কবিতা: অরবিন্দ পুরকাইত - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Sunday, March 17, 2019

কবিতা: অরবিন্দ পুরকাইত




   সতী ও পতির কথা               



কী বলছ, কাল নারীদিবস - লিখছ বসে তাই!
আহা-হা, কী শুনিনু, আহ্লাদের সীমা নাই!
এও তবে ছিল ভাগ‍্যে
লেখাজোখায় আপনি-আজ্ঞে!
মহানন্দে দু-হাত তুলে ধেই ধেই নাচি তাই!

গরু মেরে জুতোদান না জুতো মেরে গরু
সম্বৎসর টানিয়ে ঘানি, বাজাচ্ছ ডম্বরু!
এই তো ছিলাম নরকের দ্বার
পথি বিবর্জিতা নই আর!
মুক্তকণ্ঠে করবে স্বীকার, এদের বুদ্ধি সরু?

এই তো সেদিন বিদ‍্যালাভে ছিলে দ্বিধান্বিত
বৃদ্ধ বরটি মরলে বালা সমাজে পতিত!
শাঁখ-ঘণ্টায় পোড়ালে সতী
নিভল বা ম্লান কত জ‍্যোতি!
ইহলোকেই নরকদণ্ডে করেছ দণ্ডিত।

তোমার বেলা অধিক নারী - হয়নি কোনো ক্ষতি
আমার বেলা বিধান দিলে, পতি পরম গতি!
অগ্নিপরীক্ষা করালে
একসূর্যে ভাত খাওয়ালে!
দিব‍্যি তবু বলে দিলে, নারী চতুর অতি!

দু-একটা দিন মোছো ঘর-দোর, রাঁধো দু-একবেলা
মহিলারা কী কাজ করে? বুঝবে কী ঝামেলা!
তারপর আছে বাচ্ছা-মানুষ।
তোমরা ফেরো যেথায় মান! হুঁশ
ফিরবে কবে, একা নারীর দায় নয় সংসার-ঠেলা!

তুমি মাতো আড্ডায়, আমার দায় চা-জলখাবার
লিখেজুখে উদ্ধার কর, আমার বেলা ঘর-বা'র।
দু-এক সভায় সঙ্গে নিলে
কৃতজ্ঞতায় 'বধাই' দিলে।
তার বাইরে অর্ধাঙ্গিনীর আর ধারলে কবে ধার!

- অনেক কথা বললে, সখি, করলে ঢের দুর ছাই
লাজে ভাবি মাঝে মাঝে , নারীই হয়ে যাই!
তুমি যে হচ্ছ না ছেলে,
তাই তো সেসব ইচ্ছা ফেলে
বাগিয়ে কলম, লাগিয়ে মলম, নারীর গান গাই!

কিন্তু মানি, টানছ ঘানি সংসারে একটানা
তাই ভেবে আত্মকথা ছাপিয়েছি একখানা।
থাকবে সেথায় হরেক ছবি
কেবল রইবে নাকো কবি -
পতির সঙ্গে সতী সেথা রইবে বিরাজমানা!