মা
উড়ো মেঘের জল সরিয়ে রোদ্দুরের ওম
শ্বেত শামুকের বুকে, ভিজে যাওয়া
পানপাতা উঁকি দিচ্ছে বরোজের ফাঁকে ,
হালকা রোদে পালক শুকিয়ে নিচ্ছে ছাতারে
সোঁদা মাটির রাস্তা ধরে বালা ডাঙার
পুকুর ঘাটের দিকে বাঁশি ঠাকুরমা ।
#
ওদিকে কলসি ডোবানোর গুব-গুব আওয়াজ
বিষণ্ণ যুবতী ছায়া পড়েছে জলের মেঘে
জল তরঙ্গে কাঁপে নাকছাবি ।
আকাশ পথে চলেছেন আমার মা
ক্লান্তিহীন সেই চলার ছন্দ ,খাঁ খাঁ করছে
তাঁর রেখে যাওয়া স্বরলিপির খাতা।
-----0----
অথৈ
সূর্যাস্ত রেখা বরাবর রং মাখছে চতুর্বেদীয় ধ্যান
মাঝি ঘরমুখো,ছাতিম মেখে বাতাসের ঢেউ ।
#
সারাদিনের ক্ষয় ধুয়ে দিতে পাখিরা
খুঁজে নেয় আপন রমণ-ভাষা।
#
আমি শুধু জেগে থাকি মরা নদীর অরণ্যে
বেহাগের বিষাদ ছুঁয়ে পতঙ্গের ওড়াউড়ি ।
#
হাপিত্যেশ নৌকা পানাফুল ভিজে যায় বিলকুল
হিসেব বুঝে নিতে নোঙর তুলে দিল বন্দর ।
---------0------
জনক দুহিতা
সারি সারি চিতা শবের ও সমাবেশ
কার সঙ্গে খেলবে শ্রী সংসার অনন্ত ,
তেরো নদী যদি অভিবাসী হয়
কোন আঁচলে শীতল করবে দাহ ?
#
কথা মুছে যায় জলে আঁকা নক্সার মতো
যুগে যুগে কাহিনি সত্যি হয়
মাটির সীতা ভেদ করে উঠে আসে
হাজার হাজার জনক দুহিতা
তারা অ-যোনি সম্ভবা নাকি প্রেতষোনি?
#
আদিমতার উল্লাস বাসা বাঁধে পাঁজরে
কেঁপে কেঁপে ওঠে অন্তরাত্মা ।
-----0------
হিসেব
ঘুমহীন বিছানায় শুনেছি জলোচ্ছ্বাসের গান
ব্যর্থ সুখ বেঁধেছি ব্যালকনির ক্যাকটাসে,
গোপন কান্না মুছে নরম দূর্বায় রেখেছি
প্রিয় বর্ণমালা ছন্দময় কিছু শব্দ মায়াবী টান ।
-----0-----
বনশ্রী রায় দাস
শান্তিপুর দক্ষিণ পাড়া মেচেদা পূর্ব মেদিনীপুর