ডাকাডাকি 22
আর কত লাইন লিখতে পারলে তোমার সমগ্র লেখা শেষ হবে, সত্যিই জানি না । লাইনগুলো কেমন করে নতুন বধূর বেশে ভালোবেসে বাজারে নামাবো । তোমাকে যেমন ভাবে দেখেছি,সবাই তো তোমাকে তেমন করে দেখতে পারবে না । তোমাকে যেমন ভাবে ডেকেছি, জানি কেউই তোমাকে তেমন ভাবে ডাকবে না । মাঠের ওপর কড়া রোদ্দুর পড়েছে । এই অবাধ নগ্নতার মধ্যে সমগ্র ঘাসের মাঝখান দিয়ে যে অকারণ রাস্তা চলে গেছে! সেই রাস্তা দিয়ে তোমার উঠানে গিয়ে উঠেছি। ব্যকাট্যরা গাছের নিচে সামান্য ছায়ায় একটা বাঁশের মাচা তৈরি করা করা আছে । সেখানে জল আর তিনদিন আগের ঠাকুরকে দেওয়া পিপড়েতে খাওয়া বাতাসা রাখা আছে । আমি পরম আদরে আবেগ বিহ্বল হয়ে নমস্কার না করেও জল বাতাসার সাথে তোমার মিষ্টতা অনুভব করেছি।
আমার বন্ধুরা কি তোমাকে ভাগ করে নিতে চাইবে দুটো সুন্দর মলাট ছাড়া?
--------------------
ডাকাডাকি 23
তোমার কল লিস্টে আমার নাম নেই । প্রবল ঝড় বাদলের রাতে ডাকোনি কখনো ওগো মধুরানী। বছরের প্রথম কালবৈশাখী এসেছে তখন ভোরের চেয়েও ভোর । সকালের প্রথম কবিতা আসে সাথে তুমিও এসেছো ঝুড়ি ব্যাগ হাতে । আলিপুর আবহাওয়া দফতর আগাম জানিয়ে রেখেছিল তোমার আগমন বার্তা । চারিদিক তছনছ করে, পেছনে রেখে এসেছো তোমার পুরুলিয়া স্টেশন রুক্ষ জঙ্গল খেতে না পাওয়া মানুষ মাওবাদীদের চলে যাওয়া প্রাণ সঙ্কটময় দেশ ভাষা ট্রিগার হ্যাপি প্রধান মন্ত্রী রাজনৈতিক পালাবদল কলেজ পালানো দিন মাসি শাশুড়ি গভীর রাতে গলায় দলা পাকানো যন্ত্রণা নির্বোধ মানুষ লিটিল ম্যাগাজিন মেলায় বই দেওয়া নেওয়া বিজ্ঞান মঞ্চের যুক্তি ঘরের কোনায় ঠাকুরের আসন মুসলিম বন্ধু লোকাল গুণ্ডা ঘরে বাড়তে থাকা মোহহীন কবি হেরে যাওয়া মানুষ বাজারে টিকে যাওয়া দক্ষ শ্রমিক নগ্ন আলো মেঘলা আকাশ পাহাড়ী জলাশয় সাহস করে দেখে ফেলা চোখ পরচুলা মাষ্টার মশাই মহুয়া দূরপাল্লার বাস ছোটছোট রাজনৈতিক দল আমার রুগ্ন বইয়ের ওপরে বন্ধুর হাতে আকা ছবি সুন্দর মুখের সেলফি নির্জন রাস্তা কুম্ভকর্ণের ঘুম মুদিখানা দোকান আর আমাদের সন্তান ।
চলো সবার জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করি।
-------------------
ডাকাডাকি 24
অসময় কাটেনি এখানে । তবু তুমি এসে দেখো । দেখে যাও অগোছালো ভাঙাচোরা দিশাহীন আলোক প্রবাহ । দূর থেকে গাওয়া গান সাজানো বাসর । মুখে থাকে লুকোচুরি, আমাদের স্নান ঘরে আলাদা সাবান । ইঙ্গিতময় প্রতিটি রেখাই গান হয়ে যায় । এ ডাকার শেষ নেই যেনো, তবু রাতভর করে চলি ডাকাডাকি ব্যর্থ অনুবাদ । মূক ও বধির তুমি হেসে ওঠো কি ভীষণ ব্যথাতুর সুর । জুরে থাকি সারাদিনমান, কানাকানি হয়নিতো জেনে একা একা ভাঙা সুরে গেয়ে উঠি গান । তুমি এসো শেষ করে চলে যাও আমার এই অলীক যাপন ।
স্টেশনের বুকে লিখে রাখি ফেরার ঠিকানা ।
------------------------
রঞ্জন ভট্টাচার্য
13, দেশবন্ধুনগর
ইষ্ট কাপ্তে পাড়া রোড
পোস্ট - শ্যামনগর
সূচক - 743127
উত্তর চব্বিশ পরগনা