Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

ছবি
  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

ভাই খাঁ-র জাতের মেলা -- কাঁকড়া মেলা ।। অশোক দাশ


ঐতিহ্যের মিলন মেলা : ভাই খাঁ-র জাতের মেলা

 (পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার উদয়নারায়নপুর থানার অন্তর্গত সিংটি গ্রামে কাঁকড়া মেলা)

অশোক দাশ


'নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান
বিবিধের  মাঝে  দেখ মিলন মহান'। --- বৈচিত্রের মধ্যে একতা মহামিলনে প্রাণের বার্তা, আমরা খুঁজে পাই মেলার মাধ্যমে। নানা ভাষাভাষী মানুষ ধনী গরিবের মেলবন্ধন ঘটে মেলা প্রাঙ্গনে। 'ঘর হতে শুধু দু পা ফেলিয়া' --- চলুন ঘুরে আসি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার উদয়নারায়নপুর থানার অন্তর্গত সিংটি গ্রামে। কলকাতা থেকে হাওড়া, হাওড়া থেকে ডিহিভূরসুট গামী বাসে চেপে নেমে পড়ুন রাজাপুর মোড়ে। ওই স্থান থেকে  পশ্চিমমুখে এক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পৌঁছে যাবেন ভাই খাঁ-র জাতের মেলায়। গ্রামের মেঠো পথের দুপাশে দিগন্ত বিস্তৃত সরিষা ক্ষেত, ধনে মটর কড়াই আলু কপি পেঁয়াজ শীত সবজির বুক চিরে, পাখিদের গান শুনতে শুনতে কখন যে পৌঁছে যাবেন মেলা প্রাঙ্গণে বুঝতেই পারবেন না।
    লোকায়ত সংস্কৃতির মেলবন্ধন, ঐতিহ্যের পরম্পরায় এই মেলা শুরু হয়েছিল ,জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে। মেলা কর্তৃপক্ষের বয়ান অনুসারে, আরব দেশ থেকে একটি পরিবারের সাত ভাই ও এক বোন এই বঙ্গদেশে চলে আসেন। তারা তাদের ভাগ্য অন্বেষণে বাঙলার বিভিন্ন জেলায় বসতি স্থাপন করেন। তাঁদের এক জন ভাই খাঁ এবং বোন ফতেমা বিবি চলে আসেন এই সিংটি গ্রামে। লোকশ্রুতি অনুযায়ী, ভাই খাঁ নানা গুনের অধিকারী ছিলেন। তার অলৌকিক ক্ষমতায় মানুষের জটিল রোগ ব্যাধি নিরাময় হত। সারা দেশে তাঁর নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে ছিল। অসংখ্য তার গুনমুগ্ধ শিষ্য তাকে ঈশ্বরের দেবদূত বলতে দ্বিধা করতেন না।
  মৃত্যুর পূর্বে তার ইচ্ছা ছিল এখানে একটি মেলার প্রবর্তন করা, যে মেলা হবে সব ধর্মের মানুষের মিলন তীর্থ। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্যগন গুরুর কথার মর্যাদার প্রতি সম্মান জানিয়ে মাঘ মাসের এক তারিখে অর্থাৎ তার মৃত্যুর দিন কে স্মরনীয় করে রাখতে এই মেলার প্রবর্তন করেন। এবং এই মেলা ভাই খাঁ জাতের মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সারা পশ্চিমবঙ্গে সাগর মেলা, কেন্দুলির জয়দেব মেলা, মহেশের রথের মেলা গুলির পাশে স্হান করে নেয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের আগমন তারই সাক্ষ্যবহন করে চলেছে পাঁচশত বছর ধরে।
   এখানে আছে দুটি মাজার একটিতে ভাই খাঁ-র সমাধি, অপরটি তে তার শিষ্য সইফ আলি খাঁ ও গোপাল খাঁয়ের সমাধি। পাশেই বোন ফতিমা বিবির মাজার।
    এই মেলায় কি নেই! আছে বাঁশের বেতের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন ঝোড়া চুবড়ি ধামা কুলো,
মাছ ধরার জন্য ছিপ  হুইল  জাল সুতো পাং ঘুনি , এখানে বিক্রি হয় মাটির নানান জিনিসপত্র হাঁড়ি কড়া খেলনা বাটি, এখানে পাওয়া যায় হরেক রকম কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্রপাতি।
   ‌জিলিপি,পাপর, ঘুগনি নানা রকম মুখরোচোক খাবার ,খাবারের দোকান নাগরদোলা ,ম্যাজিক সো সব কিছু আছে।
    মেলার মূল আকর্ষণ সামুদ্রিক কাংড়া আর ডাবা ডাবা আলুর দম। দূর - দূরান্ত থেকে আসা মানুষ জন মাঠের উপর চট চাদর পলিথিন বিছিয়ে পরম তৃপ্তিতে আলুর দম আর মুড়ি মহানন্দে মজা করে খেয়ে চলেছে। হাওড়া হুগলি থেকে আসা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে মনের কথার ভাগিদার হতে পেরে খুশিতে মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
     সবথেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, তিন পুরুষ ধরে এখানে সামুদ্রিক কাঁকড়া বিক্রি করতে আসছেন সুদুর ক্যানিং, সুন্দরবন থেকে। কথা বলে জানা যায়, এ বৎসর যে কাঁকড়া বিক্রি করছে সে প্রথম দাদুর হাত ধরে এই মেলায় এসেছিল। তারপর বাবার সাথে এখন নিজেই।বড় ছোটো নানা সাইজের কাঁকড়া। বিঘের পর বিঘে এলাকা জুড়ে শুধুই কাঁকড়া মেলা। শোনা যায় ঐ এলাকার মানুষ জন যারা মেলায় আসেন তারা প্রত্যেকে সাধ্যমতো কাঁকড়া ক্রয় করে নিয়ে যান।
    সম্প্রীতির পীঠস্থান এই ভাই খাঁ-জাতের  মেলায় আসুন, দেখে যান ডাবা আলুর দম আর সামুদ্রিক কাঁকড়া-র গৌরবোজ্জ্বল উত্তরণ। গ্রাম বাংলার রূপ সুধা আকন্ঠ পান করে নিজের অজানা অপূর্ন আঙ্খাকা পূরন করুন।

অশোক দাশ
ভোজান, রসপুর, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
মোবাইল নাম্বার -৮৩৪৮৭২৫৩৩৩




   


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল