চাঁদের গায়ে কলঙ্ক
চড়াই রাস্তার পারে একটু আলো ছড়িয়ে পড়ছে
ঘুম ঘুম আঁকা জ্যোৎস্নারা জানেনা বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে দুম করে যে মেয়েটা রাতের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে সে আদৌ বাড়ি ফিরবে কিনা,অন্তত অক্ষত শরীরে। শরীর শুধু,শরীর মানে যোনি, কিছু পেলব চর্বি চামড়ার মেলানো মেশানো ভালোবাসা।আচ্ছা গত রাতেও তো বেশ ভয়ার্ত একটা পরিস্থিতি গেছে,শামিয়ানা লাইব্রেরি থেকে সোজা মেসে ফিরছিলো। পোশাক কেমন ছিলো,হ্যা এ প্রশ্নে হয়তো আপনার সম্পূর্ণ মূল্যবোধেরা পেণ্ডুলাম স্বাচ্ছন্দ্যে টিকটক ডিকডক করছে।দুঃখিত। সে একটা খুব সাদামাটা কুর্তি লেগিন্স পড়েছিলো। বেতের ফ্রেমে মশারি টাঙানোর মত এক চিত্রকল্পে তাকে ধরতে পারি আমরা।
হ্যা, যেটার সাসপেন্স আপনি ধরে রাখতে পারছেন না যে কি হলো, সেকথায় ফিরি যাইহোক।
রাত্রি ঠিক বলা যায় না। সন্ধ্যে সাতটা।সাতটা বেজে দশ। শামিয়ানা ঘড়ি দেখে দূর্বাদলকে বললো,"আসি।"
লাইব্রেরির গলি থেকে মূল রাস্তায় উঠতে গেলে পেরোতে হয় ত্রাসগলি। একটু আওয়াজ হবেনা সন্তর্পণে সে কায়দায় দ্রুত গতিতে এগোতে গিয়ে সামনে পড়লো কলেজের বখাটে ছোকরার ঠেক এ।অশ্লীল শিস,আর অপমানের সঙ্গীতে নিমেষে গমগম করে উঠলো বাতাস। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ দিয়ে সজোরে আঘাত করে ছেলেগুলোর হাত থেকে কোনরকমে পালালো শাম্মু। পরের দিন রবিবার।কলেজ যাওয়ার প্রশ্ন নেই।সন্ধ্যে নাগাদ বান্ধবীদের সঙ্গে প্রিয় নায়কের সিনেমাটা দেখে ফিরছিলো ওরা।এক এক করে সবাই ঢুকে গেলো বাড়ি। শামিয়ানার মেস ও এসে গেলো।
ছেলেদের ঠেকের পাশ দিয়ে আজ এক অন্য শিকার---দূর্বাদল। আগের সন্ধ্যার অপমান ওদের গালে লকলক করছে।দূর্বাদল জোরে দৌড়াতে পারে!ওর কাছে কি শক্তপোক্ত ব্যাগ আছে?বা লঙ্কার গুড়ো,ছোট চাকু বা সাহস!
সত্যি কাস্তে চাঁদটাও আজ বড় অসহায়,বিকৃত ক্ষুদার রাজ্যে আজ সে এক সমব্যাথি দেখবে কিনা কে জানে।এ গল্প শেষ হয়না।কারণ বছরের বিশেষ দিনে নারীদের কে যেন ঠিক করে একটা অধিকার দেওয়ার দিন দেবে।কেউ কেক কাটে,বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হয়,শপিং হয় জমিয়ে আর পাশের বাড়িতে শামিয়ানা আর দূর্বাদলেরা যখন যোগ্যতাবলে প্রাপ্তির মতুন আকাশটা ছোঁয়,তখন হাটেবাজারে খারাপ কথাগুলো ছোঁয়াচে রোগ বয়ে বেড়ানো মাছির মতো উড়তে থাকে।