Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

গল্প ।। ফেসবুকে ফেকভূত ।। বাণীব্রত গোস্বামী

 

ফেসবুক খুলতেই ভয় লাগছে শুধু তাই নয়, মোবাইল টা দেখলেও অস্বস্তি হচ্ছে। একা ঘরে বসে ফোন ঘাঁটা তো অসম্ভব। ঘটনার সূত্রপাত এবছর ৩'রা, জানুয়ারি স্কুলের বন্ধুরা মিলে একত্রিত হয়েছিলাম সুপ্রিয়র ফ্ল্যাটে। মূল গল্পে ঢোকার আগে একটু নিজেদের কথা বলে না নিলে  ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে না।প্রতি বছরই অন্তত একবার মহামিলন হয়। আগে এতোটা হত না। মাঝে অনেকদিন অনেকের সাথে যোগাযোগ ছিল না। সবাই বুঝে গেছে, মোহনার কাছাকাছি চলে এসেছে সামনেই অথৈ সমূদ্র। যথারীতি একটা পরস্পরের হাত ধরে থাকার অপচেষ্টা মেলামেশাটা একটু গাঢ় হয়েছে খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন থাকে হজম শক্তি কমছে, লোভ বাড়ছে সঙ্গে  তরল পানীয় থাকে একটু তরল পেটে দিয়ে নিলে স্মৃতির রোমন্থন টা ভালো হয়। বড়জোর দু-তিন দফা খাওয়া হয়। অভিজ্ঞান আবার একবারই খাবে। ও আবার গত বছর আলসার বাধিয়েছে। জাগ্ৰত সতীপিঠের ধূপদানীর মত সিগারেট খেত। কোন সময় মুখ ফাঁকা নেই। খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম করত নিশ্চয়। না হলে এমনি এমনি তো আর হয় না।

আমি যখন ঢুকলাম, তখন সন্ধে হয় হয়। ঢুকে দেখি  শুভেন্দু বসে আছে মাথায় হনুমান টুপি,  ঘরের মধ্যেবলল, মাথায় ব্যাথা করছে, কী একটা স্নায়ুর সমস্যা। ডাক্তারী পরিভাষায় বলল, নিজেও ডাক্তার। আমি পুরোটা বুঝলাম না। তবে এটুকু বুঝলাম, মাথার আর দোষ কী! মাধ্যমিকে দ্বিতীয়, উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম। আমরা তখন বারবার বলতাম, এত পড়িস না। কথা শোনে নি যা হওয়ার তা তো হবেই কারণ অত বই পড়া তো দূরের কথা, কোন বুক-কেসে রাখলে, সেটাও ভেঙ্গে যাবে। অনির্বাণ কে দেখলাম, ফ্যাঁস ফ্যাঁস করে শশা পিঁয়াজ কাটছে বাড়িতে হয়তো কুটো নেড়ে দুটো করে না। কিন্তু এখানে আগ্ৰহ অসীম। কিছুক্ষণের জন্য ছোটবেলায় ফিরে যাওয়ার ফূর্তি। সেই আনন্দেই এই কর্মোদ্যম। সুপ্রিয় ওকে সাহায্য করছে এখানে আয়োজনের একটাই কারণ। সুপ্রিয়র বউ থাকে পন্ডিচেরি, মানে যেখানে ওর ছেলে ডাক্তারী পড়ছে। একে একে সব রথী মহারথীরা আসতে শুরু করল। এই পাইকপাড়া আবার আমার পুরোনো পাড়া। ছোটবেলাটা পুরোটাই কেটেছে এখানে তারপর পুরো পেকে, রঙ ধরে, অন্য পাড়ায় গেছি।

প্রথমে কিছু গুরুগম্ভীর আলোচনা দিয়ে গল্প শুরু হল। যত তরল পেটে পড়তে লাগলো, আলোচনাও পাৎলা হতে থাকল। তার মধ্যে 'ডুয়ো'তে কথা‌ হল ফাল্গুনী'র সাথে অশ্রাব্য গালিগালাজ বহু শিক্ষিত লোকেদেরও দেখেছি স্কুলের বন্ধুদের সাথে দেখা হলে মুখ-খারাপ করে। আসলে খুব রাগ অথবা খুব ভালোবাসা প্রকাশের জন্য নিম্নমানের ভাষা ছাড়া, ভাবপ্রকাশ সম্পূর্ণ হয় না। এটাও একটা বিকৃত আনন্দ। ঠিক সেরকমই কিছু কথোপকথনের মধ্য দিয়ে আমেরিকাবাসী বন্ধুর সাথে ভালোবাসা বিনিময় হল। আসলে যে যার কর্মক্ষেত্রে, যার যতদূর যোগ্যতা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে মোটামুটি ছেলেমেয়েরা-ও ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠার দিকে। আমি কলম পিষি। তাতে যতটা ওঠা যায়! মলম না ঘষে। এই মূহুর্তে বাঁধনছেঁড়া, ভারসাম্যহীন ছোটবেলা; কিছুক্ষণের জন্য পাওয়া একটা চরম সৌভাগ্য টাইম মেশিনও এই শিশুমন উপহার দিতে পারবে না। মন তাই চনমনে। অনেকদিন পর তার খোরাক পাচ্ছে। 'তারক' আমাদের ক্লাসে অনেকগুলো ছিল। সঙ্গী তারক নিজেকে 'বাজে তারক' বলতে খুব গর্ববোধ করে। আমাকে ইশারায় বলল, "সিগারেট খাবি?" আমি দিনে দু-চারটে খাই। ইচ্ছেও করল। বারান্দায় গেলাম সিগারেট খেতে। তারক থাকে বিবেকানন্দ রোডে। সুপ্রিয়র ফ্ল্যাটের এই দিকটা আগে জঙ্গল ছিল। পুরোনো কিছু ভাঙ্গা বাড়ি, আর বুড়ো বুড়ো বট অশ্বথ্থ গাছ। এখনও কিছু গাছ আছে বাড়িঘর হয়ে গেছে রাস্তাতেও আলো ভর্তি। তবু একটা আলো আঁধারি ভাব আছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট খেতে খেতে দেখলাম, সঙ্গীতা হেঁটে যাচ্ছে। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই-ছুঁই। তবুও একটা ঢলঢলে আকর্ষণ আছে। বরাবরই ছিল। নিশ্চিতভাবে কমেছে। কিন্তু হাঁটাটা একই রকম আছে। হ্যামলীনের বাঁশিওয়ালার মত, সব ছেলে জড়ো করে নিয়ে পিছন পিছন নিয়ে যেত একসময় বয়সে ভার বাড়ে, তবুও ধার পুরো কমে না। তবে সঙ্গীতা কিন্তু প্রমের বিষয় নয়। ও ছিল সাঁকোর মত। আসলে আশির দশকে, মানে আমাদের যখন বেড়ে ওঠা। হেঁচকির মত সর্বক্ষণ একটা প্রেম উঠছে। পরীক্ষা, পড়া কোনকিছুই তাকে দমন করতে পারছে না। তখন ছেলে আর মেয়েরা ছিল দুই মেরুর জীব। কো-এডুকেশন স্কুলও ছিল না। অবিবাহিত ছেলে, মেয়ে কথা বললেই মহাভারত অশুদ্ধ। সি.সি. টিভি তখনও আসেনি তবু শুনশান দুপুরে পাড়ার মাসী, কাকি, পিশি রা সদাজাগ্রত কোন বাড়ির ছেলে, কার মেয়ের কথা বলল? যদি একবার দেখতে পেয়ছে তো, ব্যাস! সর্বনাশ! মোবাইল আসেনি। কিন্তু তার থেকেও দূরন্ত তাদের নেটওয়ার্ক আলোর গতিতে মুহূর্তের মধ্যে সারা পাড়ায় রঙ চড়িয়ে ছড়িয়ে যাবে। বাবা গম্ভীর হয়ে যাবে। মা ভাবতে বসবে পাল্টি ঘর কীনা। এর মধ্য দিয়েই আমাদের কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণ তবে সঙ্গীতার সঙ্গে কথা বললে, সেসব ঝামেলা ছিল না। দু এক জনের ওরকম ছাপ পড়ে যায়। ঠিক পিওন যেরকম প্রেমিক হয় না। বই-বিক্রেতা কবি হয় না। আর ময়রার সুগার হয় না। সঙ্গীতার সাথে আর যাই করুক, কেউ প্রেম করবে না। আর বাকি মেয়েরা যেমন ছিল, মালবিকা, সাগরিকা, তমালিকা, সেসব সেই অরুন্ধতী, স্বাতী নক্ষত্রের মত দূরের আকাশের, অন্য জগতের। এলিয়ানের মত অনেক আলোকবর্ষ দূরের ব্যাপার ফলে তাদের সম্পর্কে জানার আগ্ৰহও আমাদের বেড়ে যেত। মহাকাশে প্রাণ খোঁজার মত। তারা কী করে, কী খায়, কী পরে, হাসে না কাঁদে? ঠাট্টা ইয়ার্কি করে? নাকি শুধুই চারটে বই ব্যাগে, আর দুটো হাতে করে বুকের সামনে নিয়ে স্কুল কলেজ যায়। এইসব গোপন তথ্য, প্রেম নিবেদন, চিঠি প্রেরণ বা তার পাঠ প্রতিক্রিয়া আমরা জানতে পারতাম এই সঙ্গীতা মারফৎ। নারী আর পুরুষ যেন দুটো আলাদা পাহাড়ী গ্ৰাম। সেই ঠাকুর-দলিত, বাঘ-সিংহের মত আলাদা এলাকা, মাঝখানে সমাজের সংরক্ষণশীলতার পরিখা।তার ওপরে ঐ সাঁকো হল সঙ্গীতা।

যাইহোক সিগারেট খেয়ে ঘরে ঢুকে দেখলাম, মোচ্ছব্ তখন তুঙ্গে। আমি আর সঙ্গীতার কথাটা পাড়লাম না। দেখলাম পুরোনো পাঁক ঘেঁটে কী লাভ! পুরোনো ম্যানহোলে নেমে অনেকসময় দম আটকে কত লোক মরে যায়! তার ওপর আবার নেশা করে আছি, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোবে। বেশ একটা জমজমাট আসরের চেহারা নিয়েছে, ভালোই লাগছে আসর ভাঙল ন'টায়। সুপ্রিয়র উল্টোদিকে আমার আর এক বাল্যবন্ধু মানব ফ্ল্যাট নিয়েছে। পাড়ার বন্ধু। আমরা সব পুরোনো পাপীরা একসাথে হৈ হৈ করে বেরোচ্ছি,মানবের সাথে দেখা। অনেকদিন পর মাথার পোকাটা নড়ে উঠল। বলে দিলাম, ঐ সুপ্রিয়'র বিবাহবার্ষিকী ছিল, তাই এসেছিলাম মানব স্বাভাবিক প্রশ্নই করল, "ওর বৌ তো নেই এখানে?" আমি হেসে বললাম, " "দূর…, এই বয়সে বিবাহবার্ষিকী তে আবার বৌ লাগে নাকি! বরযাত্রীই যথেষ্ট।" শুভরাত্রি করে যে যার বাড়ি চলে গেলাম এইবার আসল গল্পটা বলব।

বাড়ি ফিরে মাথায় ভুত চাপল। ফেসবুকে একটা সার্চ করলাম, 'সঙ্গীতা দত্ত (মিত্র)' জানতাম দত্ত বাড়িতে ওর বিয়ে হয়েছিল তবে এ ধরণের মেয়ের প্রেম করে বিয়ে হয় না। যেমন পান্ডা কোনদিন মন্দিরে পুজো দেয়‌ না। ওর কাজ ভগবানের সাথে তোমার দেখা করিয়ে দেওয়াপেয়েও গেলাম একটু বুড়িয়ে গেছে তা-ও ছবি দেখে চিনতে অসুবিধা হল না। একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম সাড়া পেলাম দিন তিনেক পর।

আরেদেবুদা কেমন আছ? কতদিন পর! কী খবর? কোথায় ছিলে এতদিন?

এতগুলো প্রশ্ন একসাথে! যাইহোক গল্পগুজব চলতে লাগল প্রথমে বাবা-মা'র গল্প দিয়ে ফাঁদ পাতলাম জানলাম,‌ ওর বাপ, যুধিষ্টির মিত্তির জিহ্বার ক্যানসারে মারা গেছে কী কান্ড! যুধিষ্টিরের জিভে কর্কট কলিযুগ! কী আর করা যাবে? সান্ত্বনা দিয়ে এবার স্বামী প্রসঙ্গে ঢুকলাম। তারপর রাস্তা মসৃণ ছেলে মেয়ের খোঁজপত্তর জেনে নিয়ে আসল মাঠে নামলাম। যেটা উদ্দেশ্য। একহাতে তালি বাজে না। আগ্ৰহটা দেখলাম উভয় পক্ষেরই আছে। পুরোনো অনেক ভাইফোঁটা করা দাদাদের সম্বন্ধে ওর কৌতুহলও কম নয়।পুরোনো বান্ধবীদের খোঁজ-খবর নেওয়াটা অনেকটা পুরোনো চর্মরোগের মত। সেরে গেছে। কিন্ত একটু সুড়সুড়ি দিলে, আবার চুলকোবে। মিশমিশানিটা থেকেই যায়। তার ওপর পরচর্চা বাঙালির মজ্জাগত। সব খবর নেওয়ার গল্প। বেশীরভাগই শাঁখা সিঁদুরে মাখামাখি বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ভরা গিন্নি। কোথায় প্রেম! কোথায় ব্যাথা, সব ঘেঁটে সত্যনারায়ণের সিন্নি। সঙ্গীতার সাথেই দু-একটা গুগলি, দুসরা খেললাম। লোপ্পা ক্যাচও তুলল কয়েকটা বুড়ো বয়সে লুফতে ভালোই লাগছে এই বয়সটাতো ভালো নয়। বিকেলে যেমন আকাশটা বেশি লাল হয়। গনগনে ঐ প্রদীপ নেভার আগে দপ্ করে জ্বলে ওঠার মত। আসলে স্বামী আর স্ত্রী ছাড়া তো পৃথিবীতে কোন খারাপ মানুষ হয় না। দিন পনেরো বেশ আনন্দেই কাটল। তবে এসব চালাচালি করলে, মন ভালো থাকে সব পুরোনো ব্যাথা। ওসব তো পুরো সারে না। থেকেই যায়। পূর্ণিমা অমাবস্যায় একটু বাড়ে। মনটা কিন্তু 'দিন বেশ ফুরফুরে গ্যাস অম্বলটাও কম হচ্ছে। আসলে পুরোনো প্রেমের চর্চা তো একটা থেরাপি কিন্তু ঐ একটা দোষ। পেটে কথা থাকে না। গুড়গুড় করছে। সুদীপ্ত কে একটা ফোন করলাম ও পাইকপাড়ার আর এক 'পাইক'। পাইকদের সর্দার বললেও ভুল হয় না। গল্পটা ওকে বলেই ফেললাম বমি করে পেটটা হালকা লাগছে ও সব শুনে হাসল,‌বলে উঠল,‌ "বয়স হচ্ছে, বানিয়ে গল্প বলাটা এবার ছাড়!"

আমি রেগে গেলাম। "মানে! রোজ ফেসবুকে গল্প করছি, আমি মিথ্যে বলছি?"

--- "শোন, বছর পাঁচেক হল,সঙ্গীতা ক্যানসারে মারা গেছে বিশ্বাস না হয় বাকিদের ফোন কর, সবাই জানে। তুই তো পাড়া ছেড়ে দিয়েছিস, জানবি কী করে?"

 আর যাইহোক মারা যাওয়া নিয়ে এরকম ইয়ার্কি করবে না। মনটা খারাপ হয়ে গেল। তারপরই দপ্ করে জ্বলে উঠল। তাড়াতাড়ি ফোনটা খুললাম সঙ্গীতার এ্যকাউন্ট্ টা খুলতে গেলাম খুঁজেই পাচ্ছি না। তন্ন তন্ন করে খুঁজছি। কোথ্থাও পাচ্ছি না। মাঘের শীত বাঘের নয়, ছাগের গায়ে। ঠকঠক করে কাঁপছি। পেটের নাড়িভুঁড়ি তো সব উগরে দিয়েছি। কিন্তু কাকে? কে এই ফেক্ মানুষটি আমার ঘরের মানুষ নয় তো? নাকি অন্য কেউ! মনের ভাঁড়ার খালি করে দিয়ে চলে গেল। সিঁদেল চোরের মত। নিজেকে রিক্ত সন্ন্যাসীর মত লাগছে। পেটে খিদে নেই। হাওয়া ভরা পেট। ঢেকুর তুললে, ভয় উঠছে চোঙা ঢেকুরের মত। আবার সুদীপ্ত কে ফোন করলাম পরামর্শ করলাম ওর ছাতার মত ক্ষমতা। সব শিকে এক একটা দিক ধরা আছে যেদিক থেকেই বিপদ আসুক না কেন, সেদিকের নীচে গিয়ে দাঁড়ালে অল্প ছাট লাগতে পারে, কিন্তু পুরো ভিজবে না। মোটামুটি বাঁচিয়ে দেবে। ও উপদেশ দিল, "আমার বন্ধু সাইবার ক্রাইমে আছে, আমি ফোন করে দেব। তুই গিয়ে পুরো ডিটেলে বলবি।"

লজ্জার মাথা খেয়ে পরদিন বাড়ি থেকে বেরোলাম ছেলেকে বাবার মত লাগছে! বউকে মনে হচ্ছে, ছোটবেলার রমা দিদিমনি সব খুলে জানালাম সুদীপ্ত'র বন্ধুকে।

সাতদিন পর খবর এল, এরকম কোন এ্যকাউন্ট নেই ফেসবুকে। কষ্মিনকালে ছিলও না। লিখিত ম্যাসেজ দিল, ' দা কেস ইজ্ আনসলভড্'। এইবার ভয় ঢুকল আমার বুকে। জীবাত্মা বা পরমাত্মা হলে এত ভয় পেতাম না। এতো প্রেতাত্মা তবে এটাও সত্যি, হারিয়ে যাওয়া নানা রঙের কাঁচের গুলি দিয়ে সঙ্গীতা যে ক্যালিডোস্কোপটা বানিয়ে দিয়ে গেল, সেটা চোখের সামনে অনবরত ঘুরছে। আর ধুয়ে নিয়ে গেল মনের নীচে থিতিয়ে পড়া কর্দমাক্ত  কিছু স্মৃতি। মন এখন অনেক হালকা যদি কোনদিন দেখা হয়, এপারে না হোক ওপারে শুধু একটা কথাই বলব,‌ 'বন্ধু ভালো থেকো, ঠিক এরকমই থেকো' একটা ব্যতিক্রমী 'অন্য নারী' মত। 

                       -------------------   

           

Name- Banibrata Goswami

Address- 9/6 East Mall Road.

      Kolkata- 700080

Mobile- 9831068493, 6291495879

Email- goswamib191@gmail.com

 

 

 


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত