।। আমাদের অধিকার।।
আমরা নারী। আমরা বিধাতার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম সৌন্দর্য সম্পদ।আমরাই পৃথিবীর সর্বত্র লক্ষ্মী শ্রী হয়ে বিচরণ করি। আমরা তো কারো হাতের খেলনা পুতুল নয়। প্রশ্ন জাগে মনে ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্র পুঞ্জের স্বীকৃতিকে মেনে শুধু ৮ই মার্চ দিনটা কেন ই বা নারী দিবস হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে? তাহলে কী ৮ই মার্চ এর রাত পোহালেই নারী দিবস শেষ হয়ে যাবে? ৯ই মার্চ ভোর থেকে আবার আমরা চলে যাবো গৃহকোণে বন্দিনী হতে সংসারের সব ছিদ্র গুলোকে ভরাট করতে সব গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে। সত্যি ই খুব লজ্জা হয়, এই একটা দিন যে কেন আমাদের চোখে মায়া কাজল পরিয়ে মিথ্যের বেসাতি করা হয়? যদিও এই প্রশ্ন টা আমাদের অর্থাৎ মেয়েদের ই করা উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের দেশের মেয়েরা এ প্রশ্ন না করে মিথ্যে বেসাতি র স ওয়ার হয়। গয়না, শাড়ি,বাসন কোসনের ছাড় গুলোকে কেন যে নিজেদের অহংকার বা অলংকার বলে মনে করে মেয়েরা সত্যি ই বুঝিনা।এ লজ্জা আমাদের মেয়েদের ই হ ওয়া উচিত। কিন্তু আমরা তো স্বপ্ন দেখতে পারি একজন ফুটবলার, একজন পর্বত অভিযাত্রী, একজন অ্যাথলেট, একজন দায়িত্বশীল সৈনিক হ ওয়ার! অবশ্যই একজন সুদক্ষ গৃহিণী হ ওয়ার ও বটে। কিন্তু সমাজ তাকে ব্যঙ্গ করে আর অপমান করে ঘরের কোণে বন্দিনী করে রাখতে চায়।
আমরা মেয়েরা এইসব মেনে নিই বলেছিনা সমস্ত মিডিয়া ই এমনি সব দুর্ব্যবহার করার সুযোগ পায়।আর সেই সুযোগ পায় বলেই তাদের ই মনের মতো করে বিজ্ঞাপন গুলোকে সাজায়।যুব সম্প্রদায়ের সামনে নারীর শরীর প্রদর্শনের সুযোগ করে দিয়ে একটা অন্যরকম কুৎসিত বার্তা পৌঁছে দেয়।তার ই ফল স্বরূপ সমাজে এতো ধর্ষণের মতো জঘন্য অত্যাচার বেড়ে চলেছে। আমার মতে নারীর এই যে অপমান তার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীরাই দায়ী।
কেন আমরা তো দাবী করতে পারি টিভি সিরিয়ালের পর্দায় সার্থক নারী জীবনের গল্পে পরিবেশিত হোক। তাহলে অন্তত আর কিছু না হোক, আমাদের দৃঢ় মনোবল টা ফিরে আসবে। তখন কেউ সাহস পাবেনা বলতে সঙসার সুখের হয় শুধু ই রমণীর গুণে।আসল কথা আমাদের প্রতিবাদী নারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে,আর আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে। তাহলে অন্তত আমাদের চুরি যাওয়া স্বপ্ন গুলো তো ফিরে পাবো।
প্রসঙ্গত মনে পড়ছে স্বামীজির একটি উক্তি নারীদের সম্পর্কে। তিনি জাতীয় জীবনে নারীর যথার্থ অধিকার ও মর্যাদা রক্ষাকেই পূজা আখ্যা দিয়ে বলেছেন --"মেয়েদের পূজা করিয়াই সব জাতি বড় হ ইয়াছে। যে দেশ যে জাতিতে মেয়েদের পূজা হয় নাই,সে দেশ সে জাতি কখনও বড় হ ইতে পারে নাই, কস্মিনকালেও পারিবেনা।"সামাজিক জীব হিসেবে স্ত্রী পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা আছে। তাই তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'সবলা'কবিতায় বিধাতার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন--"নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার হে বিধাতা?"
---------------:------------- ------
শেফালি সর,জনাদাড়ি, গোপীনাথপুর, পূর্ব মেদিনীপুর।৭২১৬৩৩