Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

গল্প ।। দাঁড়ানো বাসে পনেরো মিনিট ।। অভিজিৎ মণ্ডল




 

আবার দাঁড়িয়ে গেল! দূর ছাই কখন যাবে বল দিকিনি?

তাড়াতাড়ি চল নাগো, খালি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে কেন রে বাবা!

ঠাকুমা, আজ নতুন বাসে মনে হচ্ছে!

দাঁড়াবে ঠাকুমা এখানে আরও পনেরো মিনিট।

তিনশ কুড়ি টাকা তো নিল রে এইমাত্র। এত ছোট নাতনিটা। তাও টাকা নিল। খালি দাঁড়াচ্ছে আর দাঁড়াচ্ছে।

আর দাঁড়াবে না, এটাই শেষ। এবার একদম টানা ধর্মতলা।

তা ঠাকুমা যাচ্ছ কোথায় একা একা এইটুকু নাতনিকে নিয়ে?

কলকতায় রে।

কোলকাতার কোথায়? আগে গেছ কোনদিন?

সে তোর দাদু নিয়ে এসেছিল। চার আনা না আট আনা করে টাকা ছিল তখন।

তাহলে সে তো বহুযুগ আগের কথা!

এর মা, আমার মেয়ে তখন ছোট। তোদের দাদু কলকাতায় ভিক্টরোয়া, মুইজিয়াম সব দেখতে লেয়েছিল।

এখন কি করতে যাচ্ছ? কার বাড়ি?

ধোর তেরি! কলকতায় আমার আবার কে আছে?

ও ঠাকুমা, তুমি বসবে এস কাকুটা বসতে বলছে, ছোট্ট পিঙ্কি বলল।

দাঁড়া, তুই বস। ওগো পিঙ্কিকে একটু বসিয়ে দাও গো।

ঠাকুমা তোমার হাতের ওই ব্যাগটা দাও, আমি নিয়ে বসি।

নে ধর, ওতে মুড়ি টুরি সব আছে, ভালো করে রাখবি।

আমি কি বাচ্চা নাকি, পিঙ্কি বলল।

কি বলতে গিয়ে বলে টলে মলে দাঁড়াল ঠাকুমা বোঝা গেল না।

কোথায় যাচ্ছ তাহলে ঠাকুমা?

তোদের দাদুকে খুঁজতে যাচ্ছি তো!

এবার ঠাকুমার গলা ধরে এল। এতক্ষণ তেমন কিছুই আন্দাজ করা যায়নি। আসলে নিত্যযাত্রী কয়েকজন যুবক ঠাকুমার সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ সবাই যেন কেমন গুরু গম্ভীর হয়ে গেল।

দাদু কোথায় ঠাকুমা?

ক মাস আগে করোনা না কি হয়েছে বলে কারা যে তুলে নিয়ে এসেছিল গাড়ি করে তারপর থেকে আর খবরই পাইনি।

তোমাকে ফোন করেনি কেউ?

ফোন কোথায় পাব বাবা? একটা যা ছিল সেটা তো তোদের দাদুর কাছেই ছিল বাবা।

দাদুর তাহলে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল তখন?

ধুর, একটু জ্বর জ্বর এসেছিল একদিন। আমাদের সবার কি সব রাপিড টেস করল। আর তোদের দাদুকে নিয়ে গেল।

তোমার ঘরের তো অন্য কেউ খবর নিতে আসতে পারত। ছেলেরা কেউ। সেটাই তো ভাল হত। এতটুকু মেয়ে নিয়ে কলকাতায় তুমি কোথায় খুঁজবে?

দ্বিতীয় বাচ্চা হতে গিয়ে মেয়েটা আমার মারা গেল। নাতনি তখন দু বছরেরও হয়নি। ওকে দিয়ে সেই থেকে জামাইয়ের আর পাত্তা নেই। আধবিঘা খানেক বাস্তু সহ জমি আছে আর সম্বল আমার। বাকি সব গেছে। গরিবকে কে দেখে বাবা? ছিটেফোঁটা যাও খোঁজ নিত ওই রোগের নাম শুনে তাও বন্ধ। ওকে না পেলে আমরা কি করব? নাতনিটারই বা কি হবে? আবার ভেঙ্গে পড়ল ঠাকুমা।

সবার চোখে মুখে কেমন নিরুপায় উদ্বেগের ছাপ ফুটে উঠল।

কারো মুখে কথা নেই আর।

চিরুনি, ক্লিপ, সেফটিপিন লাগবে…

বাদাম ভাজা, চিঁড়ে ভাজা …

এগুলো অনবরতই চলছে, নীরবতায় স্পষ্ট হল।

বাঁশি বাজল। ধর্মতলা, ধর্মতলা ছেড়ে যাচ্ছে…

উঠুন, উঠুন তাড়াতাড়ি…


****************************


উত্তর পোদড়া (নতুন পল্লী)

পোদড়া, হাওড়া - ৭১১১০৯


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত