Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

ছোটগল্প ।। বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝে ।। সঞ্জীব সেন

Ratha Yatra Of Mahesh 2018 / মাহেশের রথযাত্রা ২০১৮ - YouTube

বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝে

 

সঞ্জীব সেন  

 


নীশুত রাতে এসেছিল লোকটি । দরজা খুলে দেখি কুঁজো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বয়সের ভারে নুজ্জ্ব ।মুখ বোঝা যাচ্ছে না । জোৎস্নায় ঘিরে এক মায়াময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে । জোৎস্নার গুড়ো লেগে আছে পিঙ্গল দাঁড়িতে  । বলল 'দাদুভাই রথ দেখতে যাবে না ! তবে চল, মা কে বলো তৈরি করে দিতে !' 

আমি রথ দেখতে যাচ্ছি বৃদ্ধ লোকটির সাথে । মাহেশের রথের মেলা । কী ভিড় কী ভিড়! একদম লোকে লোকারণ্য । রথের দড়ি ধরার জন্য সবাই হুটোপাটি করছে। আমি আর বৃদ্ধ লোকটি এগিয়ে গেলাম দড়ি ধরার জন্য । দড়ি ধরলে নাকি পুণ্য হয় । ভিড়ের চাপে ধরতে পারলাম না ছিটকে পরলাম। সবাই দৌড়ে এলো । আমাকে আর বয়স্ক লোকটিকে ধরে তুলে দিল। সবাই বৃদ্ধ লোকটিকে বলল আপনার বয়স হয়েছে , কেউ যায় এত ভিড়ে  ! হাত ছড়ে গেছে । বৃদ্ধ লোকটিরও লেগেছে । লোকগুলো বলল সামনে একটা অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র আছে যান ফাস্স্টটেড করে দেবে । বয়স্ক লোকটি বলল দাদুভাই লাগেনি তো! কষ্ট লুকিয়ে বললাম না তো! লোকটি হাসল বলল এই তো গুড বয় । তোমার বাবা এত সাহসী ছিল না । আমি হাসলাম! তারপর বললাম ,তুমি জানলে কী করে! আমার কথা শুনে বয়স্ক লোকটি আবার হাসল । এটা কি হাসির কথা! লোকটি বলল আমি জানব না! আমি তো তোমার বাবার বাবা! মানে তুমি দাদু? সত্যি বলছ! আমি অবাক হয়ে চেয়ে আছি!  দাদু আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে! দাদু হাত ছাড়ো না ! আমি কি হারিয়ে যাবো! লোকটি বলল তুমি হারবে না দাদুভাই !হারাবো তো আমি! তাই তো শক্ত করে ধরে আছি! এ আবার কেমন কথা! তুমি কী ছোট! দাদু আবার হাসল।আমি বললাম সত্যি বলছ তুমি আমার দাদু! তবে আগে দেখিনি কেন! তোমার বাবা আমার কোন ছবি রাখিনি যে! তোমার বাবা বলে মরা মানুষের ছবি রাখতে নেই । তোমার বাবার তো ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই ! দাদু কে বললাম । ঈশ্বর কী !কোথায় থাকে । দাদু কিছু বলল না," চল অনেক দেরি হয়ে গেছে ।" মা এবার রাগ করবে ।" ঘুম ভেঙে গেল। খাটে উঠে বসলাম । এতক্ষণ তবে স্বপ্ন দেখছিলাম। চাঁদের আলো এসে পরেছে খাটে । মোটে তিনটে বাজে । আর ঘুম আসবে না । চাঁদটা ছোট হয়ে গেছে ।চোখে জল দিলাম ।  বোতল থেকে জল খেলাম । তারপর চেয়ারে গিয়ে বসলাম । রথযাত্রার কভার করতে যেতে হবে । ক্যারাভ্যান আগেই পৌছে যাবে । আর ঘুম এল না । তৈরি হয়ে নিলাম। বাবা মা কে বলতে গেলাম । বাবা বলল মাহেশের রথে যাচ্ছিস । পারলে একটু পুজো দিয়ে আসিস । আমি অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম। বললাম তুমি বলছ! তুমি তো এসবে বিশ্বাস করো না! বাবা বলল সে ঠিক কথা আমি একটা সময় নাস্তিক ছিলাম! এসবে বিশ্বাস ছিল না । কিন্তু একটা সময় আসে বিশ্বাস করতে হয়! নিজের জন্য না । তোর ছেলে মানে আমার দাদুভাই এর জন্য ! বললাম বাবা ,দাদু আমায় রথের মেলায় নিয়ে গেছিল । বাবা বলল সে অনেক ছোট বেলায় । ওই একবারই। পড়ে গিয়ে দাদু নাতি ব্যান্ডেজ করে বাড়ি ফিরে ছিলি !তারপর তোর জ্বর হল । এই সুযোগে বললাম । বাবা একটা কথা বলব,দাদুর কোন ছবি রাখনি কেন! স্বপ্নে কাল রাতে দাদু আমায় অভিযোগ করে গেল  ! তুমি বলেছ মরা মানুষের ছবি রাখতে নেই , তাই! বাবা বলল ও, তোকে স্বপ্নে এসে বলে গেছে । আর কিছু বলল না । বেরবার সময় রিঙ্কু বলল আসার সময় আমার জন‌ কিছু নিয়ে আসবে কিন্তু! দেখলাম ছেলেটা রথ আঁকছে ! রথের মেলায় পৌছে গিয়ে দেখলাম লোকে লোকারণ্য! মাত্র সাতটা বাজে! লাইভ টেলিকাস্টের মধ্যে একবার বলে ফেললাম সেই ছোটবেলায় আমিও একবার এসেছিলাম । দড়ি ধরতে গিয়ে দাদু আর আমি পড়ে গিয়েছিলাম । দড়ি ধরতে পাড়িনি । আজ সুযোগ হলে দড়ি ধরে টানব । এখনও মানুষ বিশ্বাস করে দড়ি ধরলে পুণ্য হয় । চারিদিকে এত পরিবর্তন এত আধুনিক জীবন যাপন তবু আজও মানুষ এই বিশ্বাস অবিশ্বাস চাওয়া না পাওয়ার ভিতর ধরে রেখেছে ঈশ্বরকে। এবারও দড়ি ধরা হয়নি তবে পুজো দিয়েছি আর ছেলের জন্য একটা খেলনাও কিনেছি । বিকেলের অস্তমিত সূর্যের আলো এসে পরেছে । সমবেত মানুষের কলরব ভেসে আসছে " বলো জয় জগন্নাথ " ।

 

================ 


সঞ্জীব সেন

পানিহাটী গৌরাঙ্গ ঘাট রোড

পোস্ট পানিহাটী

কলকাতা114

7980188285







 

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩