জীবন খুলে যেতে যেতে
লিখে যেতে যেতে কখন যে কবিতা হয়ে যাবে
পাশাপাশি চলতে চলতে কখন যে তুমি হারিয়ে গেলে !
এক সাথে জীবনটা কাটিয়ে দিয়েও তোমাকে জানা হল না।
কোথাও তো হৃদয়ের কন্ঠীতার ছিড়ে গিয়ে ছিল।
ভালবাসার কিছুটা তো তুমিই আমায় জড়িয়ে দিয়েছিলে--
তারপর থেকেই সে অন্বেষণ লেগে আছে
তবু এ কথা বলবো পলাশ ও কৃষ্ণচূড়া সাজিয়েছে যে প্রকৃতি
এখন তারই পাশে পড়ে আছি আমি।
তোমার সমাপ্তি নেই
তোমার সমাপ্তি নেই জানি, হয় তো তারপর থেকে আবার শুরুরযাত্রা
আবার ঠিক তোমার মত আমার পাশেই সে এসে বসবে--
আমি বিগত স্মৃতির থেকে ধরে নেবো তোমার আগামী।
রাতে তুমি গল্প শোনাতে শোনাতে
স্মৃতিগুলি আরো গাঢ় হয়ে লেগে থাগবে আমার গায়ে।
জীবনটা কাটিয়ে দেবার পরেও ভেবে দেখি
এত দিন যার পাশে ছিলাম সে আজ অচেনাই রয়ে গেলো !
আরো একটা জীবন পেলে হয়ত তার প্রায়চিত্ত হতে পারত।
অমোঘ যন্ত্রনাগুলি
অমোঘ যন্ত্রনাগুলি স্তব্ধতায় নেমে আসে।
গুমোট হাওয়ায় উষ্মা ছুঁয়ে থাকা ছিল
অভিমান গুড়িয়ে গেলো তবু তোমায় জানা হল না।
কিছু প্রেমালাপ ছিল একই সংলাপ মুখের
পাতায় পাতায় শুধু লিপ্ত কথার মালা--
শরীর গাঁথার পর
অবিশ্রাম পড়ে থাকতে থাকতে দেখি তুমি নেই !
ভাষাগুলি মুখ দিয়ে ঠিক মত ব্যক্ত হয়নি বুঝি
প্রসঙ্গ প্রয়োজনে পাল্টে যেতেই পারে।
একদিন দেখি কিছুই জানা হল না তোমার
একই বিছানা জুড়ে শরীরের ভাষা,
শূণ্যতায় শুধু আকুলিবিকুলিগুলি পড়ে আছে।
আড়মোড়া ভেঙে দেখি
আড়মোড়া ভেঙে দেখি তুমি পাশে নেই !
বুকের সে কথাগুলি এখনো সেখানেই রয়ে গেছে--
বলা যে হয়নি তোমায়, জীবন কাটিয়ে উঠতে উঠতে
তোমার মুখোমুখি এসে একটু মিষ্টি হাসির মাঝে
আসল বলাটুকু রয়ে গেছে সেখানেই।
নীরবতার মাঝে চেনা হয়নি আমার আশপাশটুকু,
শুধু চোখের এপাশ ও পাশ প্রকৃতির সাজ সজ্জায়
থেমে গেছি তোমার দেহ কারুকাজে।
লক্ষ বছর পরেও যেন আরো কিছু ছিল, বলার ছিল।
কতগুলি জন্মান্তর পেরিয়ে এসেছি
দেখো চেনা জানা বলা শুনার আজও শেষ হল না।
তোমার মনের পাশ থেকে
এখনো কতটা দূরত্বে আছি তা আমি জানি না।
এই যে গাছের মত
এই যে গাছের মত পাশাপাশি দাঁড়িয়ে
আজ কত যুগ পার হয়ে গেলো
আশপাশ তোর শরীরের আনাচে কানাচে
সে সব তিল জরুলগুলির কথা বলে দিতে পারি,
কিন্তু তোমায় আর জানা হল কোই !
আজ সেইখানে থেম আছি মাটির শিকড়ে
জীবন যেভাবে থাকে,
তার বাহির দৃশ্যে বুঝি
তার অনেকটাই শেষ হয়ে যায়
অথচ এক দিন দেখো তুমি--
অভ্যন্তর ব্যথা থেকেই শুরু হবার কথা ছিল।
শেষ ও শুরুর মাঝের ঠিকানা হারিয়ে গেছে।
একান্তে চুমু খাওয়ার
একান্তে চুমু খাওয়ার সকালের মাঝে যে দুঃখ লুকিয়েছিল--
তা আমি জানতে চাইনি।
খোলস পাল্টে ফেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা আর বুঝি হল না।
সে ঠিকানা কোথায় রেখে গেছো তুমি ?
হাসির মধ্যে দুঃখ লুকিয়েছো--
দুঃখের মাঝ থেকে উঠে আসে তোমার অভ্যস্ত হাসিগুলি !
আমি তো ভাবি ঝুঝি তুমি সুখেই আছো।
কি হবে তোমার ঠিকানা চেয়ে !
আতুর দুঃখগুলির মাঝে সর্বহারা একটা দিক--
ভাবনার জড়তায়, ভাত ঘুমের আলস্যে,
না জানতে চাওয়ার অভিমান থেমে থাকে।
যেটুকু দুঃখ পেয়েছি
যেটুকু দুঃখ পেয়েছি সেটুকুই থেকে গেছে বুকের গহনে।
সুখগুলি ভোগ হয়ে যায়--তাই বুঝি ফুরিয়ে যায় অনায়াসে--
দুঃখগুলি জমা রাখি আপন প্যাটারায়, চিঠির তরঙ্গ থেকে
কখনো উঠে আসে অতীতের রাখাঢাকা সব কিছু--
এমন দুঃখ আছে তুমি তাতে স্বপ্ন হয়ে থাকো--
অফুরান সময়ে কখনো তুমি তাকে খুলে দেখতে বসো
সুখগুলি কর্পূর হয়ে উড়ে যায়,
তার গন্ধ বুঝি পড়ে থাকে বিষাদ ছাপের মাঝে।
সে সব স্মৃতিগুলি গায়ে আর মাখা যায় না।
দুঃখগুলি আশপাশ মাছির মত উড়ে বেড়ায়।
ধরে নেবার ভ্রমে সে সুখটুকু উবে যায়।
আমের রস ও গন্ধে আমোদ সে সব গায়ে লাগা মাছি।
শরীর ঘৃন্যতার মাঝে ম ম এই মাছির ঘৃণ্যতা।
লালঘুড়ি
আমি ফাঁদ পাতি।
শরীর সুখের খাঁচায় বাঁধি তোমার শিল্পশরীর।
তোমায় না পেলেও চিত্ররূপ ধরা আছে আমার চোখআয়নায়।
যখন চাই খুলে ধরি সে বুকের কাছছবি।
তাকে হাসাই। খিল খিল উছলে পড়ে সে--
হাসির লালপানা বসন্ত ঠোঁটে আমি ঠোঁট রাখি।
পিয়াসী কৃষ্ণচূড়া বাতাসি ঝাঁপে কেঁপে ওঠে বাসন্তী হাওয়া।
আমি মুখ রাখি। হে বসন্ত, তুমিও লাল মাছি
ছিদ্র কেটে ঢুকে যাও রন্ধ্রপথে
সাঁওতালী মেয়ের ঘ্রাণে উদাম লালভ সে মাটি ছিল।
অবশেষে শ্রান্তি--আইয়াশী মনের ভাসান হয়।
তোমার মৌবনের উদ্ধত ছবিকে পরিস্ফুট করে দিয়ে
পাশ দিয়ে চলেযায় ধর্ষকামীর দল।
আড়ালে দেখে নিই দৃশ্যাবলীর ঘন সমীকরণ।
সুতো গুটিয়ে নিয়ে বিপর্যস্ত লাল ঘুড়ি দেখি।
ফকির
একটা জাগায় আমি ফেটে পড়ি,
অন্য জাগায় সে সব দৃশ্যাবলীর ভিডিও চালিয়ে
কতটা হাড় সর্বনাশা দেখি !
একাধারে বোধ ও দৃশ্য লালিত হয়
নির্লিপ্ত গান ধরি--
আমি যে ফকির, বাতাস ধরে খাই…
আমি সাথেও নাই, আবার পাছেও নাই।
===========================