Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

নিবন্ধ : পরাশর গঙ্গোপাধ্যায়

 

বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও মানসিক স্বাস্থ্য


মানসিক স্বাস্থ্য বলতে মানুষের জ্ঞানগত, আচরণগত এবং মানসিক সুস্থতা বোঝায়। মানুষ  কীভাবে চিন্তা করে , অনুভব করে এবং আচরণ করে  তার মধ্যেই তার মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিফলিত হয়।  মানসিক স্বাস্থ্য দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক এবং  শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। আলোকপাত করে বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে  নভেল করোনা ভাইরাস জনিত পরিস্থিতির কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থের উপর তার প্রভাব বিষয়ে আলচনায় সচেষ্ট হব।  
খুব সাধারণ ভাবে লক্ষণের উপর নির্ভর করে কয়েকটি মানসিক সমস্যা বিষয়ে ধারনা দেওয়া যেতে পারে-  
 (ক) প্যানিক ডিসঅর্ডার – এক্ষেত্রে ব্যক্তি হঠাৎ  আসন্ন বিপর্যয়ের শঙ্কা অনুভব করে।
(খ)ভয়(fobia) - এর মধ্যে সাধারণ ভীতি (অপ্রাসঙ্গিক ভয়), সামাজিক ভীতি ইত্যাদি খুব সাধারন  লক্ষন।মনবিদ্গন এখনও  কত প্রকারের ভীতি থাকতে পারে তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করতে পারেন নি।তাঁদের মতে  এই কারণ কয়েক হাজার প্রকারের  হতে পারে।
 (গ)Obsessive-compulsive disorder (ওসিডি)ঃএক্ষেত্রে ব্যাক্তি পুনরাবৃত্তিমূলক  ক্রিয়াকলাপ করে থাকে। অর্থাৎ একই কাজ বারবার করতে থাকে।যেমন বারবার হাত পা ধোয়া ।
 (ঘ) হতাশা – ব্যক্তি কোন কিছুতেই আগ্রহী নয়। সবসময় দুঃখ জনিত আচরন করে  এবং সেগুলি অন্যের   মধ্যে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করে ।এমন ক্রিয়াকলাপ তারা দীর্ঘ সময় ধরে করে।
(ঙ) ম্যানিয়া – কোন শারীরিক সমস্যা বা সামাজিক সমস্যা এই ধরনের সমস্যা  যুক্ত ব্যাক্তিদের ভীষণ ভাবে প্রভাবিত  করে। তারা সে  বিষয়  নিয়ে ভাবতে থাকে এবং তাদের মেজাজের পরিবর্তন হয়।
 আচরনের পার্থক্যভেদে আরও বেশআরও অনেক মানসিক সমস্যা  রয়েছে,যা বর্তমান নিবন্ধে প্রয়োজনীয় নয়।
  বর্তমান সময়ে নভেল করোনা ভাইরাস সমগ্র  বিশ্বকে এক অনিশ্চয়তায় ডুবিয়ে দিয়েছে ।  মহামারী সম্পর্কে  সংবাদ মানুষ নিরলস ভাবে অনুভব করতে পারছে। এই সমস্ত বিষয়গুলি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে   ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে , বিশেষত যারা ইতিমধ্যে উদ্বেগ এবং ওসিডি-র মত মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত।   করোনা ভাইরাস সম্পর্কে প্রচুর সংবাদ পড়া বা শোনার ফলে উদ্বেগ বা ওসিডি-র মত মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যাক্তিদের সমস্যা  বেড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।এই সমস্ত ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলে তাদের সাধারন কিছু শারীরিক বা মানসিক আচরন লক্ষ্য করা গেছে।  যখন তারা  উদ্বিগ্ন বোধ করে  তখন তাদের  চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং তারা বিপর্যয়কর ফলাফল সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করে। তারা তাদের বাবা-মা এবং অন্যান্য বয়স্ক লোকদের নিয়ে  ভীষণ ভাবে চিন্তিত হয়ে যায়।খিটখিটে মেজাজ,হতাশা কিংবা ঘরের কোণে একাকি বসে থাকা এদের সাধারন আচরন হয়ে দাড়ায়। কোন কোন ক্ষেত্রে তা অধিক মাত্রায় দেখা যায় ,যা সাংসারিক বা সামাজিক পরিস্থিতিকে বিঘ্নিত করে।  
এই ধরনের পরিস্থিতির থেকে দূরে থাকার জন্য বর্তমান সময়ে মনবিদ্গন বেশ কিছু সাধারন নিয়ম পালনের কথা বলেছেন, যা  মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়। তাঁদের মত অনুযায়ী বিভিন্ন social media এবং সংবাদ মাধ্যমে করোনা সম্পর্কিত খবর এড়িয়ে যাওয়া  এক্ষেত্রে ভীষণ প্রয়োজনীয়। এরজন্য তাঁরা   করোনা ভাইরাস বিষয়ক খবরগুলি   এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন  এবং বাড়ির লোককে  সে সম্পর্কে  যত্নশীল হবার পরামর্শ দিয়েছেন । টিভি না দেখে  তার পরিবর্তে বই পড়ার জন্য উৎসাহ দান করা হয়েছে।যে সমস্ত  Whats App Group এ নিয়মিত ভাবে করোনা সংক্রান্ত খবর দিয়ে থাকে বা মত বিনিময় চলে সে সমস্ত খবর মানসিক সুস্থতা নষ্ট করে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। তাছাড়া চারদিকে প্রচুর ভুল তথ্য বা খবর  রয়েছে, যা মানসিক স্বাস্থ বিঘ্নের কারণ।
ওসিডি এবং কিছু অন্য ধরণের উদ্বেগযুক্ত ব্যক্তিরা, বারবার  হাত ধোয়ার কথা  শুনে এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি চঞ্চল হয়ে উঠছে ।মনোবিদ্গন বলছেন, ওসিডি আক্রান্ত ব্যাক্তি সাধারন অবস্থাতেই বারবার হাত ধুয়ে থাকে। করোনা পরিস্থিতি যে আচরন কে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি সত্যিই খারাপ কারণ তারা  এমন কিছু আচরণ করছে যা তাদের  সাবান এবং স্যানিটাইজারের প্রতি  আসক্তি বাড়িয়ে তুলছে।এই আচরন থেকে দূরে থাকার জন্য তাঁদের মত হল, আপনার হাত ধুয়ে নিন - তবে অতিরিক্ত নয়। মনবিদ্গন  উল্লেখ করেছেন যে ওসিডি আক্রান্ত প্রচুর লোকের এই অবস্থা এড়ানোর জন্য ,ভাল উপায় হ'ল  আত্ম-বিচ্ছিন্নতা ,যাতে নিজের চিন্তা ভাবনা অন্য খাতে বহিয়ে দেওয়া। তবে এই সমস্ত রোগীদের  বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হলে একঘেয়েমির ফলে  ওসিডি আরও খারাপ হতে পারে।যা lock down পরিস্থিতিতে আরও বেড়েছে।  
মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকা মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার একটি ভাল উপায়।  আপনার পছন্দের লোকদের সঙ্গে ফোনে গঠনমূলক কথাবার্তা  এই  সময় আপনার পক্ষে উপযুক্ত।ভাল মানসিক স্বাস্থ রক্ষার জন্য নিয়মিত নির্দিষ্ট  সময়ে   আপনার চারপাশের লোকদের সাথে কনফারেন্স কল বা ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে যোগাযোগ করলে আপনি অনেক উদবেগ মুক্ত থাকতে পারবেন।  মনবিদ্গন যতটা সম্ভব প্রকৃতি এবং সূর্যের আলোতে   নিজস্ব কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।  এছাড়া ব্যায়াম করা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন এবং হাইড্রেটেড থাকা অর্থাৎ বেশি পরিমানে জল পান করার কথা বলেছেন।
উদ্বেগ মোকাবিলায় "অ্যাপল" নামক একটি কৌশলের সন্ধান দিয়েছেন মনবিদ্গন ।আসলে এটি একধরনের মানসিক ব্যায়াম ।যা এই পরিস্থিতিতে অনুশীলনের মধ্য দিয়ে করোনা জনিত উদ্বেগ কে নিয়ন্ত্রন করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থের উন্নতি ঘটাতে পারে।এই কৌশলটি কয়েকটি ধাপে বিভক্ত।মুলত উদ্বেগ জনিত পরিস্থিতিতে এটি অনুশিলনের পরামর্শ দেওয়া হয়। ধাপ গুলি হল-
১) স্বীকার : কোন বিষয়ে উদ্বিগ্ন (এক্ষেত্রে করোনা জনিত উদ্বেগ) হলে  সাথে সাথে সেটি লক্ষ্য করা এবং তা স্বীকার করা।
২) বিরতি :  এই পর্যায়ে  উদ্বেগ জনিত যে ধরনের আচরন গুলো এসে যায় যেমন অসংলগ্ন কথাবার্তা, চঞ্চলতা,মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদি, সেগুলিকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা  করার জন্য  চিন্তার বিরতি নিতে হবে।বড় করে শ্বাস গ্রহন করে নিজের চিন্তার বিরতি ঘটাতে হবে।  
৩) আত্মপলব্ধি : যে বিষয়ে উদ্বেগ  সেটি কেবল  একটি চিন্তা বা অনুভূতি,যা বিশেষ ক্ষতিকারক নাও হতে পারে এই উপলব্ধি নিজের ভিতর আনতে হবে।  নিজের  চিন্তাভাবনা যে বাস্তব ঘটনা নয়  তা বুঝতে হবে।
৪)চিন্তার পরিবর্তন : চিন্তার পরিবর্তন হবে পরবর্তী পর্যায়। এই পর্যায়ে নিজের চিন্তার পরিবর্তন করে কোন গঠনমূলক চিন্তা যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপলব্ধি কিংবা  কোন গান বা সাহিত্যের রস আস্বাদন ইত্যাদিতে মননিবেশ করতে হবে।
৫) অনুভব এবং মনযোগের কেন্দ্রিভবন : এটি একেবারে শেষ পর্যায়।বর্তমান মুহুর্তটি  অনুভব করতেহবে। এই মুহুর্তে, সবকিছু ঠিক আছে। তারপরে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে অন্য কোনও দিকে  মন প্রসারিত করা প্রয়োজন।
 
সবশেষে বলা যায়,  মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখলে সামাজিক ও  শারীরিক  স্বাস্থ্য উন্নত হবে। সেক্ষেত্রে কোন ব্যাধি তা সামাজিক বা শারীরিক কোন কিছুই আমাদের আক্রান্ত করতে পারবে না।তাই সমগ্র বিশ্বে এখন নভেল করোনা ভাইরাসের ওষুধ আবিস্কারের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য  ঠিক রাখাও একটা বড়  চ্যালেনজ।আমাদের তা জিততেই হবে।

=====================

পরাশর গঙ্গোপাধ্যায়
মদনপুর নদিয়া
মোবাইল-৮৫৮৩০৯৩৯৩০/৯২৩১৫১০৫১১

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩