Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

দুটি অণুগল্প : অভ্র ঘোষ






#গল্প_

ধাক্কা


 
প্রায় প্রতি রাতের মত কাল রাতেও মায়ের গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেছিল লংকার। তক্তোপোষের ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজের সাথে সাথে ঐ শব্দটাও অবশ্য মিনিট খানেকের মধ্যে থেমে গেছিল। তক্তোপোষের দিকে পেছন ঘুরে তিন বোনের সাথে মাটিতে ঘেঁষাঘেঁষি করে শুয়ে অনেক্ষন ঘুম আসেনি লংকার
সকালবেলা ঘুম ভাঙতে লংকা বেরিয়ে যাচ্ছিল বস্তির টালির চালের ঘর থেকে। ছিটকিনির শব্দ শুনে তক্তোপোষের ওপর থেকে লংকার বাবা জিজ্ঞেস করলো – "আজ কিন্তু রেশান তুলতে হবে"
"হ্যাঁ, ঠিক আছে" –বলে দরজার বাইরে পা বাড়লো লংকা।
বাবার ওদিক থেকে মা বলল –"সবাইকে বেরোতে বারন করেছে না এখন, ঘরে থাক না।"
" খোঁয়াড়ে সারাদিন থাকা যায় নাকি!" – বলে টিনের দরজা বন্ধ বেরিয়ে গেল লংকা

একটা মাত্র ঘর এতগুলো লোক রোজ সকালে বেরিয়ে যাওয়া অভ্যেস লংকার  দুবেলা  খাওয়া আর রাতে শোয়ার সময়টুকু ঘরে থাকে বাকি সময়টা লংকা টুকটাক কাজকর্ম করে লংকার বাবা মিউনিসিপালিটির গাড়ি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা নিয়ে এসে ভ্যাটে ফেলে লংকার বাবা আর লংকা বেলা দুটো আড়াইটের আগে পরে প্রায় একসাথে খেতে আসে বাড়িতে
মোড়ের মাথার চায়ের দোকানে গিয়ে লংকা দেখলো রোজকার মত আজও অন্য বস্তির বন্ধু দেবু, সোনা, ডাবু, মনা আর বাকিরা এসে গ্যাছে। করোনার লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ গুলতানি করতে করতে চা আর বিস্কুট খেলো সকলে মিলে। সকাল আটটার সময় লংকা দেখলো ওর বাবা ভ্যান চালিয়ে বাড়ি বাড়ি ময়লা আনতে গেল।
'টা নাগাদ একটা পুলিশের গাড়ি এসে লংকাদের চায়ের আড্ডার সামনে থামলো। লাঠি হাতে নেমে কতগুলো পুলিশ তেড়ে এলো ওদের দিকে- "সব জায়গায় লকডাউন চলছে আর তোরা এখানে গায়ে গা লাগিয়ে বসে আছিস! যা বাড়ি যা, ভাগ।"
দুড়দাড় করে চায়ের দোকান থেকে উঠে এক দৌড়ে বস্তিতে এসে ঢুকলো লংকা বোনগুলো কলপাড়ে খেলছে। মনে পড়লো আজ রেশান তুলতে হবে  সকালে মেজাজ খারাপ থাকায় দাঁতও মাজেনি লংকা। ব্রাশ আর মাজন নেওয়ার জন্য ঘরের সামনে এসে দরজা ঠেলে দেখলো ভেতর থেকে বন্ধ। ধাক্কা দেওয়ার আগেই দরজা খুলে বেরিয়ে এল পাশের ঘরের কাটুদা। খালি গা, হাফপ্যান্ট পরা। ওর কাঁধের ওপর দিয়ে লংকা দেখলো মা ঘরের ভেতরে দাঁড়িয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে ঘাম মুছছে। লংকাকে দরজার সামনে দেখে চমকে উঠে কাটুদা বলল- "তোর বউদি বাপের বাড়ি গ্যাছে তো। তাই কাকিমার কাছে খেয়ে গেলাম, রুটি।"
-----------------


#গল্প_

ভুল

 
"অ্যাই, খোকন, এর মধ্যে বেরোস না।" চেঁচিয়ে উঠলো হাই ব্লাড প্রেসারের রুগি ছোটোপিসি।
মা আর বাবা মারা যাবার পর অঞ্জনের স্বঘোষিত অভিভাবক ওর এই আইবুড়ো পিসি। দিবানিশি, অহর্নিশ অভিভাবকত্ব ফলিয়ে অঞ্জনের জীবন দুর্বিষহ করে রেখেছেন ষাঠোর্ধ এই মহিলা। অঞ্জনের বউ আর যমজ মেয়েরাও তিতিবিরক্ত। পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে বলে তিনজনেই এখন অঞ্জনের শ্বশুর বাড়িতে। ওখান থেকে দিনে পাঁচবার ফোন করে অঞ্জনের বউ ওকে বেরতে বারণ করছে।
"আরে, ছোটোপিসি, আমার কিছু হবে না। চল্লিশের কম বয়সীদের করোনা ভাইরাস অ্যাটাক করলেও ফ্যাটাল কিছু হয় না। সেরে যায়।" –বলে বেরিয়ে গেলো অঞ্জন।
পাশের পাড়ায় অঞ্জনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনোজের বাড়ি। অনেক দিন দেখা হয়নি। করোনার লকডাউনে অফিস ছুটি। স্কুলের বন্ধুদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে অঞ্জন কাল দেখছিল যে মনোজ অসুস্থ। পকেটে ছোটো পিসির প্রেস্ক্রিপশান নিয়ে ভেতরের গলিগুঁজি দিয়ে মনোজের বাড়ির দিকে এগোল অঞ্জন।
মনোজের বাড়ি পৌঁছালে ওর বউ দরজা খুলে বলল- "অঞ্জনদা, মুম্বাই থেকে অফিস ট্যুর সেরে ফেরার পর ওর জ্বর আর গলা ব্যাথা হয়েছে। তুমি কি ভেতরে আসবে?"
"আরে, হ্যাঁ, হ্যাঁ। জানি। গ্রুপে দেখেছি। ঠান্ডা লেগে হয়েছে সিওর।" –বলে ভেতরে ঢুকে গেলো অঞ্জন।
মনোজের বিছানায় বসে বেশ খানিক্ষণ গল্প করে, হ্যান্ডশেক করে বাড়ির পথ ধরলো অঞ্জন। এবার বড়রাস্তা ধরে ফিরল। ফিরে আসার সময় অঞ্জন দেখলো পুলিশের একটা গাড়ি মনোজদের গলির মুখে এসে থামলো।
বাড়ি পৌঁছে বেল বাজানো মাত্র দরজা খুলল পিসি। খিঁচিয়ে উঠলো- "কোন রাজকার্যে গেছিলি শুনি! আমার সুগারের ওষুধ এনেছিস?"
কপাল চাপড়ে মুখে হাত চাপা দিল অঞ্জন- "কাল এনে দেবো, পিসি।" –বলে ছোটোবেলার মত পিসিকে জড়িয়ে ধরলো।
চোখের জল মুছে পিসি অঞ্জনকে বলল- "যা, চান করে আয়, রান্না হয়ে গ্যাছে।"
চান করে বেরতেই একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন এল অঞ্জনের মোবাইলে।
অঞ্জন রিসিভ করলো কলটা- "হ্যাল্লো?"
একটা গম্ভীর গলা জিজ্ঞেস করলো- "অঞ্জন বসু বলছেন?"
"হ্যাঁ।"
"আমি লোকাল থানার এস আই পবিত্র রায় বলছি। আপনি কি আপনার বন্ধু মনোজ সরকারের ফিসিক্যাল কন্টাক্টে এসেছিলেন আজকে?"
"হ্যাঁ, স্যার।"
"আমরা সাস্পেক্ট করছি ওনার করোনা অ্যাটাক হয়েছে। ওনাকে আর ওনার বাড়ির লোককে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। আপনি বা আপনার বাড়ির কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবেন না বা কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেবেন না।"
"আচ্ছা, স্যার।"
"আমরা কাল সকালে আপনার বাড়িতে চেক করতে আসবো। এর মধ্যে কোনো সিম্পটমস দেখা দিলে এই নাম্বারে আমাকে কল করবেন, আমরা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যাবস্থা করবো। আর ভালো করে শুনে রাখুন বাড়ির বাইরে বেরোলে আপনাদের অ্যারেস্ট করা হবে।"
"ঠিক আছে, স্যার। বাইরে যাবনা।"
পিসি পুজোর ঘর থেকে বেরিয়ে জিজ্ঞেস করলো- "কে ফোন করেছিল রে?"
"বন্ধু।" –বলে খেতে বসলো অঞ্জন।
দু দিন পর ভোর রাতে অঞ্জন আর ওর পিসির গলা ব্যাথা আর কাশি শুরু হোল। খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা করে ওদের হাসপাতালে নিয়ে গেল। হাই প্রেসার আর সুগারের পেশেন্ট পিসি করোনার ধকল সামলাতে পারলনা। কয়েকদিন বাদে দেহ রাখলো। অঞ্জনের অন্য আত্মীয়রা অঞ্জনের পিসির দাহ কাজ সারলো।
দিন সাতেক বাদে ক্লান্ত শরীরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছিল অঞ্জন। ডাক্তারবাবু বলেছেন আরও সাত দিন রেখে তারপর রিলিজ দেবেন।
শুয়ে শুয়ে মোবাইলে ক্রাইম সিরিজ দেখছিল অঞ্জন। একটা গল্পের শেষ সীনে অপরাধীকে ধরে ফেলে পুলিশ অফিসার অধস্তনকে বললেন- "ক্রাইম কভি পারফেক্ট নেহী হোতা।"
শুনে মুচকি হেসে মোবাইল স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে অঞ্জন মনে মনে বলল- "দো, মাথা মোটা!"
---------------------

Abhra Ghosh
6/6 Panpara 3rd lane, Barrackpore,
North 24 Parganas, 700123
9433112702

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩