(নারীর বিভিন্ন আঙ্গিকে বিমূর্ত রূপ,,,,,
সামাজিক খন্ডবিখন্ড রূপলেখা,,,,)
যখন সে ছন্নছাড়া কিশোরী,,,,,,,,
১. কবিতা: আবাল্য কিশোরী।
দুমড়ানো মুচড়ানো কিশোরীর আবাল্য জেদ
ঘ্যাঁন ঘ্যাঁন,,,,,, এনে দাও, এনে দাও।
ঘোমটার তলায় হাহাকার খ্যামটার নাচন সরিয়েছে
বৃদ্ধকাতর অঙ্গুলীদল আর হবে না আর হবে না।
এবার তবে মুখে দাও তালা হও তুমি রুদ্ধ জীবনপ্রপাত।
মেয়েটির আটঘাটে যৌবনা সুন্দরীর ফণার ছোবল
দংশনের করাঘাতে ভাগ্য যেন শুকিয়ে মরে অকাল জরা ও শোক।
নৌকাবিহারে দামাল বৈঠা মাথা গুঁজে হাতড়িয়ে দূর্ভিক্ষ
অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের সংসার চালানোর ঢঙ মরে যাই মরে যাই।
সখের ভুলে বিভ্রম সহবাস আটচালা কোলে আগন্তুক
মশারী টানার আয়তক্ষেত্রে বাক্সবন্দী সিনেমাটোগ্রাফি।
নিভু নিভু আঁচের লোডশেডিং কর্মক্লিষ্ট গলদঘর্ম
অন্ধ প্রত্যাশায় কানাগলি সিঁথিতে আবাল্য প্রেমের দৌরাত্ম্য
বোবা কালা স্বীকারোক্তি অমোঘ বর্ষণ।
চোখের কোলে দেখেছিলেম নৌকাবিহারে সঙ্গম।
মৈথুন স্রোতে উড়ন্ত হংস গ্রীবায় অজন্তা ভাস্কর্য
হাতড়িয়ে ব্যধ অণ্বেষনে তোমার খাদ।
ন্যাওটা কিশোরীর হাত ধরে অভিভাবকত্বের স্বাদ।
তোমার পিছু পিছু চলনে মনগীতি স্পর্শকের টান
তোমার কেন্দ্রগত বৃত্তের চারপাশ
আমার কিশোরী বেলা খোঁজে কবে পাবে তোমার সাথ, দৈহিক দুরত্বে বক্ষে ছাতিম গন্ধে থাবা উঁচিয়ে হায়না তোকে চাই তোকে চাই।
এবারে আর আমাকে একা ছেড়ে যেওনা ওগো অন্ধের যষ্ঠি।
=============================
যখন সে উড়ুউড়ু মনে কলেজের প্রথম প্রেমে,,,,,,,,,
২.ক্যাম্পাসবেলার ক্যান্টিন
ক্যাম্পাসবেলা সৈকত চোখের আদরে ফ্রেশার যৌবন
ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সংকোচ পায়ের পাতায় শিরশির
প্রমাণের যোগ্যতা প্রতিটি বিকেল বইব্যাগে কাঁধে ফেরে।।
আগুনের লটরবটর ঐকান্তিক প্রেমের স্পর্ধা তোমার দেহ বিভঙ্গে
থার্মোমিটারে পারদের উর্ধ্বগতি
তুমি তুমি আশ্লেষে ঝোঁক উদগ্রীব
তোমাকে কাছে পাবে বলে।।
টেবিল চাপড়ানো পুরুষালী দাপট ঔদ্ধত্যে জিএস
কলেজের সকল উপত্যকা তোমার বিচক্ষণতায় গিরিখাত।
বুকের কাছে ওম ছেঁড়া বোতাম
পাততাড়ি গোটায় নির্লিপ্ত সুখে প্রেমিকা আমি
চুলছেঁড়া বিশ্লেষণী মাথাখারাপ ভ্যাবাচাকা
সমীকরণের উত্তর দক্ষিণ জ্যামিতিক গোলার্ধ
স্পর্শকে তোমার ছোঁয়ায় রেশমী সুতোয় গিঁট ফেলে।
অজান্তে জানতে চায় তুমি, তুমি কি আমার হবে।
বিধাতার জঞ্জাল উজ্জ্বল গৌরব অঙ্কের ভগ্নাংশ শোক
প্রাঞ্জল তোমার দৃপ্ত কন্ঠের সমাধানে
মস্তিষ্কের শিরায় জ্বরের ঘোড়াদৌড়
তোমার আলিঙ্গনে উষ্ণতা পাবে বলে।।
চোখের গালিচা ঝাঁ চকচক তুমি শাহাজাহান
কামুক উত্তেজনার আদম প্রেমের ঘ্রাণে
ক্যান্টিনে ঠোঁট কামড়ানো যন্ত্রনায়
তুমি সত্যি আমার চোখে সব্যসাচী ছিলে
যার দুহাত সমানে চলে।
আমাকে উদ্ধারে যেন তেন প্রকারেণ নৌকাডুবি
প্রতিদান তোমার সাহচর্যে Monthly exam
পরিত্রাণ হিজিবিজি তোমার দেওয়া
নোটসের আভিজাত্যের পেপারব্যাক।
তোমার আশ্বাসে ভাঙা দেওয়ালে মুখ গুঁজে
আমি যেন কোন মৃত ছত্রাক।
আমি আছি তোমার সাথে।।
==================
যখন সে মরিয়া সোহাগে প্রিয়তমার স্বীকারোক্তি সিঁদুরের খোঁজে,,,,,,,
কবিতা: সন্ধ্যাপ্রদীপ।
সন্ধ্যাপ্রদীপের নিঃশেষ জ্যোতি ফরফর, তলানির তৈলাক্ত সমুদ্রে হাবুডুবু।
বুক পকেটের ভাঁজে তিরতির অসামান্য জ্বরে কেঁপে নামে সন্ধ্যা।
এইবারে এইখানে থে থাম হও, অনেক হয়েছে প্রেমিক তোমার শুঁয়োপোকা।
বিষাক্ত কীটের যেন শান্তশিষ্ট নৃত্য হামাগুড়ি সর্পিল সর্বাঙ্গ,
আদম আপেলে পুরুষত্বের সাতকাহন মালকোঁচা।
মনের কোনগুলো শক্ত খুঁটে বেঁধে রাখা আমার সংসার, আমার দাম্পত্য।
অনিবার্য সঙ্গমের তোর ঘুমস্নান আমার আলগোছে সামাল তোর নোঙ্গর,
লক্ষ্যের শিখর থেকে নিশিদিন বিচ্যুত পোড়া কপাল।
রাখালিয়া ডাকে কোথায় বাঁশি বাজাবি তমাল গাছের নীচে,
তা না স্পর্ধিত স্বরে ডাকছে সন্ধ্যাতারা আয় আয় প্রজাপতি,
তোর সৌন্দর্য্যতৃপ্তিতে হোক আমার বিবাহ যোগ।
মলিন আকাশে অগনিত তারার আঁচল,
বিহ্বল করে চালুনির ফাঁকে বিন্দু বিন্দু আকাশ।
সুগন্ধী ধূপের ক্ষেপাটে আদম নৃত্যে অস্থির ঈশ্বর,
থাম থাম এবার বেমানান শুঁয়োপোকা খুব ঘটা তোর প্রজাপতি হবার।
ঝাঁঝালো শাস ছাড়িয়ে পুষ্ট মাংসে দাঁত,
তুমি খুব সেয়ানা হতে চাও শুকতারা, হোক তবে সুপ্রভাত।
বিষাক্ত মথ মন্ত্রে সহজ শরীরে অদৃশ্য সখ্যতার সন্ধান।
লাটিমের মতন আত্মকেন্দ্রিক শুধু চায় অমৃতসুধাভোগ।
গায়ে গা ঘেঁষে এসে বসেছিলি মনে আছে ঐ সান্ধ্যভ্রমনে,
হৃদপিন্ডে আছড়ে পড়া আমার চিবুক,
তুই তো ভেবেছিস আমার আর নেইকো গতি,
আমি যেন কোন উন্মাদিনী।
কর্পূরের মতন দগ্ধ অগ্নিশিখায় দপ করে উবে যাওয়া,
তোর শরীরের গন্ধ শুষে আমি নিজেই এখন প্রজাপতি।
বদ্ধ ঘরের একপাট ওকপাট ছুটছে জরায়ু গন্ধ পেতে,
কিন্তু সে তো অসম্ভব যতক্ষন না লাগছে বিয়ের যোগ।
তবে সন্ধ্যাপ্রদীপেই তোর সোহাগ আগুন অস্তমিত হোক।
========================
যখন সে নির্জলা উপবাসে সত্যিকারের চিরজীবনের সাথীর খোঁজে,,, তপস্যায় অগ্নিদগ্ধ পার্বতী রূপে,,,,,,,
কবিতা: শিবরাত্রি
মৃগতৃষ্ণা কাজল সমুদ্রে বিষাদের আত্মগ্লানি,
ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের কামনা পূর্তি,
হে মহাদেব উদাসীন, ক্ষুদ্র কুটিরে আত্মগোপন।
স্নিগ্ধতা চিরে নিরুদ্দেশহীন উচ্চৈস্বরে ডাক,
বিবাগী বিহঙ্গ কোকিলের ডাকে মিলনে উন্মুখ শতাধিক কুমারী।
জাপটে জড়িয়ে লকলকে জিহ্বা সর্পিল জটিল।
আঙ্গিক সৌষ্ঠবকান্তি, প্রেমোষ্পদের প্রচ্ছন্ন ছায়া।আগামী নবাঙ্কুর, মিলনে ক্লান্ত কুসুম।
নিভে গেছে প্রদীপ্ত উজ্জলপ্রদীপ শিখা, শেষ অবশেষ কালিমা পিছু সঙ্গপানে।
ঘুমভাঙা সোহাগ শেষে আরেকবার নির্বাক চাহনি।
অমাবস্যার তমনিশায় ঘোর ঘনঘটায়।
শিরোশোভিত চন্দ্রমা আত্মগোপন গ্রহনে প্রচ্ছন্ন স্বামী সোহাগ অচিরেই ক্ষুদ্র কুটিরে।
বৃষ্টির সুখ দেওয়ালের কোল ঘেঁষে গড়ায়।উদ্দেশ্যহীন চোরাবালিপথে সঙ্গম। ঐকান্তিক বাচনিক আকুতির স্নিগ্ধ পরশে।তোমার প্রেয়সী নির্জলা উপবাসে।
মরীচীকা পিপাসা শুধু অভুক্ত নিস্তেজ শ্বাসে, তোমার আত্মশুদ্ধির ঢালা জলে।দিবারাত্র আর্তনাদ আকুতির উচ্চৈস্বরে।
বিহঙ্গ বলাকা আগমনী প্রভাতে মাখতে চায় গনগনে রবিরশ্মিরাগ।
প্রান তব ওষ্ঠাগত নাভিমূলে স্থিত।নিঃশ্বাসে ভ্রমিল আত্মগ্লানির অমৃতসুধা।
বিন্দু বারিকনায় পিপাসার্ত মগ্ন নিষ্ঠুর তপস্যা।আগামী প্রত্যাশা বিশ্বাসে গ্রন্থিত।
ক্ষিপ্ত তব তেজ, হে রুদ্র ধ্বংসের রক্তবীজ, অঙ্কুরোদ্গম পুড়িয়ে উড়িয়ে চিতাভস্ম,
ললাট চন্দ্র ফেলিছে অপরূপ জ্যোৎস্না ছায়া।নির্লিপ্ত সোহাগ রজনী শিব সতী সঙ্গম।
পূরন করো আকাঙ্খা অনেক সাত পাঁচ জটিলতায়।
কম্পিত হস্তে দুগ্ধকলস, চুঁইয়ে পড়ে মম অর্চনা।
ঝুলন্ত সর্পিল ধীরগতি তাই হুড়মুড় প্রসাদী গঙ্গে প্রাপ্তি।মুক্তি তার অখিল সমুদ্রে।
ডানা মেলে সাদাফুলের শেষ রাত্রিসংলাপ। পরাগরেনুর অযাচিত ভার ডানায় ক্লান্তি অগ্রসর।
পক্ষসঞ্চালনে ফিরে এসে বসুক উন্মিল নয়নে, কুমারীর সোহাগ চন্দনে।
স্বামী সোহাগে রুদ্রপ্রলয়ে সতীর নিঃশ্বাস, রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভেজা খোলা চুলের ঘ্রান।
ঘাপটি মেরে বসে আছো তুমি,ছোট ছোট কুটিরের আটচালায়
প্রমাদ মরীচীকা সংসার সুখ বিভ্রম।
গড়িয়ে গেছে বেলা সিঁদুর মেখে,
চুপ করে ডুব দিয়েছে রবি অস্তগামী রাগে, নির্লিপ্ত মনে তুমি আসবে বলে।
নিশ্চিত ঐকান্তিক তমনিশার অঢেল ঘুম,
আর অন্ধ প্রেমে উৎসর্গ তোমার প্রশান্তি জলের অর্চনা।
এবার তো উঠো জাগাও তব ত্রিনেত্র। ব্যাধ হয়ে অনতিক্রম্য দুরত্ব মৃগয়া।
আবর্জনার স্তুপ ছাইয়ের কোলে,
ঘুমিয়ে আছে ধিকিধিকি আগুন।
সবটুকু ললাট চন্দনে লেপে ঝাঁপিয়ে উঠো হে নাগা সন্ন্যাসী।
বিরোহিনী কুমারীর আলুলায়িত কেশে ছড়াও সুগন্ধ ওষ্ঠের মর্মিল পরশে।
উদ্দেশ্যহীন যাত্রাপথে অমোঘ মেঘমালা।
গোধূলির অস্তরাগ সোহাগশেষে চন্দ্রমার উঁকি।
এবার তো তাকে নাও চিরকালের তরে বলে ওঠো,
প্রেয়সী থাক অনেক হয়েছে,
আর করতে হবে না কোন তপস্যা।
তুমি আমার সন্ধ্যার মেঘমালা,
আর আমি তোমার উজ্জ্বল ধ্রুবতারা।
=========================
যখন তার প্রবেশ স্ত্রী রূপে স্বামী সংসার,দাম্পত্যে,,,,,,,
কবিতা: দাম্পত্য
তোমার নাম আমার নাম পর্দার আঁচলে।তোমাতে শুরু আমাতে শেষ মধ্যিখানে একরাশ বিনিসুতোর সমুদ্র, বস্ত্রের আগমনী তুমি আমি লজ্জাবরনের আঁচল, সুতোর শেকড়ের রন্ধ্রের টান, কোমরে উথলে সোহাগ তোমার মারপ্যাঁচ, জড়াতে থেকে অসহায়।অঙ্গশোভায় তিলোত্তমা।তোমার পাড়ের বাঁধভাঙা উচ্ছাসী সুখ, পায়ে পায়ে ধরে, অধীর আকুতি ব্যগ্র উচাটন মন, আলতা চরনে সহবাস।পরাগকেশর বৃন্তকমল সুগন্ধী আঁচলে প্রদর্শন, অজানা দৃষ্টির প্রশংসায় ডুব, আপন অস্তিত্ব সন্ধানে আপামর প্রত্যয়, হাতছানি সোহাগ দুগ্ধসমুদ্রে যেন বাঁটে কোন শৈশব গোবেলা বাছুর, আত্মপ্রত্যয়ে ছলকায় মাতৃস্নেহ।
নাভিপদ্মের লুকোচুরি গভীর গহনে পাতার আড়াল, দেখা দেয় একবার, পলকে হয়ে যায় অদৃশ্য অস্তিত্ব, ধরাছোঁয়ায় ছলনা, লীলায় অধরা উষ্ণ পরশে ফোঁটার কামাতুর মুক্তো, পলাশ লজ্জায় রাঙা মুখ লুকায় আমার আঁচলে, ধরা দেয় তোমায় কোলের মধ্যবিন্দু সূচক, ব্যগ্র অজানা দিক নির্নয়ে, স্তব্ধ শিল্পী অঙ্গুলী চারনায় ঠিক যেন মৃন্ময়ীর নাভিস্পন্দন, ধিক ধিক মুর্চ্ছনার নেশার ঘোরে, এলোপাথারি স্পর্শে অভ্যন্তর গভীর খাদ, শৈল্পিক সুষমায় আপামর দিগন্ত শোভা, নগ্ন অঙ্গ দৈহিক খাঁজে, নান্দনিক অজন্তা ইলোরা।
তাঁতের দলাই মালাই রন্ধ্র সুতোর গোছাভরা, মালকোঁচার টান, সোহাগের রঙে চুবিয়ে দীর্ঘশ্বাস পেষনে স্বস্তি, রামধনুর সাতটি রঙ নিয়ে মুক্তমনা বিহঙ্গ, পক্ষ সঞ্চালনে দিগন্ত বিস্তৃত বক্ষ, জগত সংসার বয়ে যায় দ্বিধাহীন চিত্তে, অগভীর সমুদ্রে, ডুবে ডুবে জল খায়, বেলোয়াড়ী ঝাড় জলসাঘরে, হুঁকোর রঙীন ধোঁয়ায় আত্মমুর্ত ছমছম নূপুর পায়ে, নর্তকীর বিলাস প্রমোদ ব্যঞ্জন, অস্তিত্বের নব নব রূপ প্রদর্শন, আদিম আস্কারা, গর্ভাশ্রয়ে নিশ্চিত সহবাস নতুন প্রজন্ম, অপারগ নিজ অস্তিত্ব গোপনে, প্রদর্শনের বিষ অঙ্গ প্রত্যঙ্গে সর্পের আলিঙ্গন চন্দন সুখ ভ্রমে অসুখে।
অগ্রভাগে হও তুমি কান্ডারী, শক্ত করে কষে ধরো হাল, আমি উদ্দাম সোহাগের ঝড় বক্ষে লুকিয়ে হই পাল, দুজনাই দুর্বিপাক আঁখিসমুদ্রের ঘূর্নিঝড়ে ফেঁসে, ফোঁস ফোঁস, উদগ্রীব উচাটনে মারলো টেনে হাল ফেললো নোঙর, তবুও দিনশেষে গোধূলির আলতা চরনে সোহাগ বাসর, ক্ষুদ্ধ তুমি আমি দিকহীন বিভ্রান্ত বৈতরনী।
===============================
যখন অত্যাচারিত অপমানের বহ্ণিশিখায় নিভন্ত সোহাগের গাঁটছোলা তখন শাণিত খড়্গ উন্মোচনে কালিকা রূপে,,,,,,অধিকারের সমর।
কবিতা: রূপসীর সিঁদুরের অধিকার
লাল আলতায় বেনারসীর আঁচলে ভার,
জ্যোৎস্নায় মধুচন্দ্রিমা সোহাগের বাসরে,
একবার একটি ক্ষন অর্ধচন্দ্র নোঙ্গর ফেলে,
আদিগন্ত আকাশের বুকে।
বাড়তে থাকে তার আস্কারা।
ওদিকে কাঞ্চন কন্যা শুধু আড়ালে আবডালে,
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে,
আঁজলা ভরা আকুতি কনকাঞ্জলীর,
চিরবিদায়ের ঐকান্তিক সুর,
চেনা জানা একঘেঁয়েমি পরের ঘর যেতে হবে।
অস্তাচলে শৈশব ফেলে যাওয়া চৌকাঠ,
কন্যার আঁচল আঁকড়ে ধরে বলে যেন,
ওগো মেয়ে যেও না গো আর কটা দিন থেকে যাও,
বাপের ঘরে।
তবুও সমাজের লৌকিকতা বাধ সাধে,
পায়ে শৃঙ্খল বাঁধে কড়া শাসনে বলে ওঠে,
ওরে ওরে ইচ্ছে পাখি এতদিন ছিলি মুক্ত,
তোর হৃদয় মাঝারে আজ তুই পড়লি বাঁধা,
স্বামী সোহাগের পিঞ্জরে।
মুখে হাসি চোখে জল সকলের শেষ পাতে,
বউ খায় স্বামীর এঁটো পাতে।
তাতে নাকি বাড়বে সোহাগ পুরানো ঐতিহ্য।
রাতবিরিতে ফেরে মাতাল স্বামী দেওয়াল ধরে,
পুরুষত্বের একচ্ছত্র স্বৈরাচারী হুংকার,
আমার টাকায় হয়েছে তোর গতর,
চোখরাঙানো তো আমার একশোভাগ অধিকার,
তুই কে এক অতি নগন্য মেয়েমানুষ।
মেয়েমানুষের অতো বাড় কিসে,
একদম না আঁচলের তলায় অন্দরমহলে তোর,
থাকার কথা, ঐখানে তুই ছিলি,
ঐখানটিতেই তুই থাক।
বীরভোগ্যা বসুন্ধরা শত অত্যাচার সহনের বাঁধ,
সংসারের চৌকাঠ এক দীর্ঘায়িত অবসাদ,
কাজল রেখায় টান টান অবাধ্য তবুও মন,
তোমার প্রতি সমর্পনের আঙ্গিকে শশব্যস্ত দিনে রাতে।
তোমার চোখেই দেখেছিল একদিনে কন্যে মরন,
কিন্তু আজ প্রতি পদে পদে তিরস্কারের,
লেলিহান শিখার দাবানল আঁচলকে জড়িয়ে জড়িয়ে ধরে,
আজকে আত্মসম্মান কুঁকড়ানো জঠর,
আগামী সম্মান অনিশ্চিত প্রজন্ম গর্ভপাত।
দগ্ধ হতে থেকে ক্লান্ত তবুও জীবন্ত জীবাশ্ম,
ফ্রেমে সুন্দর লৌকিকতার দাম্পত্য,
আমরা না জানি পর্দার আড়ালে কতই না সুখী।
কিন্তু অসহ্য দাবানল নারীত্ব প্রশ্ন করে,
বিবেকের ছেঁড়া পাতা অক্ষম ক্যানভাস হতে,
শুধু চায় পরিসমাপ্তি কাগজের চিরকুটে ছোট সাইন,
কিন্তু পোড়া মন ভাবে একটা সুযোগে।
আজ নয় কাল সব ঠিক হবে,
কিন্তু কাল মহাকালের ঔদাসীন্য কর্নপাতে অশৌচ,
হতে চায় না শুদ্ধিকরন, শুধু মরন মরন।
তখন অকস্মাৎ উঠে আসে হিড়মিড়িয়ে মুগুর হাত,
তোমার নারীত্ব কে লুন্ঠিত করে,
উত্তম মধ্যম প্রহার পিঠের লকলকে মাছের শিঁড়দাড়া,
কালশিটে তবুও তুমি মন ছাড়া শরীরে হতে চাও ধর্ষক।
তুমি কি সত্যিই মানুষ।
প্রতি রাতে আমাকে বিছানায় ফেলে ফেলে মারো,
আমি কি তোমার বাপের সম্পত্তি।
পুরুষত্বের ঘৃন্য হাত হয়ে ওঠেনি সত্যি আশ্রয়,
দিয়েছিলাম কনকাঞ্জলী তবুও আজ আমি নিরাশ্রয়।
অব্যক্ত কথাস্রোত শুধু চোখের জলে,
তুমি নৈশিল মাদকতায় পরকীয়ার চুম্বনে,
অপর ঘরে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য,
এখানে কে আমি কি করছি।
কি করতে চাইছি মিছিমিছি সতী হতে।
চাইনা আমি সিঁদুরের অধিকার,
যা বেঁধে দিয়েছে আমার সকল সুখ।
আমি ভুগতে লেগেছি ধরেছে আমায় অসুখ।
লাল আলতায় মিশ্রিত আমার প্রহারের রক্ত,
কঠিন ঘায়ে আমি মূর্চ্ছিত।
ধরতে এবার আমিও চাই তোমার হাত,
আমার আমির নারীত্বেই ছিল একদিন তোমার মা।
যে দিয়েছিল জন্ম আর দেখেছিলে একদিন পৃথিবীর আলো।
আর সেই মা ও একদিন হতে বাধ্য হয়েছিল রুদ্রানী,
কঠোর শাসন আর মারের বজ্রাঘাতে,
করতে চেয়েছিলো তোমায় মানুষের মতন মানুষ।
আজ আমিও তুললাম বটি,
করতে চাইনা আর দিনের পর দিন,
সবকিছু জেনে শুনে মুখে কুলুপ এঁটে,
তোমার জঠরপূর্তি।
করতে চাই আজ শুধু অহংকারীর বিনাশ।
=======================
যখন সাংসারিক অভাবে জ্বালাদগ্ধ জরায়ুর আর্তি রুখতে বেকার স্বামীর প্রতিস্থাপক এয়োস্ত্রীর দুবেলা দুমুঠো জোগাতে পরের দোড়র ঝি খেটে অন্নের লড়াই,,,,,,,,
কবিতা: কাজের মেয়ে
হাড় পিটপিটানি কোমর দুলানি,
শাড়ির লটরবটর, মুখে চন্দ্রিমার একমুখ হাসি।
খ্যামটার নাচন বাসনে সার্ফের ঝাঁ চকচক,
বৌদি দেখবে নাকি মুখ, নির্ঘাৎ বলছি দেখে নিও,
তোমার বাসন আমার হাতের ছোঁয়ায় দর্পন।
যমজ দুখানি মেয়ে সহচরী পেছু পেছু ঘোরাঘুরি।
স্বামীর ভ্যাবাচাকা মুর্তি নির্বিকার সংসারে তার দায়,
তবুও তাকে সত্যিই ঠেকানো দায়, মনের রাজা, মর্জির মালিক।
যখন ইচ্ছে ঘোরচক্রে মাতলামো ঘরের জিনিস চুরি করে বিক্রী।
উফ সংসারের যাঁতাকল একা আমার ঘাড়ে,
দিনেরাতে নাভিশ্বাসে ধুঁকছে পোড়া কাঁপা নিঃশ্বাসে,
তবুও জেনেশুনে জ্ঞানপাপী, তোমাকে তো আর ফেলতে পারিনা স্বামী,
লোকে যে যাই বলুক।
=============================
যখন সম্পত্তির লোভে বঞ্চিত শুশ্রুষার শোকে গর্ভধারিণী মায়ের অবহেলায় একলা যাত্রা,,,,
কবিতা: অবহেলা
বুড়ি থুরথুরি পেছনে কেউ নেই না ছেলে না বউ,
ছেড়ে দিয়েছে একলা মরতে হয় মর, আমাদের কি।
সম্পত্তির চাবি হল আসল কলকাঠি, তোমার থলি ভাঙ্গিয়ে আমার সিন্দুক।
ওদিকে টোটো চড়ে বুড়ি একলা পথের যাত্রী, নিরুদ্দেশের ঠিকানা,
জরা বার্ধক্যের মহৌষধ ডাক্তারবাড়ি।
ওদিকে ক্ষিপ্রগতিতে চলমান হোঁচট খাওয়া বাম্পার টোটোগাড়ি।
ধুকপুকানি দীর্ঘশ্বাসে হু হু বর্হিগত উপক্রম প্রানবায়ু ঝটপট,
ওদিকে উচ্চৈস্বরে হু হু করে ছটফটানির আওয়াজ,
টোটোবালা থমকে গাছপালা চমকে যেন বুড়ির জীবন সাঙ্গ।
পরে থে থাম ছোটাছুটি টোটোবালা মুখে দিল জল ঠিক যেন বিকল্প,
আজকের জগতে তোমার দ্বিতীয় ছেলে হলো বা না হলো পেটে ধরা।
দশমাস দশদিন আসল ছেলের মুখে ছাই,
নকল সোনার পেছনে ছুটে দিল তোমায় অন্তিম যাত্রা।
সিন্দুক ভরা আজীবন লালায়িত শুশ্রুষার শোক।
========================