
গ্রাম
মির্জাপুরকে
ভাসিয়ে
ছিল, আর
পাঁচ
জন
মানুষের
সাথে
কাঁধে
কাঁধ
মিলিয়ে
রক্ষা
করেছিলো
গ্রামের
বাচ্ছা -বুড়ো
আর
গবাদি
পশুগুলোকে, সেদিনটা
আজও
চোখে
ভাসে
সাকিনার, চোখের
সামনে
মা-মরা
মেয়েটা
এক
ঘন
কালো
বর্ষার
রাতে
শতছিদ্র
খড়ের
চালের
জল
আটকানোর
আপ্রাণ
চেষ্টার
মাঝেই
হটাত্
ঘুম
ভাঙ্গে
বাবার
নিথর
দেহের
স্পর্শে, পরে
জেনেছিল
সেরিব্রাল
অ্যাটাক
না
কি
যেন
বলে
যেন !
তারপর
সেই
কোপাই
এর
ফুঁসে
ওঠার
দিন
আরও
কিছু
পাড়া
প্রতিবেশী, গবাদী
পশুদের
সাথে
ওঠে
এসেছিল
পরিতক্ত্য
এক
স্কূল
বিল্ডিংগে -সেই
শুরু
রসুল
কে
কাছে
পাওয়া। পরের
কটা
বছর
অক্লান্ত
পরিশ্রমে
হিন্দু
অধ্যুষিত
গ্রাম
কমলপুরের
এই
ধারটায়
এই
গোটা
দশেক
মুসলিম
পরিবারের
বাস
শুরু
।
বহু
কষ্টে
পরিত্যক্ত
স্কূল
বাড়িটাকে
নিজেরাই
মেরামত
করে
বাচ্ছা
দের
পড়ানোর
ব্যবস্থা
করা
হয়
আর
তারপর
থেকেই
রসুল
মিয়ার, স্বপ্নের
বীজ
বোনা
শুরু
। আজ আর
এই
দিকটাকে
চেনাই
যাবে
না -সবুজের
সমারোহে
সামনে
দিয়ে
বয়ে
যাওয়া
নদীর
অপূর্ব
সৌন্দর্য
আর
বর্ধমান -সাহেবগঞ্জ
লুপ
লাইনের
ট্রেন
এর
আনাগোনা
যেন
প্রকৃতিকে
আরো
আকর্ষণীয়
করে
তুলেছে।
বেশ
কয়েক
বছর
চাঁদা
তুলে
স্কূল
গৃহটাকে
মেরামত
তো
করা
হয়েছেই
সেই
সঙ্গে
রসুলদের
নিজ
উদ্যোগে
আর
পাঁচজনকে
নিয়ে SDO অফিসে
ধর্ণা
দিয়ে
দিয়ে
কমলাপুরের
এই
দিকে
এখন
সুন্দর
মোরাম
রাস্তা -সেই
জল
জমা
হাঁটু
জলের
দুর্দিন
শেষ-পরিত্যক্ত
জমি
এখন
সোনা
ফসলের
বাহার।
একটা
স্বপ্ন
নিয়ে
রসুল
এর
হাত
ধরে
এই
এলাকার
আজ
যে
আমূল
পরিবর্তন, তা
কমলপুর
কেন
এই
এলাকার
সকল
বয়োজ্যেষ্ঠ
মানুষ
একবাক্যে
স্বীকার
করে।
গতকাল
স্কুলে
থাকাকালীন, রসুলের
হাতে
একটা
সেচ
দপ্তরের
চিঠি
আসে, বিষয়
ছিল
তাদের
এই
দশ-বারোটি
পরিবারকে
উঠে
যেতে
হবে
অন্যত্র, এই
সরকারি
খাস
জমিতে
সরকারের
টুরিজম
প্রকল্প, ইকো
পার্ক -- নদীকেন্দ্রিক
পর্যটন
হবে, আর
এই
কারণেই
বহু
আগে
স্কূল
টিকে
সরিয়ে
কমলাপুরের
ভিতরে
নতুন
করে
গড়া
হয়
।
রাজনৈতিক
পটবদল
আর
কমলাপুরের
মতো
হিন্দু
গ্রামে
আর
যাই
হোক
এই
মুসলিম
পরিবার
গুলোতো
ঠাঁই
পাবে
না -তবে
এই
পঞ্চাশ
এর
কোঠায়
পা
দেওয়া
শরীরে
বয়সের
দুর্বলতা
বাসা
বাঁধার
দিনে
কোথায়
গিয়ে
উঠবে
তারা
আর
তার
সাধের
স্কুল!
সাত
টা
দিন
কেবল
ভাবতে
ভাবতেই
আর
দুশ্চিন্তায়
পেরিয়ে
গেল ,স্কুলের
পথেও
আর
যেতে
মন
চায়
না
রসুল
মিয়ার -নিজেকে
বড়ো
অসহায়
লাগে
তার, বাচ্ছাদের
কোলাহলও
কেমন
থেমে
গেছে, হয়তো
খবরটা
ততদিনে
সবার
কানেও
চাউর
হয়ে
গেছে।
সাকিনার
মাধ্যমে
আঁচ
পেয়েছে
কমলপুরের
গোড়া
হিন্দুদের
একাংশ
আগে
থেকেই
বিক্ষভ
দেখিয়ে
গেছে
সরকারি
অফিস, গ্রাম
জুড়ে
যে, তাদের
এই
হিন্দু
গ্রামে
কোনো
মুসলিম
পরিবারকে
কোনমতেই
ঠাঁই
দেওয়া
চলবে
না ! সেদিন
বাইরে
ডাক্তার
দেখাতে
বেরিয়েও
খুব
অস্বস্তি
হচ্ছিল
রসুল-সাকিনার, হটাত্
করে
যেন
ধর্মটা
তাদের
গায়ে
বিশ্রী
ভাবে
সেঁটে
গেছে, চারিদিকে
ফিসফাস
গুঞ্জন।
সারারাত
বাইরে
অঝোর
ধারায়
বৃষ্টি, হটাত্
যেন
বাড়ির
পরিবেশটা
থমকে
গেছে -সদা
উদ্যোমী
মানুষটা
নিজেকে
গুটিয়ে
নিয়েছে
এই
কদিনে
।সকলের নিয়ে
চিন্তাশীল
এই
মানুষটাকে
আজ
যেন
একটু
বেশিই
স্বার্থপর
লাগছে -ভোর
তখন
প্রায়
চারটে
বেজে
পঞ্চাশ
মিনিট
ঘড়িতে, একটা
ভ্যানে
চেপে
যত্সামান্য
কাগজ
পত্তর, বই -জামাকাপড়
নিয়ে
সাকিনাকে
বেরিয়ে
আসতে
হয়েছে
সব
মায়া
ত্যাগ
করে -গন্তব্য
ভোরের
কোপাই
স্টেশন -সেখান
থেকে
বিশ্বভারতী
ফাস্ট
প্যাসেঞ্জার
ধরে
কলকাতা
শহরের
নতুন
আস্তানার
খোঁজে।
হটাত্
একি -ভোরের
স্টেশন
এমনিতেই
ভিড়
থাকে ...কিন্তু
লোকে
লোকারণ্য
যে -বাইরে sdo সান্যাল
বাবুর
গাড়িও
নজরে
এলো। হাতের ব্যাগটা
সাকিনার
হাতে
দিয়ে
ইশারায়
দূরের
বেঞ্চে
বসতে
বলতেই ,দেখে
সবাই
তাদের
দিকেই
যেন
এগিয়ে
আসছে ! এ কি
কমলপুরের
নারায়ণ
মন্দিরের
কূল
পুরোহিত
মহাশয়ও
যে
হাতজোর
করে
তাদের
দিকে, সঙ্গে
আরো
শ খানেক
গ্রামবাসী। sdo
সাহেব
বলে
উঠলেন, "একি রসুল ভাই
-আপনি
শেষে
আমাদের
ছেড়ে !!" কথাটা
যেন
কেড়ে
নিয়ে
পুরোহিত
মশাই
বললেন,
"ভগবান
-আল্লাহ
সব
এক
রসুল
ভাই, আমরা
সবাই
সিধান্ত
নিয়েছি -আর
যাইহোক, আমাদের
স্বপ্নের
রূপকার
কে
আমরা
ছাড়ছি
না, সেই
সঙ্গে
আপনাদের
ওই
সকল
পরিবার
গুলো
ও আমাদের
গ্রামের
মাঝেই
নতুন
মহল্লায়
থাকবেন
আমাদের
প্রাণ
ভোমরা
হয়ে
।" উপস্থিত
সকলের
সমস্বরে "হ্যাঁ -হ্যাঁ
আমাদের
সাথেই"
রসুল -সাকিনাকে
যেন
এক
অদৃশ্য
মায়াটানে
আছন্ন
করে
তুলেছিল -রাত
ভোর
বর্ষণ
শেষে
পূর্ব
আকাশ
যেন
আজ
বড্ড
বেশি
ঝকঝক
করছে
।।
************************************
রাণা
চ্যাটার্জী
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন