স্বীকারোক্তি
বুকের পাঁজরের ফাঁকে ফাঁকে সিন্দুকগুলি তালাবন্দি বহুকাল
প্রতিটি সিন্দুকের অলিন্দে অলিন্দে বন্দি আছে অব্যক্ত শব্দমালা, কিছু রক্তাক্ত ক্ষত
মানুষ যত্ন করে তুলে রাখে কিছু কিছু অদৃশ্য ছায়াছবি,যে ছায়াছবিরা বেলাশেষে সবার অলক্ষ্যে চিতার আগুনে পুড়ে হাওয়ায় মিশে যায়,
প্রকৃত মানুষ আর চেনা হয়ে ওঠে না
ভুল মানুষকে ভালোবেসে কেটে যায় আমাদের নির্ধারিত বসন্ত,
কাছে এসে বসো, হাত রাখো বুকের বাঁ দিকে যেখানে এতকাল ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি পৃথিবীর কঠিনতম এক নির্মম সত্য--
এখানে তোমার জন্য কোনো ভালোবাসা অবশিষ্ট নেই, ছিলোও না কোনোদিন।
সেই কবে কোন ভোরে নব-যৌবনের প্রথম আলোকে উদ্ভাসিত সবটুকু ভালোবাসা বিলিয়ে দিয়েছি তার নামে-- ফিরে আসবে বলে সেই যে সে চলে গেল, তারপর শুধুই প্রতীক্ষা-----
নিঃসঙ্গ জানালায় বসে চেয়ে থেকেছি সেই আশ্চর্য আলোকিত পথের দিকে শুধু তারই অপেক্ষায়---
একদিন সে পথ ধরে তুমি এলে আমার নিঃসঙ্গতার ভার নিতে, আমিও বাড়িয়ে দিলাম আমার ক্লান্ত দুটি হাত
তুমি বোঝোনি একবার ভালোবাসা বিলিয়ে দিলে তা আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না।
আমার চোখের বেদনার ভাষাকে প্রেম ভেবে কেমন অনায়াসে তুমি কাটিয়ে দিলে ভালোবাসাহীন জীবন।
মুখোশের আড়ালে তুমি কখনো পৌঁছাতে পারোনি।
আজ বেলাশেষে কাছে এসে বসো, হাত রাখো বুকের বাঁ দিকে, পাঁজরের ফাঁকে ফাঁকে তালাবন্দি সিন্দুকগুলি এই আমি খুলে দিচ্ছি তোমার সামনে
দ্যাখো সেখানে কতগুলি পোকা কুরে কুরে খাচ্ছে এই রক্তাক্ত হৃদয়, শুধু তোমাকে ভালোবাসতে পারিনি বলে।